গভীর রাতে আবার ভূমিকম্প, অনুভূত হলো পঞ্চগড়ে
Published: 28th, February 2025 GMT
দেশে একদিনের ব্যবধানে আবার ভূমিকম্প অনুভূত হলো। এবারও এ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল বাংলাদেশের বাইরে, নেপালের কোদারি এলাকা। বাংলাদেশ থেকে অনেক দূরে হলেও এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে দেশের সর্বোত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩ টা ৬ মিনিটে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে সেখানে।
এর আগে গত বুধবার মধ্যরাতে সিলেটে এবং গত মঙ্গলবার রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণাকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুবায়েত কবীর আজ শুক্রবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল দিবাগত রাত ৩টা ৬ মিনিট ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থল নেপালের কোদারি এলাকা। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৫। এটি মাঝারি মাপের ভূমিকম্প হিসেবে বিবেচিত হয়।
রুবায়েত কবীর বলেন, ঢাকা থেকে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ৬৩০ কিলোমিটার। তাই দেশে ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার সম্ভাবনা কম।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায় মুঠোফোন প্রথম আলোকে বলেন, গভীর রাতে হঠাৎ ভূমিকম্পে সব কিছু কেঁপে ওঠায় অনেকেই আতঙ্কিত হয়েছেন। তবে সকাল পর্যন্ত কোন এলাকা থেকে ক্ষয়ক্ষতির খবর আসেনি।
ভূমিকম্প টের পেয়ে পঞ্চগড় শহরের মানুষদের মধ্যে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে উঠন। ঘুম থেকে জেড়ে উঠে অনেকে দৌড়াদৌড়ি করে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েন। তবে এঘটনায় কোথাও কোন ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায় নি।
গত বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ২টা ৫৫ মিনিট ৩৭ সেকেন্ডে সিলেট ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থল ভারতের আসাম রাজ্যের মরিগাঁও। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৩। এটি মাঝারি মাপের ভূমিকম্প হিসেবে বিবেচিত হয়।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। সকাল ৬টা ৪০ মিনিট ২৫ সেকেন্ডে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এই কম্পনের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ১। এটি মাঝারি ধরনের ভূমিকম্প ছিল। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ওডিশা–সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরই এই ভূমিকম্পের উৎসস্থল। ফলে বেশি প্রভাব পড়েছে উপকূলের জেলাগুলোতে। বাংলাদেশ থেকে উৎপত্তিস্থল ছিল ৫০১ কিলোমিটার দূরে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ভ ম কম প
এছাড়াও পড়ুন:
পদ্মা নদীতে টর্নেডো, পানির স্তম্ভ উঠে গেল আকাশের দিকে
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মা নদীতে টর্নেডোর উৎপত্তি হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা তিনটার দিকে উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের হাটখোলা এলাকায় পদ্মা নদীতে পানির স্তম্ভ আকাশের দিকে উঠে যায়। কয়েক মিনিট পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যায়। ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে জানতে কুমারখালী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার ও ঈশ্বরদী আবহাওয়া কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, ফেসবুকের ভিডিও থেকে বিষয়টি জানতে পেরেছেন।
এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল হাই সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন, পদ্মা নদীতে হাটখোলা এলাকা থেকে টর্নেডো ভেড়ামারার দিকে অগ্রসর হয়ে যায়। তবে এতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ১ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, পদ্মা নদীর মাঝ থেকে পানির স্তম্ভ আকাশের দিকে উঠে গেছে। অনেকটা ফানেলের আকার ধারণ করেছে। ওই দৃশ্য দেখে কয়েকজন দৌড়ে দূরে সরে যাচ্ছেন। ধীরে ধীরে পানির স্তম্ভ অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে।
কুমারখালী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের অপারেটর হারুন আর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমিও ফেসবুকে ভিডিওটি দেখেছি। তবে আবহাওয়া অফিসে এ ব্যাপারে কোনো তথ্য নেই।’ একইভাবে ঈশ্বরদী আবহাওয়া কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দীন বলেন, ‘স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে টর্নেডোর খবর পাওয়া গেছে। ভিডিওতে দেখেছি। এ ছাড়া কোনো তথ্য নেই।’
আবহাওয়াবিদদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাধারণত কোনো স্থানে নিম্নচাপ বা লঘুচাপ সৃষ্টি হলে ওই স্থানের উষ্ণ বাতাস ওপরের দিকে উঠে যায় এবং তখন ওই শূন্য জায়গা পূরণের জন্য চারদিকের শীতল বাতাস দ্রুত বেগে ধাবিত হয়। এভাবেই টর্নেডোর উৎপত্তি হয়। অল্প সময়ের জন্য তৈরি হওয়া এই ঘূর্ণিঝড় গতিপথে যা পড়ে, সবকিছু নিজের ভেতর টেনে নিতে থাকে এবং ক্রমেই শক্তিশালী হয়ে উঠতে থাকে। স্থলে হলে বা পানি ও ভূমি মিলে টর্নেডো তৈরি হলে সেটা অনেক সময় শক্তিশালী হয়ে ওঠে। শুধু পানির ওপরে টর্নেডো তৈরি হলে সেটা ততটা শক্তিশালী হয় না।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই টর্নেডো দেখতে সরু ফানেলের মতো হয়, যার চিকন অংশটি ভূমি স্পর্শ করে। যদিও টর্নেডো বিভিন্ন আকার কিংবা আকৃতির হতে পারে। টর্নেডো পানি টেনে নিয়ে ওপরে তুলে মেঘ তৈরি করে। পরে সেটাই আবার বৃষ্টি হয়ে নেমে আসে। অনেক সময় আকাশে পানি তুলে সেটা আবার ছেড়ে দেয়।