গণঅভ্যুত্থানের ফল পেতে ধৈর্য ধরুন: আসিফ মাহমুদ
Published: 11th, February 2025 GMT
গণঅভ্যুত্থানের ফল পেতে দেশের জনগণকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’ স্লোগানে শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী তারুণ্যের উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
আসিফ মাহমুদ বলেন, “দেশের জনগণ একটি রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানের পরেও ধৈর্য সহকারে যে প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়েছে, বড় ধরনের কোনো রক্তপাত হয়নি, আইন ও বিচার ব্যবস্থার প্রতি যে শ্রদ্ধা দেখিয়েছে সেখান থেকে আমরা আশ্বস্ত হতে পারি। আমরা আশা করি, দেশের জনগণ দেশ পুনর্গঠনেও ধৈর্য এবং অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই গণঅভ্যুত্থানের যেই ফসল দেশের মানুষ পেতে চায় তা বাস্তবায়নে সবাই সহযোগিতা করবে।”
অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার ও বিচারের এজেন্ডা বাস্তবায়নে এবং একটি সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক উত্তরায়ণের যে দায়িত্ব নিয়েছে সেই কাজে দেশবাসী সহযোগিতা করবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে তরুণরা যেভাবে আত্মত্যাগ করেছে দেশের জন্য, দেশ পুনর্গঠনেও একইভাবে এগিয়ে আসবে এমন আশা প্রকাশ করে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, “প্রত্যেকটা সেক্টরে তাদের যোগ্যতার প্রমাণ দেবে। আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য তারা তাদের সর্বোচ চেষ্টাটা করবে।”
তিনি আরো বলেন, “এই গণঅভ্যুত্থান জাতিকে একটি স্বপ্ন দেখিয়েছে একটি নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ করার। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করছে। কমিশনগুলো তাদের প্রস্তাবনা পেশ করেছে। স্টেকহোল্ডার কনসালটেশনের মাধ্যমে সে প্রস্তাবনাগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে রাষ্ট্রকাঠামোর যে অঙ্গগুলো ফ্যাসিবাদী সরকারের সময় ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে সেগুলোকে পুনর্গঠন করা হবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষ ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা থেকে মুক্তি পাবার পথে অগ্রসর হবে।”
ঢাকা/রায়হান/ইভা
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণঅভ য ত থ ন র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
কোনো দলের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হলে জোট হতে পারে: সারজিস আলম
আগামীর বাংলাদেশ এবং জনগণের স্বার্থ সামনে রেখে যদি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়, তাহলে নির্বাচনী জোট হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এসসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
আজ সোমবার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ নগরের একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। এনসিপির কমিটি গঠন উপলক্ষে ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলার আহ্বায়ক এবং সদস্যসচিবের সাক্ষাৎকার গ্রহণ শেষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সারজিস আলম বলেন, ‘যদি তারা (রাজনৈতিক দল) জুলাই সনদ বাস্তবায়নে একমত থাকে, বিচারিক প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে একমত থাকে, যদি তারা বাংলাদেশে ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী এবং আওয়ামী ফ্যাসিস্টবিরোধী তাদের শক্ত অবস্থান ধরে রাখতে পারে—এ বিষয়গুলোতে যদি আমরা ঐকমত্য হতে পারি, তাহলে জনগণের স্বার্থে অ্যালায়েন্স (নির্বাচনী জোট) হতে পারে। এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা চলমান, তবে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
আগামী নির্বাচনে এনসিপি ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং নিজেদের সংগঠনকে শক্তিশালী করতে কাজ করছে জানিয়ে সারজিস আলম বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে যদি প্রতিটি ওয়ার্ডে এনসিপির আহ্বায়ক কমিটি থাকে, তাহলে ৩০০ আসনে শক্তিশালী প্রার্থী দিতে পারবেন। কমিটি গঠনের বিষয়ে কাজ চলছে।
আগামী সংসদ নির্বাচনে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির (জাপা) অংশগ্রহণ করার কোনো অধিকার নেই উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে এনসিপি নেতা সারজিস আলম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এবং তাদের যারা দোসর জাতীয় পার্টি, তাদেরও আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার কোনো অধিকার নেই। এই জাতীয় পার্টির কত বড় সাহস, এই জিএম কাদেররা এবং এঁদের যারা সাঙ্গপাঙ্গ আছে, এরা যে খুনিদের দোসর এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ওই খুনিদের মদদদাতা, তার প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়। তারা যখন বলে জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না! তাদের জন্মদাতা যে আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী লীগ যে তাদের পেলেপুষে বড় করেছে, এর প্রমাণ তারা আবার নতুন করে দিচ্ছে। তাদের জাত চেনাচ্ছে। এই খুনিদের আগামীর বাংলাদেশের কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার অধিকার নেই।’
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া সম্ভব কি না, এমন প্রশ্নে সারজিস আলম বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশন আমাদের শাপলা প্রতীক দিতে গিয়ে তারা তাদের জায়গা থেকে একটি লম্বা সময় স্বেচ্ছাচারিতা করেছে এবং কোনো আইনগত বাধা না থাকা সত্ত্বেও আমাদেরকে শাপলা না দিয়ে শাপলা কলি দেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনকে আমাদের জায়গা থেকে আহ্বান করব, তারা যদি ওই একই ধরনের আচরণ আগামী দিনে করে, তাহলে তাদের ওপর আস্থার সংকট তৈরি হবে। আমরা চাই, তারা সর্বোচ্চ নিরপেক্ষ এবং সুষ্ঠুভাবে তাদের প্রতিষ্ঠানের স্বাধীন যে সাংবিধানিক অবস্থা, তা যেন বজায় রাখে। তারা যেন পূর্বের মতো কোনো দলীয় নির্বাচন কমিশনে পরিণত না হয়। যদি কারও ভেতর এমন চিন্তা বা চেষ্টা থাকে, তাহলে তাদের পরিণতি তাদের পূর্বসূরিদের মতো হবে।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব নাহিদা সারোয়ার, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আশিকিন আলম প্রমুখ।