৪৫ বছর পর কারামুক্ত ৬৭ বছর বয়সী মুক্তিকামী নেতা নায়েল
Published: 28th, February 2025 GMT
বিশ্বে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় জেলে কাটান ফিলিস্তিনি নাগরিক নায়েল বারগুতি। ৬৭ বছর বয়সী নায়েল ইসরায়েলি কারাগারে বন্দি ছিলেন ৪৫ বছর। অবশেষে তাঁর মুক্তি মিলেছে। বৃহস্পতিবার তাঁকে মুক্তি দেয় ইসরায়েল।
নায়েল ৪৫ বছরের কারা জীবনের মধ্যে কারাগারে একটানা কাটে ৩৪ বছর। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় কারাগারে থাকা রাজনীতিবিদ হিসেবে ২০০৯ সালে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে তাঁর নাম উঠেছে। নায়েল বারগুতি ‘আবু আল-নুর’ নামে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মধ্যে পরিচিত। ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় ইসরায়েলের কারাগারে থাকা ব্যক্তিও তিনি।
রামাল্লার উত্তরে ফিলিস্তিনি গ্রাম কোবারে ১৯৫৭ সালের ২৩ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন নায়েল। ফিলিস্তিনে ব্রিটিশ ও ইসরায়েলি দখলদারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শামিল হওয়া ঐতিহ্যবাহী একটি পরিবারে জন্ম তাঁর। মাত্র ১০ বছর বয়সে ১৯৬৭ সালে গাজা উপত্যকা, পূর্ব জেরুজালেম ও পশ্চিম তীরের বাকি অংশের পাশাপাশি নিজ গ্রামে ইসরায়েলি আগ্রাসনের সাক্ষী হয়েছিলেন তিনি।
২০১১ সালে হামাস ‘গিলাদ শালিত’ বন্দি বিনিময়ের অংশ হিসেবে নায়েলকে মুক্ত করে এনেছিল। তবে সেই ছাড়া পাওয়া খুব বেশি দিনের জন্য হয়নি। ২০১৪ সালে তাঁকে আবার গ্রেপ্তার করে ইসরায়েল বাহিনী।
তাঁর পরিবার বলেছে, এবার মুক্তি পেয়ে ফিলিস্তিনের বাইরে নির্বাসিত জীবন কাটাতে সম্মত হয়েছেন নায়েল। এ শর্তে ইসরায়েল তাঁকে আবার গ্রেপ্তার হওয়া থেকে মুক্ত থাকার কিছুটা স্বাধীনতা দিয়েছে। মিডল ইস্ট আই।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
পদ্মা নদীর ভাঙনের ঝুঁকিতে দৌলতদিয়ার তিনটি ফেরিঘাট
পদ্মা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে ভাঙন। জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ভাঙন বেড়ে যাওয়ায় রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ার তিনটি ফেরিঘাট ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে। এ ছাড়া ঘাটসংলগ্ন বহু স্থাপনা রয়েছে ভাঙনের ঝুঁকিতে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা কার্যালয় সূত্র জানায়, দৌলতদিয়ার সাতটি ফেরিঘাটের মধ্যে ৩, ৪ ও ৭ নম্বর ঘাট সচল। ৬ নম্বর ঘাট থাকলেও এখনো সচল করা যায়নি। এ ছাড়া কয়েক বছর আগে ১, ২ ও ৫ নম্বর ঘাট নদীভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে।
গতকাল বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, দৌলতদিয়ার তিনটি ফেরিঘাটসহ মধ্যবর্তী এলাকার ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন রোধে ৪ ও ৭ নম্বর ফেরিঘাটে কিছু বালুর বস্তা ফেলা হয়েছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) সূত্র বলছে, দৌলতদিয়া ঘাটের প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন দেখা দেওয়ায় বর্তমানে সচল সব ঘাটই (৩, ৪ ও ৭ নম্বর) ভাঙনের ঝুঁকিতে। এর মধ্যে ৪ ও ৭ নম্বর ফেরিঘাট বেশি ঝুঁকিতে।
বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘ভাঙন দেখা দেওয়ায় ফেরিঘাট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বিআইডব্লিউটিএকে ত্বরিত ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছি। তিনটি ঘাট সচল থাকলেও ভাঙন আরও বৃদ্ধি পেলে যানবাহন ও যাত্রী পারাপার ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএ আরিচা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী নেপাল চন্দ্র দেবনাথ প্রথম আলোকে বলেন, জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ফেরিঘাটের দুই কিলোমিটারজুড়ে ভাঙন দেখা দেয়। ৪ ও ৭ নম্বর ঘাট বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় জরুরি মেরামত ও সংরক্ষণকাজের অংশ হিসেবে তিন দিনে প্রায় সাত শ বালুর বস্তা ফেলা হয়েছে। তবে ফেরিঘাটের মধ্যবর্তী এলাকায় বস্তা ফেলা হয়নি। প্রয়োজনীয় বরাদ্দ মিললে বাকি কাজ করা যাবে।
ঘাটসংলগ্ন এলাকায় ভাঙনের ঝুঁকি
ঘাটসংলগ্ন বাহিরচর ছাত্তার মেম্বার পাড়া, মজিদ মাতুব্বর পাড়া, শাহাদত মেম্বার পাড়া, বাজার, মসজিদ, স্কুলসহ একাধিক স্থাপনা ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। ভাঙন আতঙ্কে অনেকে স্থাপনা সরিয়ে নিয়েছেন। ছাত্তার মেম্বার পাড়ার চারটি পরিবার তাদের ঘর সরিয়ে নিয়েছে।
ছাত্তার মেম্বার পাড়ার নদীর পাড়ের শেষ বসতি আলতাফ মোল্লার পরিবারের। বসতভিটা রক্ষা করতে না পেরে দুটি ঘর অন্যত্র সরিয়ে ফেলছে পরিবারটি। আলতাফ মোল্লার স্ত্রী সূর্য বেগম ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘ছয়বার ভাঙনে ভিটামাটি হারায়ে এখানে আশ্রয় নিয়েছিলাম। এইবার ভাঙলে সাতবার হইবে। এখন কোথায় দাঁড়াব বলতে পারছি না। ঘর, টিনের চাল, জিনিসপত্র ভেঙে পাশে রাখছি। এখন কোথাও জায়গা হলে চলে যাব।’
স্থানীয় আলতাফ মোল্লা, শাহাদৎ প্রামাণিক ও ময়ান সরদার বলেন, ‘কয়েক দিনে যে হারে ভাঙছে, এভাবে ভাঙন চললে ফেরিঘাট, বাহিরচর ছাত্তার মেম্বার পাড়া, মজিদ মাতুব্বর পাড়া, শাহাদত মেম্বার পাড়াসহ অনেক স্থাপনা নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।’