বঙ্গবন্ধু সেতু এখন যমুনা সেতু, টানেল থেকেও বাদ বঙ্গবন্ধু
Published: 26th, February 2025 GMT
একটি সেতু ও টানেলের নাম পরিবর্তন করেছে সরকার। উত্তরবঙ্গের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনকারী বঙ্গবন্ধু সেতুর নাম বদলে করা হয়েছে যমুনা সেতু। এটি দেশের প্রথম বড় সেতু এবং তা টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জের মধ্যে যমুনা নদীতে নির্মিত।
জাতীয় পার্টি, বিএনপি ও আওয়ামী লীগ—তিন সরকারই যমুনা সেতু প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ভূমিকা রেখেছে। এইচ এম এরশাদের আমলে প্রকল্পটি নেওয়ার সময় এর নাম ছিল যমুনা বহুমুখী সেতু। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন প্রথম বিএনপির সরকারের আমলেও একই নাম বহাল থাকে। উদ্বোধনের পর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার এটির নাম বঙ্গবন্ধু সেতু করে। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে নাম পরিবর্তন করে যমুনা বহুমুখী সেতু ফিরিয়ে আনা হয়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের সরকার এসে আবার বঙ্গবন্ধু সেতু নামকরণ করে। এবার অন্তর্বর্তী সরকার শুরুর নামে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অন্যদিকে চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত দেশের প্রথম টানেলের নামকরণ করা হয়েছে কর্ণফুলী টানেল। এটির নাম আগে ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল।
আজ বুধবার সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে নতুন নামকরণের এ আদেশ জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সেতু বিভাগের আওতাধীন সেতু কর্তৃপক্ষের নির্মিত দুটি স্থাপনার নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। অবিলম্বে এ আদেশ কার্যকর হবে।
এর আগে ২৪ ফেব্রুয়ারি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতাধীন ১২টি মহাসড়ক ও সেতুর নাম পরিবর্তন করে অন্তর্বর্তী সরকার। এগুলোর মধ্যে চারটি মহাসড়ক, আটটি সেতু রয়েছে। সব কটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কিংবা তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে নামকরণ করেছিল বিগত আওয়ামী লীগ সরকার।
যমুনা নদীর ওপর নতুন একটি রেলসেতু নির্মাণ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়নি। তবে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার এই সেতুর নামও দিয়েছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেলসেতু। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এটির নামকরণ করা হয়েছে যমুনা রেলসেতু।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচনের আগেই পাঁচ ব্যাংক এক হবে: গভর্নর
বেসরকারি খাতের পাঁচ ইসলামী ব্যাংককে একীভূত (মার্জার) করার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের সঙ্গে এই একীভূতকরণের কোনো সম্পর্ক নেই। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমরা আশা করি, আগামী সরকারও এ প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেবে। তবে নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা না করে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই পাঁচটি ইসলামী ব্যাংক একীভূত হবে।’
আজ রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর এ মন্তব্য করেন। এ সময় তিনি ব্যাংককর্মীদের আশ্বস্ত করেন, এই একীভূতকরণের ফলে কোনো কর্মীকে চাকরি হারাতে হবে না।
গভর্নর বলেন, কর্মীদের দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। প্রয়োজনে কিছু শাখা পুনর্বিন্যাস করা হবে। যেসব ব্যাংকের শাখা শহর এলাকায় বেশি, সেগুলোর কিছু শাখা গ্রামাঞ্চলে স্থানান্তরের উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।
এ সময় পাচার করা সম্পদ উদ্ধার করা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন গভর্নর। তিনি বলেন, ‘সম্পদ উদ্ধারের বিষয়টি একটি দীর্ঘমেয়াদি ও ধাপে ধাপে অগ্রসর হওয়ার প্রক্রিয়া। আদালতের চূড়ান্ত রায় ছাড়া এসব অর্থ উদ্ধার সম্ভব নয়। এ জন্য সুনির্দিষ্ট তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহ করে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে।
গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘আমরা চাই, আদালতের মাধ্যমে যাচাই হোক, আমাদের দাবি কতটা সঠিক। আদালতের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই অর্থ উদ্ধারে পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে।’
বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) পদ্ধতির কথা উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, আদালতের বাইরে সমঝোতার মাধ্যমে অর্থ ফেরতের পথও খোলা আছে। সে ক্ষেত্রে উভয় পক্ষের আইনজীবীরা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খুঁজবেন। সরকার যে পথ নির্ধারণ করবে, আদালত কিংবা এডিআর ও বাংলাদেশ ব্যাংক সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়ে আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবে।
গভর্নর আরও বলেন, দেশীয় সম্পদ উদ্ধারে দেশের আদালতে এবং বিদেশি সম্পদ উদ্ধারে সংশ্লিষ্ট দেশের আদালতে মামলা পরিচালনার প্রস্তুতি চলছে।