Samakal:
2025-09-18@03:35:09 GMT

‘টোকাই’ এখন গ্যারেজে বন্দি

Published: 18th, February 2025 GMT

‘টোকাই’ এখন গ্যারেজে বন্দি

সাটুরিয়ার গাজীখালী নদীর দুই পাশে গড়ে উঠেছে অনেক প্রতিষ্ঠান ও আবাসিক ভবন। এসব স্থাপনার ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য ‘টোকাই প্রকল্প’ হাতে নেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী, সরকারি কোষাগার থেকে ২৫ লাখ টাকা খরচ করে দুটি গাড়ি কেনা হয় এক বছর আগে। দুই ‘টোকাই’ এখন গ্যারেজে বন্দি। এর সঙ্গে ৯টি ছোট ব্যাটারিচালিত যানও ইউনিয়নে পড়ে আছে।
ময়লা-আবর্জনা ফেলার স্থায়ী ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণ না করে এভাবে লাখ লাখ টাকা অপচয় করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে টোকাই প্রকল্পের নামে দুটি ডাম্পিং গাড়ি ক্রয় করা হয় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে। এতে ব্যয় করা হয় ২৫ লাখ টাকার বেশি। এ প্রকল্পে সহযোগিতা করার জন্য ইউনিয়নগুলোয় ব্যয় করা হয় আরও ১০ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
ময়লা-আবর্জনা ফেলার ডাম্পিং স্টেশন না করে গাড়ি কেনা হয়েছে বলে জানান সাটুরিয়া সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো.

আনোয়ার হোসেন পিন্টু। তিনি বলেন, এক বছর আগে দুটি গাড়ি কেনার পর প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে ব্যাটারিচালিত ট্রলি ভ্যান কিনেছিল। ডাম্পিং স্টেশন তৈরি না করে এ প্রকল্প হাতে নেওয়া ঠিক হয়নি বলে মত তাঁর।
উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ক্লিন ও গ্রিন সাটুরিয়া নির্মাণে উপজেলা উন্নয়ন বরাদ্দ (এডিপি) থেকে টোকাই ‘প্রকল্প’ নেওয়া হয়। দরপত্রের মাধ্যমে কোনো গাড়ির ক্রয়-বিক্রয় প্রতিষ্ঠান কাজটি পায়নি। কাজটি পেয়েছিল রাস্তা নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আর কে এন্টারপ্রাইজ।
জানা গেছে, উপজেলা প্রশাসন কিছু ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহ করে গাড়িতে ভরে এনেছিল বালিয়াটি ঈশ্বরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে। গত ৫ জুন এর উদ্বোধন করেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক রেহেনা আক্তার। এর পর থেকে গাড়িগুলো গ্যারেজে বন্দি রয়েছে। প্রকল্পটি গ্রহণ করেছিলেন তৎকালীন ইউএনও শান্তা রহমান।
উপজেলার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য ইউপি চেয়ারম্যানরা ডাম্পিং স্টেশন করার জন্য প্রস্তাব করেন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মাসিক সমন্বয় সভায় এর অনুমোদন দেয় উপজেলা পরিষদ। কিন্তু ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণ না করে ২৫ লাখ টাকা দিয়ে কেনা হয় দুটি গাড়ি। এক বছর ধরে সেগুলো গ্যারেজে পড়ে রয়েছে। এতে গাড়ির যন্ত্রাংশ ও ব্যাটারি নষ্ট হচ্ছে।
সাটুরিয়া সদরে দুই শতাধিক আবাসিক ভবন রয়েছে। এসব ভবনের ময়লা-আবর্জনা গাজীখালী নদীতে ফেলা হয়। ফলে নদীটি ভরাট হয়ে নাব্য হারাচ্ছে। নদী বাঁচাতে এই উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা এক বছরেও আলোর মুখ দেখেনি। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ কয়েকটি ক্লিনিকের ময়লা-আবর্জনা যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে। জনবহুল স্থান থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করে রিসাইকেল করে বিভিন্ন পণ্য তৈরি করাও এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল। অভিযোগ উঠেছে, অহেতুক এ প্রকল্পে ব্যয় করা হয়েছে প্রায় ৩৬ লোখ টাকা। এটি কোনো কাজেই আসছে না।
সংশ্লিষ্টরা জানান, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য ভূমি উন্নয়ন কর থেকে দুই ভাগ টাকা ইউএনওর হিসাব নম্বরে জমা হয়। এর দুই ভাগের এক ভাগ টাকা ইউপি চেয়ারম্যানদের হিসাব নম্বরে দেওয়া হয়। সেই টাকায় চেয়ারম্যানরা প্রকল্প নেন। টোকাই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে ৯টি ইউনিয়নের 
প্রতিটিতে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার ব্যাটারিচালিত ভ্যান ট্রলি তৈরি করা হয় ময়লা-আবর্জনা আনা-নেওয়ার জন্য।
টোকাই প্রকল্পের ‘ক্লিন সাটুরিয়া ও গ্রিন সাটুরিয়া’র জন্য এসব গাড়ি তৈরি করা হলেও তা কোনো কাজে আসছে না, অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এক বছরে ময়লা-আবর্জনা নেওয়ার জন্য এক দিনও টোকাই গাড়ি আসেনি। যে প্রকল্প মানুষের উপকারে আসবে না, তা হাতে নেওয়ার চিন্তাভাবনা করা উচিত নয়।
স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ সজল হোসেনের ভাষ্য, অহেতুক প্রকল্প গ্রহণ করেছে। বাড়ির ময়লা-আবর্জনায় বিভিন্ন স্থানে ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। আরেক বাসিন্দা মো. লুৎফুর রহমানের ভাষ্য, ডাম্পিং স্টেশন না করায় টোকাই প্রকল্প কাজে আসছে না। ময়লা-আবর্জনা নদী ও সড়কের পাশে ফেলায় দুর্গন্ধ ছড়ানোর পাশাপাশি পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
সরকারি কোষাগারের টাকা খরচ হলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের কোনো উপকারে আসেনি বলে মনে করেন দরগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলিনূর বকস রতন। তাঁর ভাষ্য, অহেতুক টাকা অপচয় করা হয়েছে। ইউএনও মো. ইকবাল হোসেন বলেন, ‘দুই মাস হলো সাটুরিয়ায় যোগদান করেছি। এ বিষয়ে আমার তেমন কিছু জানা নেই। টোকাই প্রকল্প কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, সে জন্য খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ট ক ই প রকল প প রকল প র এ প রকল প এক বছর র জন য র ময়ল উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ

