ব্রাজিলের আমাজনের একটি শহরে বিশাল সিঙ্কহোলের সৃষ্টি হয়েছে। এতে হাজারো মানুষের ঘরবাড়ি ধ্বংসের ঝুঁকিতে রয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, স্থানীয় সরকার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এনডিটিভি। 

স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমাজনের মারানহোর বুরিতিকুপু নামে ওই শহরটির বেশ কয়েকটি ভবন ইতিমধ্যে ধ্বংস হয়ে গেছে। শহরটিতে মোট ৫৫ হাজার মানুষের বাস রয়েছে। এরমধ্যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে ১ হাজার ২০০ মানুষের বাড়ি বিশাল সিঙ্কহোলে পড়ে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।

আরো পড়ুন:

ব্রাজিলের ৬ গোল হজমে শুরু, শিরোপা জয়ে শেষ 

ব্রাজিলে আবারো বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ২

স্থানীয় সরকার জানিয়েছে, বুরিতিকুপু শহর দীর্ঘদিন ধরেই সিঙ্কহোল সমস্যার সম্মুখীন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সিঙ্কহোলগুলোর আকার বড় হয়ে আবাসিক এলাকাগুলোর দিকে এগোচ্ছে। শহরে ভবন ধসের ঘটনা বাড়তে থাকায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে বালুকাময় মাটি নরম হয়ে এসব সিঙ্কহোল সৃষ্টি হয়েছে। মারানহাউ ফেডারেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোলবিদ মার্সিলিনো ফারিয়াস জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সময়ে ভারী বর্ষণের ফলে পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। পাশাপাশি বন উজাড় করে অপরিকল্পিত নির্মাণকাজও ভূমিধসের জন্য দায়ী। গত ৩০ বছর ধরে এই সমস্যাটি থাকলেও, এবারের পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ।

বুরিতিকুপুর ৬৫ বছর বয়সী বাসিন্দা অ্যান্তোনিয়া দোস অ্যাঞ্জস জানিয়েছেন, শহরবাসীরা আতঙ্কিত, কারণ কেউ জানে না কখন কোথায় মাটির নিচে ধস নামবে।

শহরের পাবলিক ওয়ার্কস বিভাগের প্রধান লুকাস কোনসিকাও স্বীকার করেছেন যে, জটিল সিঙ্কহোল পরিস্থিতির সমাধান খুঁজে বের করার ক্ষমতা পৌরসভার স্পষ্টতই নেই।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর স থ ত

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে

সুদানের এল-ফাশের শহর ও এর আশপাশের বিভিন্ন স্থানে গণহত্যা চলছে। কৃত্রিম ভূ–উপগ্রহের ছবি বিশ্লেষণ করে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন দাবি করেছেন। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানকার পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেছেন।

২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির আধা সামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সসের (আরএসএফ) লড়াই চলছে। গত রোববার তারা এল-ফাশের দখল করে। এর মাধ্যমে প্রায় দেড় বছরের দীর্ঘ অবরোধের পর পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে সেনাবাহিনীর সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটিটিও ছিনিয়ে নেয় তারা।

শহরটি পতনের পর থেকে সেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যা, যৌন সহিংসতা, ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাট এবং অপহরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেখানকার যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।

এল-ফাশের থেকে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী তাওইলা শহরে জীবিত বেঁচে ফেরা কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে এএফপির সাংবাদিক কথা বলেছেন। সেখানে গণহত্যা হয়েছে জানিয়ে তাঁরা বলেন, শহরটিতে মা-বাবার সামনেই শিশুদের গুলি করা হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে পালানোর সময় সাধারণ মানুষকে মারধর করে তাঁদের মূল্যবান সামগ্রী লুট করা হয়েছে।

পাঁচ সন্তানের মা হায়াত শহর থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের একজন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে থাকা তরুণদের আসার পথেই আধা সামরিক বাহিনী থামিয়ে দেয়। আমরা জানি না, তাদের কী হয়েছে।’

ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব বলেছে, গত শুক্রবার পাওয়া কৃত্রিম উপগ্রহের ছবিতে ‘বড় ধরনের কোনো জমায়েত চোখে পড়েনি।’ এ কারণে মনে করা হচ্ছে, সেখানকার জনগণের বড় একটি অংশ হয় ‘মারা গেছে, বন্দী হয়েছে কিংবা লুকিয়ে আছে।’ সেখানে গণহত্যা অব্যাহত থাকার বিভিন্ন ইঙ্গিত স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, আল-ফাশের থেকে এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ পালিয়েছে। এখনো কয়েক হাজার মানুষ শহরটিতে আটকা পড়েছে। আরএসএফের সর্বশেষ হামলার আগে সেখানে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ বসবাস করত।

শনিবার বাহরাইনে এক সম্মেলনে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ভাডেফুল বলেন, সুদান একটি ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। সেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। আরএসএফ নাগরিকদের সুরক্ষার অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু তাদের এই কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুদানের এল-ফাশের শহরে ‘চরম বিপদে’ বাসিন্দারা: ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস
  • সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে
  • সুদানের রাস্তায় শত শত মরদেহ, পালিয়েছে ৬০ হাজার বাসিন্দা