ওরিয়নের ওবায়দুল ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নাহিদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা, নিজাম হাজারীর সম্পদ ক্রোক, নাফিজের হিসাব অবরুদ্ধ
Published: 17th, February 2025 GMT
ওরিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওবায়দুল করিম, তাঁর স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ও তাঁর স্ত্রী কে ইউ জোহরা জেসমিন এবং বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সহসভাপতি আবদুর রশিদ শিকদারেরও বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফত ও তাঁর স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহীদ ও ছেলে রাহিব সাফওয়ান সরাফতের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী ও তাঁর স্ত্রী নূরজাহান বেগমের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো.
ওরিয়নের চেয়ারম্যানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা
ওরিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওবায়দুল করিম, তাঁর স্ত্রী আরজুদা করিম, ছেলে সালমান ওবায়দুল করিম ও মেয়ে জেরিন করিমের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আবেদন করে দুদক। দুদকের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে আদালতকে বলা হয়, ওরিয়ন গ্রুপ, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং–সংক্রান্ত বিষয় অনুসন্ধান করছে দুদক। ওবায়দুল করিমসহ অন্যরা দেশত্যাগের চেষ্টা করছেন বলে দুদক জানতে পেরেছে। আদালত শুনানি নিয়ে ওবায়দুল করিম, তাঁর স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
সাবেক শিক্ষামন্ত্রীর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ও তাঁর স্ত্রীর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে করা আবেদনে বলা হয়, সাবেক এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডার বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। দুদক জানতে পেরেছে, নুরুল ইসলাম নাহিদ ও তাঁর স্ত্রী দেশত্যাগের চেষ্টা করছেন। শুনানি নিয়ে আদালত তাঁদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন।
নিজাম হাজারীর সম্পদ ক্রোক
সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর ৮২টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব ব্যাংক হিসাবে ২৮০ কোটি ১৪ লাখ টাকা জমা হয়। আর উত্তোলন করা হয় ২৬৮ কোটি টাকা।
এর বাইরে নিজাম উদ্দিন হাজারীর নামে থাকা গুলশানের একটি ফ্ল্যাটসহ চারটি ফ্ল্যাট, মোহাম্মদপুরে একটি চারতলা বাড়ি এবং তাঁর ও তাঁর স্ত্রীর নামে থাকা জমি ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
চৌধুরী নাফিজের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফত ও তাঁর স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহীদ ও ছেলে রাহিব সাফওয়ান সরাফতের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আবেদন করে দুদক। সেই আবেদনে বলা হয়, চৌধুরী নাফিজ সরাফাত গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৮৮৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন, এমন অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক।
এর আগে গত ৭ জানুয়ারি পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, তাঁর স্ত্রী ও ছেলের নামে থাকা ২২টি ফ্ল্যাট, ২টি বাড়িসহ সব প্লট ও জমি ক্রোকের আদেশ দিয়েছিলেন আদালত।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ব ক শ ক ষ মন ত র ক হ স ব অবর দ ধ
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি