আমাজনের এক শহরে বিশাল সিঙ্কহোল, জরুরি অবস্থা জারি
Published: 22nd, February 2025 GMT
ব্রাজিলের আমাজনের একটি শহরে বিশাল সিঙ্কহোলের সৃষ্টি হয়েছে। এতে হাজারো মানুষের ঘরবাড়ি ধ্বংসের ঝুঁকিতে রয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, স্থানীয় সরকার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এনডিটিভি।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমাজনের মারানহোর বুরিতিকুপু নামে ওই শহরটির বেশ কয়েকটি ভবন ইতিমধ্যে ধ্বংস হয়ে গেছে। শহরটিতে মোট ৫৫ হাজার মানুষের বাস রয়েছে। এরমধ্যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে ১ হাজার ২০০ মানুষের বাড়ি বিশাল সিঙ্কহোলে পড়ে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।
আরো পড়ুন:
ব্রাজিলের ৬ গোল হজমে শুরু, শিরোপা জয়ে শেষ
ব্রাজিলে আবারো বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ২
স্থানীয় সরকার জানিয়েছে, বুরিতিকুপু শহর দীর্ঘদিন ধরেই সিঙ্কহোল সমস্যার সম্মুখীন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সিঙ্কহোলগুলোর আকার বড় হয়ে আবাসিক এলাকাগুলোর দিকে এগোচ্ছে। শহরে ভবন ধসের ঘটনা বাড়তে থাকায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে বালুকাময় মাটি নরম হয়ে এসব সিঙ্কহোল সৃষ্টি হয়েছে। মারানহাউ ফেডারেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোলবিদ মার্সিলিনো ফারিয়াস জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সময়ে ভারী বর্ষণের ফলে পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। পাশাপাশি বন উজাড় করে অপরিকল্পিত নির্মাণকাজও ভূমিধসের জন্য দায়ী। গত ৩০ বছর ধরে এই সমস্যাটি থাকলেও, এবারের পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ।
বুরিতিকুপুর ৬৫ বছর বয়সী বাসিন্দা অ্যান্তোনিয়া দোস অ্যাঞ্জস জানিয়েছেন, শহরবাসীরা আতঙ্কিত, কারণ কেউ জানে না কখন কোথায় মাটির নিচে ধস নামবে।
শহরের পাবলিক ওয়ার্কস বিভাগের প্রধান লুকাস কোনসিকাও স্বীকার করেছেন যে, জটিল সিঙ্কহোল পরিস্থিতির সমাধান খুঁজে বের করার ক্ষমতা পৌরসভার স্পষ্টতই নেই।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলের হাইফা কেন গুরুত্বপূর্ণ, কেন ইরানের নিশানায় শহরটি
ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় শহর হাইফা। শহরটি নিশানা করে গতকাল শনিবার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার খবর ওয়াশিংটন পোস্টসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এসেছে। খবরে হাইফায় বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাওয়ার তথ্যও জানানো হয়।
খবরে আরও বলা হয়, হাইফার উত্তরের কিছু শহরেও গতকাল ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ইসরায়েল-ইরানের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছে। বদলা হিসেবে হাইফাসহ ইসরায়েল বিভিন্ন এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র-ড্রোন হামলা চালানোর কথা জানিয়েছে ইরান।
হাইফায় ইরানের হামলা নিয়ে নানা ধরনের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দাবি করা হয়, গতকাল ১০০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের দিকে ছোড়া হয়, যার লক্ষ্য ছিল হাইফা ও তেল আবিব।
চ্যানেল ১২, টাইমস অব ইসরায়েলসহ ইসরায়েলি গণমাধ্যমে হাইফায় বিস্ফোরণ, বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের খবর দিয়ে বলা হয়েছে, এগুলো ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রভাব।
অন্যদিকে বিবিসি প্রথমে বলেছিল, হাইফায় ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। সেখানে পাঁচজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পরে আবার বিবিসি বলে, হাইফায় ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত হানার খবরটি ঠিক নয়।
হাইফা ইসরায়েলের তৃতীয় বৃহত্তম শহর। কিন্তু ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের উপকূলীয় এ শহরটি কেন গুরুত্বপূর্ণ, কেনইবা ইরানের লক্ষ্যবস্তু হাইফা?
ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, হাইফায় ইসরায়েলের একটি গুরুত্বপূর্ণ নৌঘাঁটি আছে। এ ছাড়া এখানে বেশ কিছু তেল শোধনাগার ও বহু রাসায়নিক কারখানা আছে।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় তেল শোধনাগার হাইফা এলাকায় অবস্থিত।
হাইফা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে একটি বন্দর হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, হাইফা ইসরায়েলের প্রধান গভীর সমুদ্রবন্দর। ইসরায়েলের সামুদ্রিক বাণিজ্যের একটি বড় অংশ এখান থেকে পরিচালিত হয়। ইসরায়েলের মোট পণ্য পরিবহনের প্রায় অর্ধেকই এই বন্দর দিয়ে পরিবাহিত হয়।
বাণিজ্যিক কার্যক্রম নির্বিঘ্ন রাখতে হাইফায় আয়রন ডোম স্থাপনসহ নানা প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা ইসরায়েল গ্রহণ করে রেখেছে বলে জানায় রয়টার্স।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়, হাইফায় অবস্থিত নৌঘাঁটি, তেল শোধনাগার ও রাসায়নিক কারখানাগুলো তেল আবিবের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত।
হাইফায় ইরানি হামলা প্রত্যাশিত ছিল বলে উল্লেখ করেছে আল–জাজিরা। কারণ হিসেবে বলা হয়, এই শহরে গুরুত্বপূর্ণ গ্যাস অবকাঠামো রয়েছে।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশেষ করে হাইফায় ইরানের হামলা এই ইঙ্গিত দেয় যে তেহরান তার অঙ্গীকার অনুযায়ী পাল্টা জবাব দিচ্ছে। কারণ, তেহরান বলেছিল, ইসরায়েল যদি ইরানের বেসামরিক অবকাঠামো বা জ্বালানি স্থাপনায় হামলা চালায়, তাহলে তারাও ঠিক একই রকম জবাব দেবে।