সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার গোয়ালডাঙ্গা বাজারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বেড়িবাঁধের প্রায় ৪০০ ফুট ভেঙে মরিচ্চাপ নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে কাঁচা বাজার, আল আকসা জামে মসজিদ ও গোয়ালডাঙ্গা বাজারসহ আশপাশের এলাকা। ভাঙন আতঙ্ক বিরাজ করছে বড়দল ও খাজরা ইউনিয়নের মানুষের মধ্যে।

গত বছর মরা মরিচ্চাপ নদী খননের পর বছর যেতে না যেতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ মুহূর্তে ভাঙন না আটকানো না গেলে বড়দল ও খাজরা ইউনিয়নের কয়েক হাজার বিঘা জমির বোরো ধান ও শত শত বিঘা জমির ক্ষেতের তরমুজ নদীগর্ভে বিলীন হওয়া এবং বহু মৎস্য ঘের লোনা পানিতে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

শুক্রবার সন্ধ্যায় স্থানীয় বিএনপির নেতারা উপজেলার কর্মকর্তাদের ফোনে বিষয়টি জানানোর পর আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নোমান হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি জানান, বেড়িবাঁধ যদি দ্রুত সংস্কার করা না হয় তাহলে বড়দল ও খাজরা ইউনিয়ন পানিতে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিষয়টি তিনি কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে জরুরিভাবে বাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু করার চেষ্টার আশ্বাস দেন।

আরো পড়ুন:

কুমিল্লায় ৯ লাশ উদ্ধার, জনমনে আতঙ্ক

বিদ্যালয়ে ছাত্রীকে জখম
গ্রেপ্তার হয়নি ৬ আসামি, আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কৃষ্ণা রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তিনি ছুটিতে থাকায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাশেদ হোসাইনকে দ্রুত সেখানে পাঠানো হবে। দ্রুত বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজের ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাহিরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নির্বাহী প্রকৌশলী ঢাকায় রয়েছেন। রবিবার (২ মার্চ) সকালে তিনি সাতক্ষীরায় ফিরে আসবেন। আসার পর তার নির্দেশনা অনুযায়ী বেড়িবাঁধ সংস্কারের ব্যবস্থা করা হবে।
 

ঢাকা/শাহীন/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আতঙ ক উপজ ল আতঙ ক

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