নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম
Published: 1st, March 2025 GMT
নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ করতে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে রাজধানীর দনিয়া এলাকার বাসিন্দারা। এ সময়ের মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত না হলে রায়েরবাগের আঞ্চলিক অফিস ঘেরাও এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ব্লকেডের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (১ মার্চ) রাজধানীর কাজলা এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে মানববন্ধনে এ হুমকি দেওয়া হয়। বসতবাড়িতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের দাবিতে এ মানববন্ধন করেন দনিয়াবাসী।
মানববন্ধনে দনিয়ার বাসিন্দারা বলেন, “আজ দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আমরা এ মানববন্ধন করতে বাধ্য হয়েছি। আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ গ্যাস সরবরাহ-বিড়ম্বনায় ভুগছি। গ্যাস বিতরণ কর্তৃপক্ষের কাছে ধরনা দিয়েও কোনো কাজ হয়নি। কর্তৃপক্ষ সারা দিন আবাসিক সংযোগে গ্যাস বিতরণ বন্ধ রাখে। গভীর রাতে গ্যাস সরবরাহ করে, যা আমাদের কোনো কাজে আসে না।”
তারা বলেন, “আমরা নিয়মিত গ্যাস বিল পরিশোধ করে আসছি। দুঃখের বিষয়, গ্যাস সরবরাহ কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনার কারণে আমাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। আমরা এই ভোগান্তির অবসান চাই। গ্যাস বিতরণ কর্তৃপক্ষের এই অন্যায় কাজের প্রতিবাদ জানাচ্ছি, প্রতিকার আশা করছি। সামনে রমজান মাস, গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত না হলে ধর্ম-কর্ম পালন করা আমাদের পক্ষে কষ্টদায়ক হবে। অতএব, নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করে আমাদের বাঁচতে দিন। আমরা গ্যাস চাই, বিদ্যুৎ চাই; বাচাঁর মতো বাচঁতে চাই।”
বিদ্যুতের বিষয়ে তারা বলেন, “বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার ভোগান্তির আরেক খাত। আমরা বিদ্যুতের প্রি-পেইড মিটার ব্যবস্থা বাতিল করে পূর্বের বিলিং মিটার ব্যবস্থায় ফিরে যেতে চাই। এই প্রিপেইড মিটার আমাদের ২৪ ঘণ্টা আতঙ্কে রাখে। অবিলম্বে এই প্রি-পেইড ব্যবস্থা প্রত্যাহার করে পূর্বের ব্যবস্থায় যেতে চাই। আশা করি, জনদুর্ভোগ লাঘবে কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে আমাদেরকে শান্তিতে বসবাস করার সুযোগ দেবেন।”
দনিয়াবাসীর পক্ষে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা জাবের আব্দুল্লাহ খান, আমির হোসেন ও হারুন-অর-রশিদ।
ঢাকা/মামুন/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস থ আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাজ্য থেকে আসছে মাদক এমডিএমএ, গ্রেপ্তার ৫
‘খ’ শ্রেণির মাদক এমডিএমএ সরবরাহকারী চক্রের হোতা ও ডিজে পার্টির আয়োজকসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. জুবায়ের (২৮), জি এম প্রথিত সামস (২৫), আসিফ মাহবুব চৌধুরী (২৭), সৈয়দ শায়ান আহমেদ (২৪) ও অপূর্ব রায় (২৫)।
আরো পড়ুন:
যুক্তরাজ্যের প্রথম মুসলিম নারী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ
বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণ মানুষ তিনি
এ সময় তাদের কাছ থেকে যুক্তরাজ্য থেকে আমদানি করা ‘খ’ শ্রেণির মাদকদ্রব্য লালচে বর্ণের এমডিএমএ ট্যাবলেট ৩১৭ পিস, কুশ ১ কেজি ৬৭৬ গ্রাম, গাঁজা ২৫০ গ্রাম ও পাঁচটি কাচের বোতলে কেটামিন ৫০ (পঞ্চাশ) মিলিলিটার জব্দ করা হয়েছে। পাশাপাশি ৬টি মোবাইল ফোন ও একটি ল্যাপটপ এবং নগদ ৭ লাখ ১১ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. হাসান মারুফ।
