সম্মাননা পেলেন ঢাকা বিভাগের ৫ অদম্য নারী
Published: 12th, February 2025 GMT
ঢাকা বিভাগের সংগ্রামী পাঁচজন নারী পেয়েছেন ‘অদম্য নারী পুরস্কার- ২০২৪’। বুধবার রাজধানীর দোয়েল চত্বরে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়নে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এই পাঁচ নারীকে পুরস্কার তুলে দেন সমাজকল্যাণ এবং নারী ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশীদ।
পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন- অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী ক্যাটাগরিতে রাজবাড়ির স্বপ্না রানী ঘোষ, শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে নারায়ণগঞ্জের মাসুদা আক্তার, সফল জননী ক্যাটাগরিতে কিশোরগঞ্জের সেলিনা মজিদ, নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যোমে জীবন শুরু করা ফরিদপুরের লিপি বেগম এবং সমাজ উন্নয়নে অবদান রাখায় ফরিদপুরের সামর্তবান। পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রত্যেককে অনুষ্ঠান মঞ্চে সম্মাননা ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট এবং ২৫ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, মেয়েদের কথা বলতে গেলে আমরা নারীর অসহায়ত্বের কথা বেশি বলি। কিন্তু যদি এই দেশের ইতিহাসের দিকে তাকাই, তাহলে আমি নারীর বীরত্বকে দেখি। একাত্তরের দিকে তাকালেই আমি বীর নারীদের দেখতে পাই। আমাদের দেশের প্রবর্তনের পেছনে, দুর্যোগে, সংকটে সবসময় আমাদের নারীরা পুরুষের পাশে উজ্জ্বল হয়ে থেকেছেন।
অর্থনীতি, কৃষি, পরিবার সর্বক্ষেত্রে নারীরা মেরদণ্ড হয়ে আছেন বলে নিজের অভিমত প্রকাশ করেন উপদেষ্টা শারমীন মুরশিদ। তিনি জানান, নারীরা অবদান রাখার পরেও তারা স্বীকৃতি পান না। গৃহস্থালি কাজে নারীরা দিনে গড়ে ১৮ ঘণ্টা সময় দেন। কিন্তু অর্থনীতিতে এর কোনো স্বীকৃতি দেওয়া হয় না।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ঢাকা বিভাগের ১৩ জেলার ৫৮ জন অদম্য নারী পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পান। সেখান থেকে ৫ জনকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ, মহিলা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কেয়া খান প্রমুখ। তারা বলেন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় অদম্য নারী সম্মাননার মাধ্যমে নারীদের অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করে। পরিবারে নারী যেমন থাকেন পুরুষও থাকেন। নারী পুরুষ সবাইকেই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে। বক্তারা নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ইসলামী শ্রম আইন বাস্তবায়নের দাবি
শ্রমিক সমাজের মুক্তির জন্য ইসলামী শ্রমনীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের দাবিতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে র্যালি, আলোচনা সভা ও সমাবেশ করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো।
মহান মে দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১ মে) সকাল থেকে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়।
গাজীপুরে শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেছেন, ইসলামী শ্রমনীতি ছাড়া যে শ্রমিকের মুক্তি সম্ভব না, তা আজ প্রমাণিত। স্বাধীনতার এতগুলো বছর পরও বিদ্যমান শ্রম নীতিমালাই বাস্তবায়ন করা যায়নি। দেশের অর্থনীতির আকার বড় হয়েছে, জিডিপির আকার বড় হয়েছে, কিন্তু শ্রমিকের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। টাকার অংকে শ্রমিকের বেতন বাড়লেও মূল্যস্ফীতির কারণে প্রকৃত মজুরি বরং আরো কমেছে। এই বাস্তবতায় রাষ্ট্র পরিচালনায় ইসলামকে ভিত্তি বানাতে না পারলে শ্রমিকের ভাগ্য কোনোদিনই পরিবর্তন হবে না।
ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা খলিলুর রহমান নোয়াখালীর সেনবাগে তার নির্বাচনি এলাকায় শ্রমিক-জনতা সমাবেশে বলেছেন, ইসলামী শ্রম আইন বাস্তবায়নে সামগ্রিক আন্দোলন করা ছাড়া শ্রমিকের সামনে আর কোনো পথ নেই। ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন সে পথেই হাঁটবে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস কেবল একটি দিন নয়, বরং শ্রমজীবী মানুষের অধিকার, মর্যাদা ও ন্যায্যতার প্রতীক। ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ শুরু থেকেই এ চেতনাকে ধারণ করে শ্রমজীবী জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। এবারের দিবস উপলক্ষে দেশব্যাপী যে উদ্দীপনা ও অংশগ্রহণ আমরা দেখেছি, তা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক ও অনুপ্রেরণাদায়ক।
মে দিবসে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, জামালপুর, নেত্রকোনা, শেরপুর, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, নড়াইল, বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জয়পুরহাট, রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, মাগুরা, মেঘনাঘাটসহ সাংগঠনিক জেলাগুলো সভা-সমাবেশ করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রফিক