গাইবান্ধায় হিমাগারে আলু রাখার বুকিং স্লিপ না পাওয়ায় ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন কৃষকেরা। আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টা ও দুপুর ১২টায় দুই দফায় গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সদরের হিমাদ্রি কোল্ডস্টোরেজের সামনে এই কর্মসূচি পালিত হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও কৃষকেরা জানান, হিমাগারে আলু রাখার বুকিং স্লিপের জন্য মঙ্গলবার সকাল থেকেই কৃষকেরা হিমাদ্রি কোল্ডস্টোরেজের সামনে জড়ো হতে থাকেন। সকাল নয়টার দিকে হিমাদ্রি কোল্ডস্টোরের ব্যবস্থাপক মোজাম্মেল হক তাঁদের জানিয়ে দেন, স্টোরে ধারণক্ষমতা অনুযায়ী বুকিং কার্ড বিক্রি হয়ে গেছে।

এই খবর জানার পর কৃষকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন। তাঁরা কোল্ডস্টোরেজের সামনে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের ওপর দাঁড়িয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। প্রায় আধা ঘণ্টা পর অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। দুপুর ১২টা থেকে পুনরায় একই স্থানে মহাসড়কে দাঁড়িয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন কৃষকেরা। প্রায় আধা ঘণ্টা অবরোধ চলার পর গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মেহেদী হাসান, গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বুলবুল ইসলাম, গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি মোজাফফর হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেন। পরে কৃষকেরা অবরোধ তুলে নেন।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হিমাগারে আলু সংরক্ষণের জন্য কৃষকদের আগে থেকে বুকিং দিতে হয়। কে কী পরিমাণ আলু রাখতে চান, সেই অনুযায়ী বুকিং দেন। অবরোধে অংশ নেওয়া কৃষকেরা বলছেন, একদিকে এবার হিমাগারে ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। অপর দিকে ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে বুকিং স্লিপ বিক্রি শুরু হয়। তিন দিনেই কার্ড শেষ হয়ে যাওয়া রহস্যজনক। তাই অবিলম্বে হিমাগারে আলু রাখার বুকিং স্লিপ কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করতে হবে।

এ বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জের ইউএনও সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা মঙ্গলবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিজন কৃষক কমপক্ষে পাঁচ বস্তা করে আলু যাতে হিমাগারে রাখতে পারেন, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হিমাগার কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ ব ন দগঞ জ ক ষকদ র অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

আ.লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করে ইউএনওকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভার হরিতলা মোড়ে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে ইউএনওর অপসারণের দাবি জানানো হয়।

এলাকার সচেতন নাগরিক, ব্যবসায়ী মহল, অভিভাবক, ছাত্রছাত্রী, কর্মচারী-শিক্ষকমণ্ডলীর ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়। এতে এলাকাবাসী ছাড়া তাহেরপুর কলেজের অধিকাংশ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন থেকে কলেজের সম্পত্তি অন্যত্র ইজারা দেওয়ার চেষ্টার প্রতিবাদ জানানো হয়।

তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়। পৌরসভার নির্মিত দোকানঘর থেকে তাহেরপুর কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ায় এ কর্মসূচি পালন করা হয় বলে অভিযোগ। আওয়ামী লীগের নেতার দাবি, তিনি দলীয় পরিচয়ে নয়, কলেজশিক্ষক হিসেবে মানববন্ধনে যোগ দিয়েছেন। তবে ব্যানারে ফ্যাসিবাদ শব্দটি প্রথমে দেখেননি। পরে দেখেছেন।

মানববন্ধনে তাহেরপুর কলেজের শিক্ষক রইচ আহমেদ, সুরাইয়া আক্তার, তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ইসমাইল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন। বক্তারা বাগমারার ইউএনওকে ফ্যাসিবাদের দোসর ও চব্বিশের চেতনাবিরোধী অভিযোগ তুলে তাঁদের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ার নিন্দা জানান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তাহেরপুর কলেজ–সংলগ্ন স্থানে পৌর কর্তৃপক্ষ দোকানঘর নির্মাণ করেছে। পৌরসভার পক্ষে নিয়মিত ভাড়া আদায় করা হয় ওই প্রতিষ্ঠান থেকে। ৫ আগস্টের পর থেকে কলেজের পক্ষ থেকে ৪১টি দোকানঘর নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করা হয়।

পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে বাগমারার ইউএনও দোকানঘর থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেন। দোকানঘরগুলো পৌরসভার হওয়ায় তারাই সেখান থেকে ভাড়া আদায় করবে বলে জানানো হয়। সেখান থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ আর ভাডা আদায় করবে না জানিয়ে ২২ এপ্রিল পৌরসভার প্রশাসককে লিখিতভাবে জানান কলেজের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম। এর পর থেকে কর্তৃপক্ষ ইউএনওর ওপর ক্ষুব্ধ হয়।

তাহেরপুর কলেজের সহকারী অধ্যাপক সুরাইয়া আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, কলেজের জায়গায় তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়ব ও সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ দোকানঘর নির্মাণ করে মোটা অঙ্কের টাকায় ভাড়া দেন। ৫ আগস্টের পর তাঁরা (কলেজ কর্তৃপক্ষ) সেগুলো নিয়ন্ত্রণে নেন। তবে ২২ এপ্রিল ইউএনও সাদা কাগজে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছ থেকে ভাড়া আদায় বিষয়ে একটি লিখিত নিয়েছেন। এর প্রতিবাদে মূলত তাঁদের এই কর্মসূচি।

পৌরসভার দোকানঘর থেকে কেন পৌরসভা ভাড়া আদায় করবে না জানতে চাইলে সুরাইয়া আক্তার বলেন, ‘জায়গাগুলো কলেজের ছিল।’ ব্যানারে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখা হলেও কেন আওয়ামী লীগের নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করলেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কলেজের স্বার্থে আমরা এক।’

জানতে চাইলে ইউএনও মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, দোকানগুলো তাহেরপুর পৌরসভার। সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করে পৌরসভার কোষাগারে জমা করা হয়। তিনি প্রশাসক হিসেবে ভাড়া আদায়ের উদ্যোগ নিয়েছেন। কলেজের অধ্যক্ষ নিজেই জানিয়েছেন, এখন থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ ভাড়া আদায় করবে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাতে টর্চলাইট জ্বালিয়ে সংঘর্ষ, ইউএনও-ওসিসহ আহত ৩০
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাতে ‘টর্চলাইট জ্বালিয়ে’ দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ইউএনও-ওসিসহ আহত ৩০
  • পড়াশোনায় ফিরছেন দিনাজপুরের ‘ইংলিশম্যান’ হৃদয়, শেখাবেন ইংরেজি
  • আ.লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করে ইউএনওকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা
  • নারায়ণগঞ্জে ৩০ স্কুলে চালু হলো ‌‘মিড ডে মিল’
  • গাজীপুরে ১০ মাটি খেকোকে কারাদণ্ড
  • পাঠাগার থেকে লুট হওয়া বই ফেরত পেলো কর্তৃপক্ষ