‎পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি কোম্পানির সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও তা নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন না করায় সাত নিরীক্ষক (অডিটর) প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ বছরের জন্য অডিট এবং অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

সেইসঙ্গে ওই নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষকদের কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না, সেই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে তাদের শুনানিতে ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।

আরো পড়ুন:

সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি: ১১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা

পুঁজিবাজার উন্নয়নে ডিএসই ও ডিসিসিআইয়ের যৌথ সভা

‎গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে ৯৭৩তম কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ‎বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

‎সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক এ হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; রিংসাইন টেক্সটাইল লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক যথাক্রমে: আহমেদ অ্যান্ড আক্তার, মাহফেল হক অ্যান্ড কোং, আতা খান অ্যান্ড কোং এবং সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; আমান কটন ফাইব্রাস লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক ইসলাম কাজী শফিক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস এবং ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৮ ও ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক মাহফেল হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন করেনি। 

এ সকল নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষককে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানি, সকল ধরনের বিনিয়োগ স্কিম (যথা- মিউচ্যুয়াল ফান্ড, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ও এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড) এবং পুঁজিবাজারে মধ্যস্থতাকারী সকল প্রতিষ্ঠানের অডিট ও অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রম পরিচালনার উপর নিষেধাজ্ঞা তথা পাঁচ বছরের জন্য অডিট ও অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণে কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে শুনানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

‎ঢাকা/এনটি/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ
  • সেপ্টেম্বরের ১৬ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ২০ হাজার কোটি টাকা
  • বাংলাদেশ ব্যাংক এক দিনে ২৬ ব্যাংক থেকে ৩৫ কোটি ডলার কিনল কেন