জনগণ চূড়ান্তভাবে বিরক্ত হওয়ার আগেই দায়িত্বশীলতার প্রমাণ দিন
Published: 11th, February 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
দেশের ভেতর ও বাইরে থেকে পরাজিত-পতিত ফ্যাসিবাদীদের হুমকি-ধামকি-উসকানি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যর্থতা, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা, গণঅভ্যুত্থানের পক্ষশক্তিগুলোর অনৈক্যসহ সংস্কার ও নির্বাচন প্রশ্নে ঐকমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আমার বাংলাদেশ পার্টি-এবি পার্টি।
সরকারের প্রতি এবি পার্টি আহ্বান জানিয়েছে, জনগণ চূড়ান্তভাবে বিরক্ত হওয়ার আগেই নিজেদের দক্ষতা-দায়িত্বশীলতার প্রমাণ দিন।
অন্তর্বর্তী সরকারের ৬ মাস : ডেভিল হান্ট, সেন্ট্রাল কমান্ড ও নাগরিক প্রত্যাশার হিসাবনিকাশ নিয়ে মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান এবি পার্টির নেতারা।
দলটির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, জনগণ চূড়ান্তভাবে বিরক্ত হওয়ার আগেই নিজেদের দক্ষতা ও দায়িত্বশীলতার প্রমাণ দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের গত ছয় মাস ছিল নানা প্রতিকূলতাময়। ১৮০ দিনে ১৫০টির মতো আন্দোলন ও অবরোধ গণতান্ত্রিকভাবে তারা মোকাবিলা করেছে। ভারতের ষড়যন্ত্রে সৃষ্ট বন্যা ও সাম্প্রদায়িক সংঘাত বাঁধানোর ঝুঁকি, ব্যাপক নিয়োগ-বদলি, প্রশাসনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বঞ্চিতদের পদোন্নতি ও পদায়ন, দুর্নীতিগ্রস্ত প্রকল্প বাতিল, হাজার হাজার মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তারদের মুক্তি, দেউলিয়া হওয়া আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফেরানো সর্বোপরি ফ্যাসিবাদের রেখে যাওয়া অনিয়ম ও লুটপাটের ধ্বংসস্তূপ থেকে দেশকে ঘুরে দাঁড় করানোর বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল তাদের কাঁধে। ছয় মাসে এসব কাজের বিরাট ধকল গেছে এ সরকারের ওপর; সেজন্য তাদের অশেষ ধন্যবাদ ও দেশবাসীর পক্ষ থেকে তাদের প্রতি আবারও আমাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করছি। কিন্তু কথা হলো সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা কী শুধু এসবের মধ্যেই সীমাবদ্ধ? নিশ্চয়ই তা নয়।
এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষা ছিল একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত। তারা রাষ্ট্রের মেরামত চেয়েছে। তারা শুধু শাসকের পরিবর্তন নয়, শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন চেয়েছে। ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ছিল তাদের অন্যতম আকাঙ্ক্ষা।
সংস্কার ও নির্বাচন প্রশ্নে গণঅভ্যুত্থানের পক্ষশক্তিগুলোর অনৈক্যে হতাশা প্রকাশ করে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানকে প্রথম দিনই বলেছিলাম আপনি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করার জন্য একটি টিম গঠন করুন কিন্তু একজন উপদেষ্টার অনীহার কারণে তিনি সেটা করেননি। যে দলগুলো জুলাই-আগস্টে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সংগ্রাম করেছে তারা আজ একে অপরকে হেয় করে কথা বলছে। অযথা বাক্ যুদ্ধে জড়িয়ে তারা বিভেদ বাড়াচ্ছে; এর দায় সরকার এড়াতে পারে না।
সম্প্রতি সরকারের নেওয়া ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’কে ‘ডিলেইড ডেভিল হান্ট ইনিশিয়েটিভ’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ অপারেশনের ফলে খুব বেশি ফল আসবে বলে মনে হচ্ছে না। সরকারের উচিত ছিল শুরুতেই এ পদক্ষেপ নেওয়া। প্রথমদিকে এ ব্যবস্থা নিলে বহু ডেভিল পালাতে পারত না আর চাঁদাবাজি ও দখলবাজি অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রণ করা যেত।
সব বাহিনীর সমন্বয়ে সেন্ট্রাল কমান্ড সেন্টার গঠনের বিষয়টিকে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করে এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, জনগণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সরকারের দৃঢ় নিয়ন্ত্রণ আছে, সেটা দেখতে চায়।
