আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে যাচ্ছে অনুপম কথাচিত্র প্রযোজিত সিনেমা ‘বান্ধব’। এটি নির্মাণ করেছেন সুজন বড়ুয়া।

প্রযোজক অনুপ বড়ুয়া জানিয়েছেন, অনেক আগে ‘বান্ধব’ সেন্সর করা হয়েছে। মুক্তির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২১ ফেব্রুয়ারি। সম্পূর্ণ মৌলিক গল্পের এ সিনেমা মুক্তির জন্য সব ধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

ময়লা আবর্জনায় ভরা ডাস্টবিন থেকে কুড়িয়ে পাওয়া পরিচয়হীন একটি শিশুর জীবনের গল্প নিয়ে গড়ে উঠেছে ‘বান্ধব’ সিনেমার কাহিনি। কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন চিত্রনায়িকা মৌ খান।

আরো পড়ুন:

‘দ্য রিমান্ড’ সেন্সরে আটকে থাকা দুঃখজনক’

অশ্লীল সিনেমা বন্ধে মান্নার অগ্রণী ভূমিকা ছিল: মিশা সওদাগর

নিজের চরিত্র নিয়ে উচ্ছ্বসিত মৌ খান বলেন, “আমি কমার্শিয়াল সিনেমায় অভিনয় করে অভ্যস্ত। যার কারণে দর্শক সবসময় গ্ল্যামারাস লুকেই পেয়েছেন। কিন্তু এবার আমাকে ভিন্ন লুকে দেখবেন সবাই, যা নিয়ে আমি খুবই উচ্ছ্বসিত। এই প্রথম ভিন্নরকম চরিত্রে কাজ করেছি। পুরো জার্নিটাই ছিল চ্যালেঞ্জিং। এ সিনেমায় নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করেছি। নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করেছি। সিনেমা মুক্তির পর বাকিটা দর্শক বলবেন।”

‘বান্ধব’ মুক্তিতে বিলম্ব হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে অনুপ বড়ুয়া বলেন, “বান্ধব সিনেমা এর আগে মুক্তি দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে হয়নি। পরে সরকারি অনুদানের ছায়াবৃক্ষ সিনেমার কাজ শুরু করি। যেহেতু অনুদানের সিনেমা ছিল, তাই ওটা আগে মুক্তি দিতে হয়েছিল। এখন বান্ধব রিলিজ দেয়ার উপযুক্ত সময়। তা ছাড়া এখন ভালো সিনেমার সংকট। এজন্য এখন আটকে রাখতে চাই না। সবকিছু বিবেচনা করে ২১ ফেব্রুয়ারি মুক্তি দিচ্ছি।”

‘বান্ধব’ সিনেমায় প্রথমবার জুটি বেঁধেছেন চিত্রনায়িকা মৌ খান ও সুমিত সেনগুপ্ত। সিনেমাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন— গাজী রাকায়েত, রেবেকা রউফ, জয় রাজ, প্রয়াত সিরাজ হায়দার, আসমা, হাবিব খান, আন্না, শায়লা, উর্মি, আরফান প্রমুখ।

‘বান্ধব’ সিনেমায় পাঁচটি গান ব্যবহার করা হয়েছে, যার মধ্যে চারটি লিখেছেন সুদীপ কুমার দ্বীপ এবং অন্যটি লিখেছেন মুন্সি ওয়াদুদ। সংগীত পরিচালনা করেছেন শেখ সাদী খান ও এম এ রহমান।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচিত সরকার ছাড়া ব্যবসার পরিবেশের উন্নতি হবে না, অর্থনীতিতে গতি আসবে না

শ্রম আইন এবং শ্রমিক সংগঠন গঠনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক ইস্যুর ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়টি আগামী নির্বাচিত সরকারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার সুপারিশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, নির্বাচিত সরকার ছাড়া ব্যবসার পরিবেশেরও উন্নতি হবে না, অর্থনীতিতেও গতি ফিরবে না। আর জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ পিছিয়ে দিতে জাতিসংঘে আবেদনের জন্যও সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

