পটুয়াখালী আইনজীবী সমিতির নির্বাচন ঘিরে জামায়াতপন্থী ১১ আইনজীবীর বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা
Published: 13th, February 2025 GMT
পটুয়াখালী আইনজীবী সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হামলার অভিযোগে জেলা জামায়াতের আমিরসহ জামায়াতপন্থী ১১ আইনজীবীর বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে পটুয়াখালী সদর থানায় মামলাটি করেন পটুয়াখালী জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্য ও জেলা জজ আদালতের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) মো. মিজানুর রহমান।
মামলার আসামিরা হলেন জামায়াতপন্থী আইনজীবী পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো.
এজাহারে বলা হয়েছে, ১১ ফেব্রুয়ারি জেলা আইনজীবী সমিতির ২০২৫-২৬ কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন উপলক্ষে মনোনয়ন ফরম ক্রয় এবং জমা দেওয়ার দিন ছিল। ফরম ক্রয়-বিক্রয় শুরু হলে জেলা জামায়াতের আমির নাজমুল আহসান দলীয় আইনজীবী ও বহিরাগতদের নিয়ে বিভিন্ন পদে ছয়টি মনোনয়ন ফরম ক্রয় করে জমা দেন। ফরম বিক্রয়ের সময় শেষ হওয়ার পর আবার ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবী পরিষদের সক্রিয় সদস্য মো. মহিউদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে সাধারণ সম্পাদক পদে ফরম ক্রয়ের কথা জানান। এ সময় সাধারণ ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্যরা ফরম ক্রয়-বিক্রয়ে দ্বিমত জানালে জামায়াতের জেলা আমির আইনজীবী মো. নাজমুল আহসানের নির্দেশে এজাহারভুক্ত আসামিরা বাদী ও সাক্ষীদের মারধর করে মারাত্মক জখম করেন। হামলার সময় বাদী ও সাক্ষীদের মুঠোফোন ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুনপটুয়াখালীতে জামায়াতপন্থী আইনজীবীর মামলায় জামিন পেলেন বিএনপিপন্থী ১১ আইনজীবী৬ ঘণ্টা আগেএ বিষয়ে মামলার প্রধান আসামি জেলা জামায়াতের আমির মো. নাজমুল আহসান বলেন, ‘গত ১১ ফেব্রুয়ারি জেলা আইনজীবী সমিতি কার্যালয়ে কে কাকে হামলা ও মারধর করেছে, তার ভিডিও চিত্র দেশবাসী দেখেছেন, এখানে লুকানোর কিছু নাই। অপরাধীদের অপরাধ ঢাকার জন্য বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন, যা ভিত্তিহীন।’
এর আগে ওই ঘটনায় বুধবার রাতে বিএনপিপন্থী ১১ আইনজীবীর নাম উল্লেখ করে মামলা হয়। হামলার শিকার পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. রুহুল আমিন সিকদার বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এতে বহিরাগত আরও ৩৫ থেকে ৪০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে এজাহারভুক্ত বিএনপিপন্থী ১১ আইনজীবী পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে আপসের শর্তে জামিন পান।
পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইমতিয়াজ আহম্মেদ বলেন, ১১ ফেব্রুয়ারি পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় প্রথমে জামায়াতপন্থী আইনজীবী একটি মামলা করেন। এক দিন পর বিএনপিপন্থী আইনজীবী একটি মামলা করেন। দুই মামলায় সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুনপটুয়াখালী আইনজীবী সমিতির নির্বাচন ঘিরে হামলার অভিযোগে বিএনপিপন্থী ১১ আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ১১ ফ ব র য় র জ ম য় তপন থ
এছাড়াও পড়ুন:
বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষা ২৮ জুন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীদের সুবিধার জন্য লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির পরামর্শ প্রকাশ করা হচ্ছে। আজ পঞ্চম পর্বে থাকছে বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ বিষয়ে প্রস্তুতির পরামর্শ। পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী রিয়াজুর রহমান।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ মূলত আইনজীবীদের পেশাজীবনের অনুসরণীয় বিধিমালা। এ আইন থেকে আইনজীবী তালিকাভুক্তি লিখিত পরীক্ষায় দুটি প্রশ্ন আসবে। উত্তর দিতে হবে একটি। নম্বর থাকবে ১০।
প্রশ্নপত্রের মানবণ্টন দেখেই বোঝা যাচ্ছে আইনটি কেমন হতে পারে। মূলত বার কাউন্সিলের গঠন, আইনজীবী হওয়ার যোগ্যতা এবং একজন আইনজীবী হিসেবে সমাজের প্রতি, মক্কেলের প্রতি, সহকর্মীদের প্রতি যেসব দায়িত্ব পালন করতে হবে, তা এ আইনে বলা হয়েছে। বাস্তবধর্মী ও পেশাজীবনে অতি চর্চিত একটি আইন হলো বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২। এ আইন থেকে বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনা করলে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব।
যেমন বার কাউন্সিল কীভাবে গঠিত হয়, বার কাউন্সিলের কার্যবালি কী, সদস্যরা কীভাবে নির্বাচিত হন, কতগুলো কমিটি রয়েছে, কমিটির কাজ কী কী—এগুলো পড়তে হবে। অনেকেই আছে বার কাউন্সিল ও বার অ্যাসোশিয়েশনের মধ্যে পার্থক্য বোঝেন না। এটি ভালো করে রপ্ত করতে হবে। এমন প্রশ্ন হরহামেশা পরীক্ষায় আসে।
এ ছাড়া বার ট্রাইব্যুনালের গঠন ও কার্যাবলি, আইনজীবীদের পেশাগত অসদাচরণের জন্য কী কী ধরনের শাস্তি রয়েছে, বার কাউন্সিল কি আইনজীবীদের বিরুদ্ধে সুয়োমোটো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে—বিষয়গুলো কোনোভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না। অনুচ্ছেদ ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩২ এবং বিধি ৪১, ৪১ক ও ৫০–এ এসব বিষয়ে বিস্তারিত বলা আছে। সেগুলো ভালো করে পড়তে হবে। অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা, একজন আইনজীবী হিসেবে আরেক আইনজীবীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তর জানতে হবে। এসব বিষয় থেকে নিয়মিত প্রশ্ন আসে।
পেশাগত বিধি অংশে রচনামূলক প্রশ্ন আসতে পারে। যেমন পেশাগত বিধি এবং নীতিমালার আলোকে আদালতের প্রতি, মক্কেলের প্রতিসহ আইনজীবীদের প্রতি ও জনসাধারণের প্রতি একজন আইনজীবীর দায়িত্ব ও কর্তব্য পর্যালোচনা করতে বলা হয়। বর্তমান ঢাকা বারসহ বেশ কয়েকটি বার অ্যাসোশিয়েশনে এডহক কমিটি রয়েছে। এডহক বার কাউন্সিলের গঠন ও ফাংশনস সম্পর্কে প্রশ্ন আসতে পারে। এগুলো ভালো করে পড়তে হবে।
অনেক সময়ে আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরসংক্রান্ত মুসাবিদা করতে দেওয়া হয়। তাই এই মুসাবিদা নিয়মিত অনুশীলন করবেন। মনে রাখবেন, মামলার মুসাবিদা ও আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগের মুসাবিদার ধরন কিন্তু এক নয়। তাই যেকোনো ভালো একটি বই থেকে ফরমেটটি দেখে নেবেন এবং অনুশীলন করবেন। একই সঙ্গে বিগত কয়েক বছরের প্রশ্ন সমাধান করবেন। এ আইন থেকে বিগত বছরের প্রশ্ন রিপিটও হয়।
একটি বিষয় মনে রাখবেন, আইনটি সহজ বলে অবহেলা করার সুযোগ নেই। কারণ, কৃতকার্য হওয়ার জন্য এই ১০ নম্বর অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে।