আজ মঙ্গলবার সকাল থেকেই সূর্যের দেখা নেই। কুয়াশা পড়েছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। সময় বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশার ঘনত্ব কমে আসছে। রোদ উঠেছে অনেক স্থানে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বাতাসে থাকা ধূলিকণার আধিক্য এবং সাগর থেকে আসা আর্দ্রতা মিলে এমন অবস্থা সৃষ্টি করেছে। এটি মেঘ নয়। সাগরে উচ্চচাপ বলয় আছে। এতে বৃষ্টির সম্ভাবনাও সৃষ্টি হয়েছে।

টানা দুই দিন তাপমাত্রা কমে আসার পর গতকাল সোমবার থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে তাপমাত্রা বেড়ে যায়। দুই দিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে ছিল। গতকাল তা ছিল ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ তাপমাত্রা ছিল উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়। আজও এখানেই দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল রাজধানীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এক দিনের ব্যবধানে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে হয় ১৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর আজ রাজধানীর তাপমাত্রা আরও বেড়ে হয়েছে ২১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে বান্দরবানে, ৩৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আজও তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এ অবস্থায় আজ আবার কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল।

এভাবে কুয়াশা সৃষ্টি হওয়ার কারণ প্রসঙ্গে আবহাওয়া অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, বাতাসে প্রচুর ধূলিকণা আছে। আবার বঙ্গোপসাগরে উচ্চচাপ বলয় রয়েছে। দক্ষিণের সাগর থেকে আসা আর্দ্রতা এবং এই ধূলিকণা মিলে কুয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। তবে ঘন কুয়াশা কেটে যাচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আর্দ্রতা ও সাগরে উচ্চচাপ বলয়ের জন্য বৃষ্টি হতে পারে।

মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলছিলেন, আগামীকাল বুধবার দেশের দুয়েক স্থানে হালকা বৃষ্টি হতে পারে। পরের দিনও বৃষ্টি হতে পারে। তবে বৃষ্টির পরিমাণ খুব বেশি হওয়ার সম্ভাবনা কম।

চলতি মাসে এখন পর্যন্ত দেশের কোথাও বৃষ্টি হয়নি। গত জানুয়ারি এবং আগের ডিসেম্বর মাসে দেশের গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে শূন্য দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স লস য় স গতক ল দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমল ৭৫ পয়সা

রাজশাহীতে হিমাগারে আলু সংরক্ষণে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার আলুচাষি, ব্যবসায়ী ও হিমাগারমালিকদের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হিমাগারে প্রতি কেজি আলু রাখার জন্য ভাড়া দিতে হবে ৫ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে শ্রমিকের খরচ ৫০ পয়সা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমেছে ৭৫ পয়সা।

এর আগে গত মার্চে সরকার প্রতি কেজি আলু রাখার ভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর পর থেকে এ নিয়ে রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা বাড়তি ভাড়ায় আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে কয়েক দফা তাঁরা রাজপথে আন্দোলনও করেছেন। অন্যদিকে হিমাগারমালিকদের দাবি ছিল, প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৮ টাকা করা হোক।

রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজশাহী জেলা আলুচাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহীতে হিমাগার থেকে বাড়তি ভাড়া না দিলে আলু ছাড়া হবে না। এর প্রতিবাদে ঈদের পর নতুন করে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা আন্দোলন করে আসছেন। তাঁদের দাবি, আলু রাখার খরচ আগের বছরের মতো চার টাকা করতে হবে। এ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তাঁরা। হিমাগার মালিকপক্ষ এ নিয়ে আলোচনায় বসার তাগিদ দিয়ে আসছিল।

এরই মধ্যে আলুচাষিনেতারা ১৪ জুন সেনাবাহিনীর কাছে এ নিয়ে একটি অভিযোগ দেন। পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আজ দুপুরে সভা ডাকা হয়। সভায় সব পক্ষের সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয় যে এ বছর সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সার বদলে ৫ টাকা ৫০ পয়সা ও শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা রাখা হবে। আর পেইড বুকিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে আলু রাখা চাষি ও ব্যবসায়ীদের। পরে বিকেলে ক্যান্টনমেন্টে হওয়া এই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিকভাবে পাস করার জন্য রাজশাহী জেলা প্রশাসকের দপ্তরে সভা হয়।

সভায় আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, হিমাগার মালিক সমিতি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি, পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল মঙ্গলবার রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে নতুন ভাড়ার বিজ্ঞপ্তি সব হিমাগারে প্রচার করা হবে।

এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এবার আলুর দাম কম। আবার এ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘাতের আশঙ্কা ছিল। এ নিয়ে একটি অভিযোগ পান তাঁরা। পরে দুই পক্ষকে নিয়ে সভা হয়। সভায় সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত বিকেলে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আরেকটি সভার মাধ্যমে পাস হয়েছে।

রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিঠু আহমেদ বলেন, শুরু থেকেই তাঁরা বাড়তি ভাড়ার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। কয়েক দিন ধরে তাঁরা হিমাগার থেকে আলু নিতে পারছিলেন না। হিমাগারগুলোয় বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছিল। এ নিয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও অবহিত করেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত একটি ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে।

রহমান সিডস স্টোরেজের ব্যবস্থাপক আবদুল হালিম বলেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি কেজি আলু রাখতে খরচ পড়বে ৫ টাকা ৫০ পয়সা আর শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা। এ ছাড়া যাঁরা আগে থেকেই টাকা দিয়ে অগ্রিম বুকিং দিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আলুর কেজিপ্রতি শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে।

রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত সব হিমাগারমালিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হবে।

আরও পড়ুনরাজশাহীতে হিমাগারে ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ১৫ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