হাসান মারুফ বলেন, “সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায় আসামি মো. জুবায়েরসহ স্বনামধন্য প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ুয়া প্রযুক্তি-দক্ষ, শিক্ষিত ও উচ্চবিত্ত শ্রেণির বেশ কয়েকজনের একটি চক্র গাঁজা, কুশ, এমডিএমএ ও কেটামিনসহ অন্যান্য আধুনিক মাদক পার্সেলযোগে উন্নত দেশ থেকে আমদানি করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন মহানগরে পার্টি ড্রাগ হিসেবে বিভিন্ন ডিজে পার্টিতে এবং অভিজাত সোসাইটিতে সরবরাহ করছে।”
তিনি বলেন, “সম্প্রতি মাদকের একটি চালান ডাকযোগে যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশে আসবে-এমন তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৪ সেপ্টেম্বর পল্টনের পুরাতন ডাক ভবনের বৈদেশিক ডাক শাখা থেকে যুক্তরাজ্য থেকে আগত এয়ার পার্সেল তল্লাশি করে একটি কাগজের কার্টনের ভেতর বিভিন্ন বিদেশি ব্র্যান্ডের চকলেটের নীচে লুকানো অবস্থায় একটি বাবল পেপারে মোড়ানো স্বচ্ছ পলি প্যাকেটে রক্ষিত লালচে বর্ণের এমডিএমএ ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। তারপর জব্দকৃত কাগজপত্র পর্যালোচনা ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পার্সেলটির প্রাপক, মাদক চক্রের অন্যতম হোতা মো. জুবায়েরের অবস্থান শনাক্ত করে ঢাকা উদ্যান এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।”
তিনি আরো বলেন, “জিজ্ঞাসাবাদে মো. জুবায়ের জানান এই পার্সেলটি যুক্তরাজ্য থেকে তার পূর্বপরিচিত অরণ্য ডাকযোগে অরণ্যের বন্ধু অপূর্ব রায়ের নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে পাঠিয়েছে। যা তাকে রিসিভ করে তার আরেক বন্ধু জি এম প্রথিত সামসের নিকট পৌঁছে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করে। এর বিনিময়ে তাকে ৫০ হাজার টাকা দেবে বলে জানায়। কাজটি করার জন্য অরণ্যের কথায় প্রথিত তাকে বিকাশের মাধ্যমে তিন বারে ১৫-১৬ হাজার টাকা অগ্রিম প্রদান করে।”
ডিজি আরো বলেন, “আসামি মো. জুবায়েরের বর্ণনা অনুযায়ী ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় এই আধুনিক মাদক চোরাকারবারি চক্রের অন্যতম হোতা জি এম প্রথিত সামসের অবস্থান শনাক্ত করে তাকে সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তার কাছ থেকে যুক্তরাজ্য থেকে আমদানিকৃত ‘খ’ শ্রেণির মাদকদ্রব্য এমডিএমএ ট্যাবলেট, গাঁজা ও কেটামিন নামক মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়।”
তিনি বলেন, “জুবায়ের এবং জি এম প্রথিত সামসকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেট্রো (উত্তর) কার্যালয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ ও তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ভোর রাতে আসিফ মাহবুব চৌধুরীর বাসা ঘেরাও করে তাকে হাতেনাতে এমডিএমএ, গাঁজা, কুশ ও নগদ টাকাসহ গ্রেপ্তার করা হয়। আসামি জুবায়েরের দেওয়া তথ্যমতে অপূর্ব রায়কে গাঁজাসহ গ্রেপ্তার করা হয় এবং প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য-প্রমাণাদি জব্দ করা হয়। অপূর্বর দেওয়া তথ্যে সৈয়দ শায়ান আহমেদকে গাঁজা ও এমডিএমএ চালানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণাদি জব্দ করা হয়।”
তিনি বলেন, “আসামিদের মোবাইল ফোন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তারা হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম এবং অন্যান্য এনক্রিপ্টেড অ্যাপ ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করে এ ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল।”
ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