ভারতের হারের পর বাংলাদেশের সেমিফাইনালের সম্ভাবনা কতটা বাড়ল
Published: 20th, October 2025 GMT
নারী বিশ্বকাপে গতকাল রাতে ইংল্যান্ডের কাছে ৪ রানে হেরেছে ভারত। এই হারে ভারতের মেয়েদের সেমিফাইনালে ওঠার পথ কিছুটা কঠিন হয়ে গেছে। আর ভারতের পথ কঠিন হয়ে যাওয়া মানে অন্য দলগুলোর সম্ভাবনা আরেকটু বেড়ে যাওয়া। যে দলের মধ্যে বাংলাদেশও আছে।
৮ দলের নারী বিশ্বকাপে খেলা চলছে লিগের আদলে। প্রত্যেক দল অপর সাত দলের বিপক্ষে একটি করে ম্যাচ খেলবে। পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ চারটি দল খেলবে সেমিফাইনালে, সেখান থেকে ফাইনালে। এরই মধ্যে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা। বাকি একটি জায়গা নিয়ে এখন লড়াইয়ে ৪ দল।
বাংলাদেশ দল এখন পর্যন্ত খেলেছে ৫ ম্যাচ, তাতে পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের ২ পয়েন্টই সম্বল। নিগার সুলতানারা তাঁদের শেষ দুটি ম্যাচ খেলবে শ্রীলঙ্কা ও ভারতের বিপক্ষে। এর মধ্যে লঙ্কানদের বিপক্ষে ম্যাচটি আজই। এই মুহূর্তে যা সমীকরণ, বাংলাদেশকে হাতে থাকা দুটি ম্যাচেই জিততে হবে। এক ম্যাচ হারলেই লিগ পর্ব থেকে বিদায় নিশ্চিত।
শ্রীলঙ্কা, ভারত দুই দলকে হারালে বাংলাদেশের মোট পয়েন্ট হবে ৬। তবে এই পয়েন্ট সেমিফাইনাল খেলার জন্য যথেষ্ট হবে না। মিলতে হবে আরও কিছু সমীকরণ। সেই সমীকরণ বোঝার আগে পয়েন্ট তালিকাটা দেখে নেওয়া যেতে পারে।
পয়েন্ট তালিকায় ভারত ৪ পয়েন্ট নিয়ে তিনে, চার নম্বরে থাকা নিউজিল্যান্ডের পয়েন্টও ৪। এই দুই দলেরই আবার ম্যাচ আছে ২৪ অক্টোবর। এবার চোখ দেওয়া যাক বাংলাদেশের সম্ভাবনায়।
১.
২. শ্রীলঙ্কাকে হারানোর পর তাকিয়ে থাকতে হবে ভারত ও নিউজিল্যান্ডের দিকে।
বৃহস্পতিবার এ দুই দলের ম্যাচে যারা জিতবে, তাদের অন্য ম্যাচটি হারতে হবে। অর্থাৎ ভারত যদি নিউজিল্যান্ডকে হারায়, বাংলাদেশকে ২৬ অক্টোবরের ম্যাচে ভারতকে হারাতে হবে। অথবা নিউজিল্যান্ডই যদি ভারতকে হারায়, বাংলাদেশকে অপেক্ষায় থাকতে হবে নিউজিল্যান্ড যেন ২৬ অক্টোবর ইংল্যান্ডের কাছে হারে। সেটা ঘটলে কোনো দলের পয়েন্টই ৬-এর বেশি হবে না। রান রেটে এগিয়ে থাকলে সেমিফাইনালে উঠবে বাংলাদেশই।
২৬ অক্টোবর বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ শুরু হবে বেলা সাড়ে তিনটায়। একই দিন ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড খেলতে শুরু করবে বেলা সাড়ে ১১টায়।
তবে তত দিন পর্যন্ত সেমিফাইনালের দৌড়ে টিকে থাকতে বাংলাদেশকে আজ শ্রীলঙ্কাকে হারাতেই হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ম ফ ইন ল
এছাড়াও পড়ুন:
সাভার–ধামরাইয়ের কৃষক রক্ষায় পদক্ষেপ নিন
