রোনালদোই সেরা বেনজেমার চোখে, তবে ক্রিস্টিয়ানো নন
Published: 24th, February 2025 GMT
রিয়াল মাদ্রিদে তাঁরা একসঙ্গে ৯ মৌসুম কাটিয়েছেন। সে সময় রিয়ালে রোনালদো যদি হন ‘ব্যাটম্যান’, বেনজেমাকে তাঁর সহকারী ‘রবিন’ মনে করা হতো। আসলে রোনালদোকে গোল বানিয়ে দেওয়াই ছিল বেনজেমার মূল দায়িত্ব কি না, তাই। আর রোনালদোর ক্যারিয়ারে সেরা সময়ও কেটেছে ঠিক তখন। রিয়ালে সোনালি সময় বিচারে কিছুদিন আগে করা রোনালদোর দাবির সঙ্গে সহমত প্রকাশ করতেই পারতেন বেনজেমা। কিন্তু তা না করে ফরাসি তারকা হাঁটলেন অন্য পথে। যে পথের শেষেও আছেন আরেক রোনালদো!
আরও পড়ুনব্যালন ডি’অরের পথে সালাহ, প্রিমিয়ার লিগ জয়ের পথে লিভারপুল১১ ঘণ্টা আগেঘটনা খুলে বলা যাক। এ মাসের শুরুতে স্প্যানিশ টিভি শো ‘এল চিরিনগুইতো’য় দেওয়া সাক্ষাৎকারে আল নাসর তারকা রোনালদো দাবি করেন, ‘আমি সর্বকালের সেরা কমপ্লিট খেলোয়াড়। ক্রিস্টিয়ানো পরিপূর্ণ নয়, বলাটা হবে মিথ্যার নামান্তর।’ পর্তুগিজ কিংবদন্তি আরও দাবি করেন, ‘আমি এতই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ যে কখনো কখনো নিজের অর্জন ভুলে যাই। কারণ, প্রতিবছর আরও ভালো করার প্রেরণা পাই এতে। আমার মতে, অন্যদের সঙ্গে এখানেই আমার পার্থক্য। আমার জায়গায় অন্য কেউ হলে ১০ বছর আগেই ফুটবল ছেড়ে যেত। আমি আলাদা। এ নিয়ে তর্কের সুযোগ নেই।’
কিন্তু রোনালদোর এই মন্তব্যের পরই শুরু হয় তর্ক–বিতর্ক। পক্ষে–বিপক্ষে অনেকেই বিভিন্ন মন্তব্য করেন, এখনো করছেন। যেমন রোনালদোরই সাবেক রিয়াল সতীর্থ বেনজেমা। ঘুরেফিরে প্রসঙ্গটি তাঁর কাছেও তোলা হয়েছে। পর্তুগিজ কিংবদন্তিকেই বেনজেমা সর্বকালের সেরা মনে করেন কি না?
টিএনটি স্পোর্টস ব্রাজিলকে বেনজেমা এর উত্তরে বলেছেন, ‘যার যা খুশি বলতে পারে। সে নিজেকে ইতিহাসের সেরা মনে করতেই পারে.
পর্তুগিজ তারকা ২০১৮ সালে রিয়াল ছেড়ে জুভেন্টাস ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ঘুরে এখন সৌদি প্রো লিগের দল আল নাসরে। বেনজেমাও ২০২৩ সালে রিয়াল ছেড়ে পাড়ি জমান সৌদি ফুটবলে ক্লাব আল ইত্তিহাদে। রিয়ালে গোল করায় তাঁদের ওপরে আর কেউ নেই। রোনালদো ৪৫০ গোল করে শীর্ষে, বেনজেমা ৩৫৪ গোল নিয়ে দ্বিতীয়। বার্নাব্যুর ৯ বছরে দুজনে মিলে রিয়ালকে উপহার দিয়েছেন মোট ৮০৪ গোল, জিতেছেন ১৬টি ট্রফি। রিয়ালের জার্সিতে একসঙ্গে খেলেছেন ৩৪২ ম্যাচ, আক্রমণভাগে এই জুটির কাছ থেকে গোল এসেছে ৭৬টি। ২০১৩ সালে গ্যারেথ বেল রিয়ালে যোগ দেওয়ার পর তাঁরা তিনজন মিলে ইউরোপে অন্যতম ভয়ংকর ‘বিবিসি’ আক্রমণভাগ গড়েছিলেন।
৩৭ বছর বয়সী বেনজেমার শৈশবের আদর্শ ব্রাজিলের বিশ্বকাপজয়ী সাবেক স্ট্রাইকার রোনালদো নাজারিও। তাঁকে নিয়ে মুগ্ধতার কথা অনেকবারই বলেছেন বেনজেমা। ব্রাজিলের এই রোনালদোও একসময় খেলেছেন রিয়ালে। ২০২১ সালে রোনালদোকে নিয়ে বিইন স্পোর্টসে বেনজেমা বলেছিলেন, ‘আমি সৌভাগ্যবান যে মাদ্রিদে তাঁর সঙ্গে দেখা হয়েছে। তিনি আমার রোল মডেল ছিলেন। এখনো আছেন।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৭ উপাচার্যের অংশগ্রহণে গোবিপ্রবিতে শিক্ষা সমাপনী
গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গোবিপ্রবি) নবম ব্যাচের (নবনীতক ৯) শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষা সমাপনী-২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীদের বিদায় বেলায় এক মঞ্চে আসীন হন দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতিমান সাত উপাচার্য।
বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুর ১২টায় একাডেমিক ভবন প্রাঙ্গণে আনন্দঘন পরিবেশে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর ছাড়াও অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী, খুলনা কৃষি বিশ্বিবদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল আহসান, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী, পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এসএম আব্দুল আওয়াল, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আতিয়ার রহমান ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুসলেহ উদ্দিন তারেক।
আরো পড়ুন:
নতুনবাজারের সেই রনির বুলেটের যন্ত্রণা আজো থামেনি
