দিনাজপুরের বিরামপুরের একটি ভুট্টা ক্ষেত থেকে সিমসহ মুঠোফোন, রক্তমাখা লাঠি, দড়ি ও বোতলে ভর্তি পেট্রোল উদ্ধার করেছে বিরামপুর থানা পুলিশ। এ নিয়ে চলছে এলাকা জুড়ে আতঙ্ক। তবে এঘটনায় কোন মরদেহ উদ্ধার করা হয়নি। 

পুলিশ বলছেন, আলামত দেখে মনে হচ্ছে এগুলো একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের কাজে ব্যবহৃত হয়েছে।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিরামপুর উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের পলিখিয়ার মামুদপুর ফুল ডাঙ্গা ভুট্টা ক্ষেত থেকে এগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, কাটলা ইউনিয়নের খিয়ার মামুদপুর পাঠান চড়া (ফুল ডাঙ্গা) এলাকায় আঞ্চলিক সড়কের উত্তর পাশে একটি ভুট্টা খেতে কাজ করতে যান কয়েকজন স্থানীয় কৃষক। তারা সেখানে বেশ কিছু ভুট্টার গাছ ভাঙা অবস্থায় দেখতে পান। কাছে গিয়ে রক্তমাখা বাঁশের লাঠি, সিমসহ একটি মুঠোফোন দেখতে পান তারা। পাশেই পড়ে থাকতে দেখেন রক্তমাখা একটি দড়ি এবং দুই বোতল পেট্রোল। 

আধা কিলোমিটার দূরে পাকা সড়কের উপরও রক্তের ফোঁটা দেখতে পান এলাকাবাসী। পরবর্তীতে বিষয়টি বিরামপুর থানা পুলিশকে জানানো হয়। দুপুরে বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মমতাজুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা বাঁশের লাঠি, ভুট্টা খেতে পড়ে থাকা রক্তের নমুনা, একটি বোতাম, সিমসহ মুঠোফোন এবং পাকাসড়কের পাশ থেকে রক্তমাখা নাইলন দড়ি জব্দ করে নিয়ে যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, গতকাল শুক্রবার রাতে ঘটনাস্থলের কাছে পূর্বে দক্ষিণ মাধুপুর জামে মসজিদের উদ্যোগে একটি ইসলামি মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। একই সময় মাহফিল চলাকালে দক্ষিণ মাধুপুর নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় মুঠোফোনে ফ্রি ফায়ার খেলাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় কয়েকজন যুবকের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওইদিন গভীর রাতে ভুট্টা খেতে হত্যাকাণ্ডের পরে লাশ গুম করা হতে পারে বলে সন্দেহ করছেন তারা।

এ বিষয়ে বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক জানান, গ্রাম বাসিদের দেওয়া তথ্যে ভুট্টা খেত থেকে রক্তমাখা লাঠি ও পাশের পাকাসড়কে রক্তমাখা দড়ি, সিমসহ মুঠোফোন, দুই বোতল পেট্রোলসহ বেশকিছু আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। সংগৃহীত আলামত দেখে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যা বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তদন্ত করলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

ঢাকা/মোসলেম/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স মসহ

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