আজ সোমবার দুপুরে গুলশানের একটি হোটেলে ইংরেজি দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস আয়োজিত অর্থনৈতিক সংস্কারবিষয়ক এক সেমিনারে এ কথাগুলো বলেন ব্যবসায়ীরা। সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী। ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস সম্পাদক শামসুল হক জাহিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আনোয়ার হোসেন এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ। সেমিনারে বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ী নেতারা তাঁদের নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন।

সেমিনারে বাংলাদেশ থাই চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, ‘শ্রম আইন এবং শ্রমিক সংগঠন গঠনের বিষয়ে এখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে কেন? তিন মাস পরই নির্বাচিত সরকার আসবে, এ বিষয়ে নির্বাচিত সরকারকেই সিদ্ধান্ত নিতে দেন। এখন আমরা অর্থনৈতিক অনেক সংস্কারের কথা বলছি। কিন্তু কিচ্ছু হচ্ছে না। কোনো মুক্তবাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) অথবা অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) হচ্ছে না।’

নিট পোশাকশিল্পমালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘বাংলাদেশের ব্যবসা–বাণিজ্যের যে অবস্থা, তাতে এখনই এলডিসি উত্তরণের পরিস্থিতি নেই। এরই মধ্যে আমরা ১৬টি ব্যবসায়ী সংগঠন থেকে এলডিসি উত্তরণ পিছিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছি। সরকারের কাছে আমাদের দাবি, প্রয়োজনে জাতিসংঘ এসে আমাদের পরিস্থিতি তদন্ত করে দেখুক। এর মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে এলডিসি থেকে উত্তরণ পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করা হোক।’

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, ‘এখন আমাদের নির্বাচিত সরকার দরকার। আগামী ১০ থেকে ১৫ বছর মানুষ জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার না পেলে অনেক সমস্যার সমাধান হবে না।’

সিরামিকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএমইএ) সভাপতি মইনুল ইসলাম বলেন, সুশাসন ছাড়া কোনো দেশের ও ব্যবসা–বাণিজ্য পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হবে না। ক্রেতারা এখন আতঙ্কিত, তারা পণ্য কিনতে চায় না। এই পরিস্থিতিতে একমাত্র সমাধান নির্বাচন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব নেওয়ার সময় ব্যবসা সহজ করার পরিবেশ ৯৯ শতাংশ খারাপ ছিল। এখন সেটা হয়তো ৯৫ শতাংশে এসেছে। ধীরে ধীরে এটা ৯০ শতাংশ হবে এবং আরও উন্নতি হবে। কেন এটা হয় না, সেটা নিয়ে আলোচনা দরকার। বর্তমান সরকার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সিঙ্গেল উইন্ডো চালু করেছে। এতে দুই মাসে প্রায় ১২ লাখ সরাসরি সাক্ষাৎ কমেছে। অর্থাৎ ১২ লাখ বার এনবিআর এ কাগজ নিয়ে আসতে হয়নি।’ বিশ্বব্যাংক সম্প্রতি এমন তথ্য জানিয়েছে বলে জানান তিনি।

সভায় আরও বক্তব্য দেন বিজিএমইএর সিনিয়র সহসভাপতি ইনামুল হক খান, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) চেয়ারম্যান শরীফ জহীর, বাংলাদেশ অ্যাগ্রো কেমিক্যাল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমান, মিডল্যান্ড ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আহসান-উজ জামান, আকিজ বশির গ্রুপের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) মোহাম্মদ খোরশেদ আলম প্রমুখ।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, ‘বিদেশি বিনিয়োগের জন্য আপনারা বেপরোয়া (ডেসপারেট) হচ্ছেন। কিন্তু যে দেশের বিমানবন্দর আগুনে পোড়ে, সেখানে কে বিনিয়োগ করবে? দেশে বিদেশি বিনিয়োগের পরিবেশ নেই।’

ইউসিবির চেয়ারম্যান শরীফ জহীর বলেন, ব্যাংক খাতে বিগত সরকারের সময়ের মতো অবস্থা চলতে থাকলে খাতটিকে দুই বছরের বেশি টিকে থাকতে পারত না। বিশেষ উদ্যোগের মাধ্যমে খেলাপি ঋণের মামলা নিষ্পত্তির সময় কমিয়ে আনতে হবে। তা না হলে প্রকৃত ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