শিশু ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা
এক মঞ্চে একইসঙ্গে এতজন উপাচার্যকে পেয়ে সমাপনী ব্যাচসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “এভাবে একসঙ্গে পুরো সেশনের শিক্ষা সমাপনী আয়োজনের আইডিয়াটি অত্যন্ত চমৎকার। এতে করে একটি ব্যাচের একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে প্রবেশ ঘটে। যেখানে সবার একসঙ্গে পরীক্ষা হয়, রেজাল্ট প্রকাশ হয় এবং কোনো সেশন জট থাকে না। আমি এই আইডিয়াটি আমার নিজ বিশ্ববিদ্যালয়েও বাস্তবায়নের চেষ্টা করব।”
খুলনা কৃষি বিশ্বিবদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল আহসান বলেন, “আমরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগণ এখানে এসেছি সংহতি জানানোর জন্য। আমি নবম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের জীবনে সফলতা কামনা করছি।”
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, “শিক্ষার্থীদের বিসিএস দেওয়া, বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করা বা ব্যবসা করার লক্ষ্য থাকে। তবে জীবনে কোনো না কোনো কিছু করতেই হবে। এক্ষেত্রে অবসর বলে কোনো শব্দ থাকা উচিত নয়।”
পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, “আমি যখন দেশের বাইরে পড়াশোনা করতাম, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে আমি কখনোই দেখিনি। আর বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্চে কখনো একসঙ্গে সাতজন উপাচার্যকেও বসতে দেখিনি, এটা অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর করে দেখিয়েছেন।”
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুল আওয়াল বলেন, “আমরা যদি আন্তর্জাতিক পরিপ্রেক্ষিতে চিন্তা করি, আমাদের চাকরি খোঁজার পাশাপাশি এমন কিছু করার মানসিকতা রাখতে হবে, যা দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে।”
রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আতিয়ার রহমান বলেন, “শিক্ষা সমাপনী মানেই সব সম্পর্ক ছিন্ন করা নয়। বিশ্বে এমন অনেক নজির আছে, যেখানে অ্যালামনাই থেকে উপাচার্য নিয়োগ হয়েছে। তাই নিজেকে বিস্তৃত পরিসরে মেলে ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ উজ্জ্বল করার দায়িত্ব নিতে হবে।”
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুসলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “নিজেকে চেনাই সবচেয়ে বড় শিক্ষা। আর শিক্ষার্থীদের কর্মজীবনই বলে দেবে, তারা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে কতটা জ্ঞান অর্জন করেছে।”
প্রধান অতিথিরি বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর আগত উপাচার্যদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, “শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্যই আমাদের এই প্রয়াস। একইসঙ্গে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি তুলে ধরাও আমাদের লক্ষ্য। আমরা জানিয়ে দিতে চাই, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চায় এবং অচিরে দাঁড়াবেই।”
তিনি বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে ইউজিসির দুইটি হিট প্রকল্প পেয়েছি এবং ভবিষ্যতে আরো পাব। আমরা আশা করছি, বি ক্যাটাগরি থেকে আগামী অর্থবছরের আগেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়টি এ ক্যাটাগরিতে উন্নীত হবে।”
গোবিপ্রবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সোহেল হাসানের সভাপতিত্বে এতে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাজমুল আহসানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক, সব অনুষদের ডিন, বিভাগীয় সভাপতি ও প্রাধ্যক্ষগণ, দপ্তর প্রধানগণ, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, জুলাই শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করা হয়।
শিক্ষা সমাপনী উপলক্ষে বুধবার ছাত্রদের কালার ফেস্ট ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা এবং আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যায় একটি কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছে।
ঢাকা/রিশাদ/মেহেদী