মঞ্জু পলাতক ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের উপর্যুপরি হুমকি-ধামকি-উসকানির বিষয়ে কতিপয় রাজনৈতিক দলের সুবিধাবাদী অবস্থানের সমালোচনা করে বলেন, কোনো কোনো নেতার দায়সারা গোছের বক্তব্য আমাদের খারাপ লেগেছে। তারা একদিকে সুশীল অবস্থান নিচ্ছেন অন্যদিকে তাদের নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণেই ভাঙচুরসহ বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।
নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে তিনি বলেন, গুম, খুন ও গণহত্যাকারীদের যেকোনো তৎপরতার ব্যাপারে নমনীয়তার কোনো সুযোগ নেই। বিচার ও ক্ষমা চাওয়ার আগে খুনিদের অন্য যেকোনো বক্তব্য ও কার্যক্রমের ব্যাপারে আমরা কড়া অবস্থানের পক্ষে, তবে সেটা অবশ্যই হতে হবে ন্যায়সংগত ও রাজনৈতিকভাবে বুদ্ধিদীপ্ত।
এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, সরকার বলছে ৫ মাসে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে, অর্থনীতির ১০ শতাংশ উন্নতি হয়েছে। আগামী জুলাই মাসে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশ কমে আসবে। মজুত ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে চলতি বছরে ৯ লাখ টন খাদ্যশস্য আমদানি করা হবে। আমরা এসবের প্রতিফলন বাজারে দেখতে চাই। রমজানে যাতে কোনো হাহাকার না ওঠে। লোডশেডিং পরিস্থিতি যেন মানুষকে বিক্ষুব্ধ না করে।
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, খেটে খাওয়া মানুষ সংস্কার বা নির্বাচন নিয়ে চিন্তিত নয়, তারা বেশি চিন্তিত কোনোরকমে খেয়ে পরে বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা নিয়ে। দ্রব্যমূল্য ও নিরাপত্তা নিয়ে জনগণ চূড়ান্তভাবে বিরক্ত হওয়ার আগেই নিজেদের দক্ষতা ও দায়িত্বশীলতার প্রমাণ দেওয়ার জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান লে.
উৎস: SunBD 24
কীওয়ার্ড: র জন ত ক অবস থ ন সরক র র
এছাড়াও পড়ুন:
লন্ডন বৈঠকে অবিশ্বাস দূর, সরকারের সম্মানজনক প্রস্থানের পথ সুগম হবে: সাইফুল হক
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক দেশে আগামী সংসদ নির্বাচনকেন্দ্রিক অচলাবস্থা, সন্দেহ ও অবিশ্বাস দূর করবে বলে আশা করছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। আজ শনিবার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এ কথাগুলো বলেন তিনি।
লন্ডনে দুই নেতার বৈঠকের বিস্তারিত সব রাজনৈতিক দল ও জনগণের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করারও আহ্বান জানিয়েছেন সাইফুল হক।
সরকারের এই উদ্যোগ বিলম্বিত বোধদয়ের ফল বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। সাইফুল হক বলেন, আরও আগে সরকারের এই বোধদয় হলে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত বিতর্ক ও রাজনৈতিক বিরোধ এড়িয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতিসহ মৌলিক কাজে আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া যেত।
সব অংশীজনকে আস্থায় নিয়ে সরকারকে কাজ করার আহ্বান জানান সাইফুল হক। তিনি বলেন, এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের সম্মানজনক প্রস্থানের রাস্তা সুগম হলো।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সাইফুল হক বলেন, দেশের মানুষের অধিকার ও মুক্তি অর্জনে তাঁর দল জনগণের ভালোবাসা নিয়ে আগামীতে আপসহীন ধারায় সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, আবু হাসান টিপু, আনছার আলী দুলাল ও মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক। সমাবেশে সংহতি জানান গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদের আহবায়ক শেখ আবদুর নূর।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম মীর, রেজাউল আলম, ফিরোজ আলী, কেন্দ্রীয় সংগঠক আইয়ুব আলী, বাবর চৌধুরী, ঢাকা মহানগর কমিটির নেতা মো. সালাউদ্দীন, মিজারুল রহমান ডালিম, আরিফুল ইসলামসহ পার্টির ঢাকা মহানগরের নেতারা।