Samakal:
2025-11-03@12:21:06 GMT

‘টোকাই’ এখন গ্যারেজে বন্দি

Published: 18th, February 2025 GMT

‘টোকাই’ এখন গ্যারেজে বন্দি

সাটুরিয়ার গাজীখালী নদীর দুই পাশে গড়ে উঠেছে অনেক প্রতিষ্ঠান ও আবাসিক ভবন। এসব স্থাপনার ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য ‘টোকাই প্রকল্প’ হাতে নেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী, সরকারি কোষাগার থেকে ২৫ লাখ টাকা খরচ করে দুটি গাড়ি কেনা হয় এক বছর আগে। দুই ‘টোকাই’ এখন গ্যারেজে বন্দি। এর সঙ্গে ৯টি ছোট ব্যাটারিচালিত যানও ইউনিয়নে পড়ে আছে।
ময়লা-আবর্জনা ফেলার স্থায়ী ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণ না করে এভাবে লাখ লাখ টাকা অপচয় করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে টোকাই প্রকল্পের নামে দুটি ডাম্পিং গাড়ি ক্রয় করা হয় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে। এতে ব্যয় করা হয় ২৫ লাখ টাকার বেশি। এ প্রকল্পে সহযোগিতা করার জন্য ইউনিয়নগুলোয় ব্যয় করা হয় আরও ১০ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
ময়লা-আবর্জনা ফেলার ডাম্পিং স্টেশন না করে গাড়ি কেনা হয়েছে বলে জানান সাটুরিয়া সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো.

আনোয়ার হোসেন পিন্টু। তিনি বলেন, এক বছর আগে দুটি গাড়ি কেনার পর প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে ব্যাটারিচালিত ট্রলি ভ্যান কিনেছিল। ডাম্পিং স্টেশন তৈরি না করে এ প্রকল্প হাতে নেওয়া ঠিক হয়নি বলে মত তাঁর।
উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ক্লিন ও গ্রিন সাটুরিয়া নির্মাণে উপজেলা উন্নয়ন বরাদ্দ (এডিপি) থেকে টোকাই ‘প্রকল্প’ নেওয়া হয়। দরপত্রের মাধ্যমে কোনো গাড়ির ক্রয়-বিক্রয় প্রতিষ্ঠান কাজটি পায়নি। কাজটি পেয়েছিল রাস্তা নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আর কে এন্টারপ্রাইজ।
জানা গেছে, উপজেলা প্রশাসন কিছু ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহ করে গাড়িতে ভরে এনেছিল বালিয়াটি ঈশ্বরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে। গত ৫ জুন এর উদ্বোধন করেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক রেহেনা আক্তার। এর পর থেকে গাড়িগুলো গ্যারেজে বন্দি রয়েছে। প্রকল্পটি গ্রহণ করেছিলেন তৎকালীন ইউএনও শান্তা রহমান।
উপজেলার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য ইউপি চেয়ারম্যানরা ডাম্পিং স্টেশন করার জন্য প্রস্তাব করেন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মাসিক সমন্বয় সভায় এর অনুমোদন দেয় উপজেলা পরিষদ। কিন্তু ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণ না করে ২৫ লাখ টাকা দিয়ে কেনা হয় দুটি গাড়ি। এক বছর ধরে সেগুলো গ্যারেজে পড়ে রয়েছে। এতে গাড়ির যন্ত্রাংশ ও ব্যাটারি নষ্ট হচ্ছে।
সাটুরিয়া সদরে দুই শতাধিক আবাসিক ভবন রয়েছে। এসব ভবনের ময়লা-আবর্জনা গাজীখালী নদীতে ফেলা হয়। ফলে নদীটি ভরাট হয়ে নাব্য হারাচ্ছে। নদী বাঁচাতে এই উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা এক বছরেও আলোর মুখ দেখেনি। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ কয়েকটি ক্লিনিকের ময়লা-আবর্জনা যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে। জনবহুল স্থান থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করে রিসাইকেল করে বিভিন্ন পণ্য তৈরি করাও এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল। অভিযোগ উঠেছে, অহেতুক এ প্রকল্পে ব্যয় করা হয়েছে প্রায় ৩৬ লোখ টাকা। এটি কোনো কাজেই আসছে না।
সংশ্লিষ্টরা জানান, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য ভূমি উন্নয়ন কর থেকে দুই ভাগ টাকা ইউএনওর হিসাব নম্বরে জমা হয়। এর দুই ভাগের এক ভাগ টাকা ইউপি চেয়ারম্যানদের হিসাব নম্বরে দেওয়া হয়। সেই টাকায় চেয়ারম্যানরা প্রকল্প নেন। টোকাই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে ৯টি ইউনিয়নের 
প্রতিটিতে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার ব্যাটারিচালিত ভ্যান ট্রলি তৈরি করা হয় ময়লা-আবর্জনা আনা-নেওয়ার জন্য।
টোকাই প্রকল্পের ‘ক্লিন সাটুরিয়া ও গ্রিন সাটুরিয়া’র জন্য এসব গাড়ি তৈরি করা হলেও তা কোনো কাজে আসছে না, অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এক বছরে ময়লা-আবর্জনা নেওয়ার জন্য এক দিনও টোকাই গাড়ি আসেনি। যে প্রকল্প মানুষের উপকারে আসবে না, তা হাতে নেওয়ার চিন্তাভাবনা করা উচিত নয়।
স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ সজল হোসেনের ভাষ্য, অহেতুক প্রকল্প গ্রহণ করেছে। বাড়ির ময়লা-আবর্জনায় বিভিন্ন স্থানে ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। আরেক বাসিন্দা মো. লুৎফুর রহমানের ভাষ্য, ডাম্পিং স্টেশন না করায় টোকাই প্রকল্প কাজে আসছে না। ময়লা-আবর্জনা নদী ও সড়কের পাশে ফেলায় দুর্গন্ধ ছড়ানোর পাশাপাশি পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
সরকারি কোষাগারের টাকা খরচ হলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের কোনো উপকারে আসেনি বলে মনে করেন দরগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলিনূর বকস রতন। তাঁর ভাষ্য, অহেতুক টাকা অপচয় করা হয়েছে। ইউএনও মো. ইকবাল হোসেন বলেন, ‘দুই মাস হলো সাটুরিয়ায় যোগদান করেছি। এ বিষয়ে আমার তেমন কিছু জানা নেই। টোকাই প্রকল্প কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, সে জন্য খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ট ক ই প রকল প প রকল প র এ প রকল প এক বছর র জন য র ময়ল উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি বাস্তবায়নে কমিটি 

সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি (গভর্নেন্স পারফরমেন্স মনিটরিং সিস্টেম- জিপিএমএস)’ বাস্তবায়নে অর্থ উপদেষ্টা  সালেহউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি করে তিন সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’ গঠন করেছে সরকার। 

সম্প্রতি এই কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

কমিটিতে বাকি দুই সদস্য হলেন, পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ও খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সরকারি কাজের জবাবদিহিতা, দক্ষতা ও জনকল্যাণ নিশ্চিতে প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজের মূল্যায়নের নতুন পদ্ধতি চালু হয়েছে। বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির (এপিএ) পরিবর্তে নতুন সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি (জিপিএমএস) চালু করা হয়েছে। এই জিপিএমএস বাস্তবায়নে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’ গঠন করা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব বা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, অর্থ সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার), বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব কমিটিকে সহায়তা করবেন। তাছাড়া, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে।

এ কমিটি জিপিএমএস বাস্তবায়নের বিষয়ে সার্বিক দিক-নির্দেশনা দেবে। মন্ত্রণালয় বা বিভাগের জিপিএমএসে সেকশন ১-এর আওতায় প্রস্তুত করা পরিকল্পনা অনুমোদন দেবে এবং অর্থবছর শুরুর আগে মন্ত্রণালয় বা বিভাগের জিপিএমএস পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চূড়ান্ত করবে এ কমিটি।

এছাড়া, প্রতি অর্থবছর শেষে মন্ত্রণালয় বা বিভাগের জিপিএমএসের সার্বিক মূল্যায়ন পর্যালোচনা করে সুপারিশ দেবে। জিপিএমএস বিষয়ে সরকারের দেওয়া অন্য যেকোনো দায়িত্ব পালন করবে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বেসরকারি ঋণ তলানিতে, তবে ঋণপত্র খোলায় গতি
  • টানা দুই মাস আড়াই বিলিয়ন ডলারের বেশি প্রবাসী আয় এসেছে
  • তিন মাসে গৃহকর আদায় কমেছে ৩০ কোটি টাকা
  • জুলাই–সেপ্টেম্বরে ঋণছাড়ে এগিয়ে বিশ্বব্যাংক ও রাশিয়া, কোনো অর্থ দেয়নি চীন
  • সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি বাস্তবায়নে কমিটি 
  • ২৯ দিনে প্রবাসী আয় ২৪৩ কোটি ডলার