ঢাকার সাভার ও ধামরাই—এ দুই গুরুত্বপূর্ণ উপজেলায় কৃষিজমি দ্রুত কমে যাওয়ার যে প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, তার মূলে রয়েছে অপরিকল্পিত শিল্পায়ন এবং শিল্পবর্জ্যের ভয়াবহ দূষণ। প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত দশকে এ অঞ্চলে শিল্পকারখানার সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ৯৪ থেকে বেড়ে ১ হাজার ৮৩২–এ দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে কৃষিজমির পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে, সাভারে যা ২ হাজার ৫১০ হেক্টর ও ধামরাইয়ে ১ হাজার ১২৭ হেক্টর। শিল্প ও কৃষির মধ্যকার অসম লড়াইয়ে এভাবে কৃষিজমি বিলীন হয়ে যাওয়াটা খুবই উদ্বেগজনক।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের সহায়তায় করা নমুনা পরীক্ষায় এ বিপর্যয়ের বৈজ্ঞানিক প্রমাণ মিলেছে। এর থেকে জানা যাচ্ছে, কারখানার নালা এবং কৃষিজমির জমা পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ (ডিও) এত কম যে জলজ জীবন প্রায় ‘প্রাণঘাতী পর্যায়ে’ চলে গেছে। পানিতে অ্যামোনিয়া, ফসফেট ও নাইট্রেটের মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। বিশেষ করে ট্যানারিশিল্পের ক্রোমিয়াম ও ক্যাডমিয়াম এবং ডাইং ও ওষুধ কারখানার নিকেল ও সিসা মাটিতে মিশে মাটিকে বিষাক্ত করছে।
গবেষকেরা বলছেন, ভারী ধাতুগুলো মাটি থেকে শস্যে চলে যাচ্ছে। এর ফলে ফসলের গুণাগুণ পরিবর্তিত হচ্ছে, উৎপাদন কমছে এবং এই ধাতুগুলো খাদ্যের মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করছে। এই দূষণের মূল কারণ হলো শিল্পকারখানার মালিকদের আইন না মানার প্রবণতা এবং প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর কার্যকর উদ্যোগের অভাব।
নগরবিদদের মতে, আইন ও নীতি অনুযায়ী শিল্পকারখানা নির্দিষ্ট এলাকায় হওয়ার কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। কারখানাগুলো কৃষিজমির ভিত উঁচু করে গড়ে উঠছে এবং তরল বর্জ্য পরিশোধনাগার (ইটিপি) স্থাপন না করেই অবাধে সেগুলো নালা, খাল এবং নদীনালার মধ্য দিয়ে কৃষিজমিতে ফেলছে। স্থানীয় খালগুলো দখল ও ভরাট হয়ে সরু হয়ে যাওয়ায় কারখানার বর্জ্য উপচে কৃষিজমিতে জমা হচ্ছে। ফলে দেখা যাচ্ছে, একসময় যে জমি থেকে ২৫ মণ ধান পাওয়া যেত, এখন সেখানে চাষ করাই সম্ভব হচ্ছে না। তখন কম দামে জমি বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকেরা। তাঁদের বক্তব্য, ‘কারখানার পচা পানির কারণে ফসল হয় না, হুদাই খাজনা দিতে হয়।’
স্থানীয় প্রশাসনকে অভিযোগ জানিয়েও কোনো স্থায়ী সমাধান পাওয়া যাচ্ছে না। ‘গায়ের জোরে’ শিল্পমালিক নিজ স্বার্থে পরিবেশ ধ্বংস করছেন আর প্রশাসন যেন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। পরিবেশ রক্ষার আইন থাকা সত্ত্বেও কৃষিজমি সুরক্ষা আইনের উদ্যোগ নেওয়া সত্ত্বেও যখন তা প্রয়োগ হয় না, তখন বোঝা যায় মুনাফার কাছে পরিবেশ ও জীবনের মূল্য কত তুচ্ছ।
এ পরিস্থিতি কেবল পরিবেশদূষণ বা কৃষিজমি কমার সমস্যা নয়; এটি খাদ্যনিরাপত্তা, জনস্বাস্থ্য এবং সুশাসনের ওপর একটি বড় আঘাত। রাষ্ট্রের উচিত অবিলম্বে কার্যকর তদারকি এবং আইন প্রয়োগের মাধ্যমে দূষণকারী শিল্পকারখানাগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া। নিয়মিত মাটি ও পানি পরীক্ষা করে ক্ষতিকর রাসায়নিকের প্রবেশ বন্ধ করা আবশ্যক।