জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় চাচাতো ভাইকে কুপিয়ে হাত-পা বিচ্ছিন্ন করে হত্যার ঘটনার মামলায় প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর থানার হরিপুল এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) শাখার পুলিশ।

গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম মো. আসাদুজ্জামান ওরফে আপেল (৩৮)। তিনি উপজেলার তারাকান্দি গ্রামের মৃত আনোয়ার হোসেনের ছেলে। চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি দুপুরে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে মো.

আসাদুজ্জামান তাঁর চাচাতো ভাই মো. আতাউর রহমানকে কুপিয়ে হাত-পা বিচ্ছিন্ন করে হত্যা করেন। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনার পর থেকে আসাদুজ্জামান পলাতক ছিলেন।

আজ রোববার দুপুরে জামালপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেন পুলিশ সুপার সৈয়দ রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে আতাউর রহমান ও তাঁর পরিবারের ওপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে আসাদুজ্জামান ও তাঁর লোকজন। আসাদুজ্জামান দা দিয়ে কুপিয়ে তাঁর ডান হাত ও ডান পা বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ ছাড়া আসাদুজ্জামানের দায়ের আঘাতে গুরুতর আহত হন আতাউরের মা আসমা বেগম ও তাঁর স্ত্রী মুক্তা বেগম। হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পরই তিনি এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। প্রযুক্তির মাধ্যমে তাঁর অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর থানার হরিপুল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের বড় ভাই আল আমিন বাদী হয়ে সরিষাবাড়ী থানায় ১০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলায় মো. আসাদুজ্জামানকে প্রধান আসামি করা হয়। ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি জেলাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ঘটনার পরপরই দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আরও ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর ব চ ছ ন ন কর র ঘটন ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