দুই ভাইয়ের সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে প্রাণ গেল প্রতিবেশীর
Published: 28th, February 2025 GMT
শৈলকুপায় জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই ভাইয়ের সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সফিকুল ইসলাম ওরফে সুফি শেখ নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও তিনজন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার সকালে উপজেলার ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের বন্দেখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় হামলাকারীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী।
আহতরা হলেন– মো.
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বন্দেখালী গ্রামের মোবারোক জোয়ার্দ্দারের ছেলে শাকেন জোয়ার্দ্দার ও ইদ্রিস আলী ওরফে ইদুর মধ্যে বাড়ির জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এ বিরোধকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে শাকেনের বাড়ির কলাগাছ কেটে জমি দখলের চেষ্টা করেন ইদু। একপর্যায়ে দুই ভাই দেশীয় অস্ত্র নিয়ে একে অপরের ওপর হামলা চালান। এ সময় সংঘর্ষ থামাতে ছুটে যান প্রতিবেশী সুফি শেখ। ঘটনার সময় ইদুর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হন তিনি।
স্বজনরা তাঁকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে দুপুর ১২টার দিকে তাঁর মৃত্যু ঘটে। ঘটনার পর ইদু পালানোর সময় তাঁকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন এলাকাবাসী।
শাকেন জোয়ার্দ্দারের মেয়ে সাবিনা খাতুন জানান, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রায়ই তাঁর চাচা ইদু তাদের ওপর চড়াও হন। শুক্রবারও তিনি একই ঘটনা ঘটাতে আসেন। এ সময় চাচার আক্রমণ থামাতে গিয়ে প্রতিবেশী সুফি শেখ ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার সময় তাঁর মৃত্যু হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুম খান বলেন, এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এ ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
যে কারণে ইরানের তেল ও গ্যাস স্থাপনায় হামলা
ইরানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তেল ও গ্যাস স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। মধ্যপ্রাচ্যের এ দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের মধ্যে কয়েক দশক ধরে বৈরিতা চলছে। তবে এবারই প্রথম ইসরায়েল ইরানে হামলা চালানোর পর দুই পক্ষ সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। দুই পক্ষে পাল্টাপাল্টি হামলা তীব্র হতে থাকায় বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের বাজারে অস্থিরতা তৈরির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গত শনিবার গভীর রাতে ইরানের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েল একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি ডিপোতে হামলা চালিয়েছে। একই সঙ্গে রাজধানী তেহরানে একটি তেল শোধনাগারেও আগুন ধরে যায়। সেখানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছেন।
বিশ্বের অন্যতম বড় গ্যাসক্ষেত্র ‘সাউথ পার্স’-এ ইসরায়েলের হামলায় আগুন লাগার পর ইরান আংশিকভাবে এ ক্ষেত্রে উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। ইরান কাতারের সঙ্গে ভাগাভাগি করে এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন করে থাকে।
ইসরায়েল নজিরবিহীনভাবে ইরানের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানোয় মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম আরও বাড়তে পারে। দুই দেশই একে অন্যের ভূখণ্ডে আরও বড় ধরনের হামলার হুমকি দিচ্ছে।
ইরান বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাস ও তৃতীয় বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল মজুতের অধিকারী– এই তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তথ্য প্রশাসনের (ইআইএ) দেওয়া। ফলে দেশটির জ্বালানি অবকাঠামো দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তু ছিল। তবে এতদিন ইসরায়েল ইরানের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা এড়িয়ে চলছিল, বিশেষ করে তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের চাপ ছিল। কিন্তু এবার তা বদলে গেছে।
গত শনিবার রাতে তেহরানের উত্তর-পশ্চিমে শাররান জ্বালানি ডিপো ও শহরের দক্ষিণে শার-রে অঞ্চলে অবস্থিত দেশের অন্যতম বৃহৎ তেল শোধনাগারে বড় ধরনের আগুন লাগে। এ ছাড়া ইরানের দক্ষিণ বুশেহর প্রদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় গ্যাসক্ষেত্র সাউথ পার্স লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল।
হামলায় সাউথ পার্সের ‘ফেইজ ১৪’ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে আগুন লাগে। ফলে এখানে দৈনিক ১ দশমিক ২ কোটি ঘনমিটার গ্যাস উৎপাদনকারী একটি অফশোর প্ল্যাটফর্ম বন্ধ হয়ে গেছে।
ইসরায়েলের হামলার প্রথম দিনে তেল ও গ্যাস স্থাপনা বাদ পড়লেও বাজারে তেলের দাম প্রায় ৯ শতাংশ বেড়ে যায়। সোমবার বিশ্ববাজারে তেলের দামে আরও বড় উল্লম্ফন হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্য ইনস্টিটিউটের গবেষক অ্যালান এয়ার বলেন, ইসরায়েল চায়, ইরানের ওপর হামলায় যুক্তরাষ্ট্রও জড়িয়ে পড়ুক। তাদের লক্ষ্য, ইরানের এই সরকারের পতন ঘটানো। ইরানের সামরিক প্রতিক্রিয়া ছাড়া উপায় নেই। কারণ, দেশের অভ্যন্তরে সম্মান রক্ষার বিষয় আছে। কিন্তু ইসরায়েলে বড় ধরনের ক্ষতি করার মতো ক্ষমতা ইরানের নেই। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইরানের বন্ধুর সংখ্যা কম। আর থাকলেও ইসরায়েল পরিষ্কারভাবে দেখিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক মতামতকে পাত্তা দেয় না– বলেন তিনি।