পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নদীবেষ্টিত চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নে চাঁদার দাবিতে কৃষকের তরমুজভর্তি ট্রলার ছিনতাই ও চাঁদাবাজির অভিযোগে হওয়া মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর পাশাপাশি ছিনতাই হওয়া পাঁচ শ তরমুজ উদ্ধার করে ওই কৃষকের ছেলেকে বুঝিয়ে দিয়েছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের যুবদল কর্মী মো.

সাইফুল, মো. মেহেদী হাসান (২০) ও গোলাম মুর্তজা (৪০)। এর মধ্যে মামলার প্রধান আসামি সাইফুলকে গত বুধবার রাতে এবং মেহেদী ও মুর্তজাকে আজ শনিবার সকালে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সাইফুল নাজিরপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি। দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে তাঁকে উপজেলা ছাত্রদল বহিষ্কার করেছে। বর্তমানে তিনি যুবদলের সক্রিয় কর্মী বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

পুলিশ, স্থানীয় চাষি ও ভুক্তভোগী কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার খেত থেকে ৮৬০টি তরমুজ কেটে ট্রলারে উঠিয়ে বরিশাল নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন কৃষক মো. মানিক ব্যাপারী। দুপুর ১২টার দিকে বিএনপি নেতা এনায়েত হোসেনের ছেলে মো. সাইফুল (৩৫) দেশি অস্ত্রসহ ২০-২৫ জনের একটি দল নিয়ে ট্রলারের চালককে মারধর করেন। এরপর চর রায়সাহেব থেকে তরমুজভর্তি ট্রলারটি ছিনিয়ে নিয়ে নিমদী লঞ্চঘাটের দক্ষিণ পাশে ইটভাটার কাছে নিয়ে নোঙর করে রাখেন তাঁরা। খবর পেয়ে কৃষক মানিক ব্যাপারী সেখানে গিয়ে ট্রলারসহ তরমুজ ফেরত চাইলে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন সাইফুল ও তাঁর লোকজন। চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে মানিক ব্যাপারী ও তাঁর ছেলে সাগরকে মারধর করে তরমুজ অন্য ট্রলারে উঠিয়ে নিয়ে যান সাইফুল। পরে ছয় হাজার টাকার বিনিময়ে ট্রলার ফেরত দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় বুধবার রাত ১২টার দিকে মো. মানিক ব্যাপারী বাদী হয়ে মো. সাইফুল ইসলামসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে আরও ২৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির নামে বাউফল থানায় মামলা করেন। ওই রাতেই পুলিশ সাইফুলকে গ্রেপ্তার করে। তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সাইফুলের বিরুদ্ধে আগে থেকে দুটি মাদক মামলা, চাঁদাবাজিসহ অন্তত ছয়টি মামলা আছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘প্রধান আসামিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। লুট হওয়া পাঁচ শ তরমুজ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। আশা করছি খুব কম সময়ের মধ্যে বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর তরম জ ব উফল

এছাড়াও পড়ুন:

কর্মক্ষেত্রে বুলিং: শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব

কর্মক্ষেত্রে একজন ব্যক্তির প্রতি অন্য সহকর্মী দ্বারা ইচ্ছাকৃতভাবে ও নিয়মিতভাবে খারাপ আচরণ করাকে কর্মক্ষেত্রে বুলিং অথবা উৎপীড়ন বলে। এটি কর্মক্ষেত্রের পরিবেশকে বিষাক্ত করে তোলে, কর্মীর কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়; কর্মীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়ে।

প্রকারভেদ

কর্মক্ষেত্রে বুলিং বিভিন্ন রকম হয়—

মৌখিক বুলিং: গালিগালাজ, অপমানজনক মন্তব্য, সবার সামনে ছোট করা, বিদ্রূপ করা।

শারীরিক বুলিং: মারামারি, ধাক্কা দেওয়া অথবা শারীরিকভাবে আঘাত করা।

সাইবার বুলিং: অনলাইনে বা সামাজিক মাধ্যমে অপমানজনক বার্তা পাঠানো, মোবাইলে ফোন করে খারাপ ব্যবহার করা।

কেন করা হয়?

এই উৎপীড়নের পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে—

কর্মক্ষেত্রে ক্ষমতা জাহির করা।

সহকর্মীর প্রতি ঈর্ষা।

ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সামনে নিজেকে জাহির করার ইচ্ছা।

কর্মীর পারিবারিক অথবা মানসিক সমস্যা; যা কর্মক্ষেত্রে প্রতিফলিত হয়।

কর্মীর স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব

বুলিং কর্মীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। এর কারণে অনেক সময় আক্রান্ত ব্যক্তি চাকরি ছেড়ে দেওয়া, অনেক সময় আত্মহত্যাও করতে পারেন।

মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব

ডিপ্রেশন বা হতাশা

অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা

ইনসমনিয়া বা ঘুম কম হওয়া

আত্মবিশ্বাস কমে যাওয়া

আত্মহত্যার প্রবণতা

শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব

কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া

ওজন বেড়ে যাওয়া

হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়া

মানসিক চাপ ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য রোগকে অনিয়ন্ত্রিত করে দেয়।

প্রতিরোধের উপায়

ঊর্ধ্বতন নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তার কাছে পুরো বিষয়টি বুঝিয়ে বলা।

প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে মানসিক রোগবিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।

ডা. নাজমুল হক মুন্না সহকারী অধ্যাপক (নিউরোলজি)

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কর্মক্ষেত্রে বুলিং: শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব