ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি আনার চেষ্টা করছে সরকার: অর্থ উপদেষ্টা
Published: 5th, March 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকার ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি আনার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, সার্বিকভাবে অর্থনীতি খারাপ অবস্থায় আছে, তা নয়। একটা বিষয় হয়েছে- ব্যবসা-পাতিতে মন্দা, আয়ের উৎস কিছুটা কম। কিন্তু একেবারে ধ্বংসের পথে এমনটি নয়। সে অবস্থা থেকে অর্থনীতিকে বর্তমান সরকার উদ্ধার করেছে। তবে এখনো নতুন এমপ্লয়মেন্ট (কর্মসংস্থান) কম হচ্ছে। সেটা নিয়ে একনেকেও কথা হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। সম্প্রতি এসএমই খাতের ছোট ছোট প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে বলা হয়েছে।
আজ বুধবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন অর্থ উপদেষ্টা।
ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিটের (এলওসি) আওতায় প্রকল্পগুলো নিয়ে সরকারের অবস্থান কী জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এলওসি নিয়ে কথা হয়েছে। এলওসি পার্টিকুলার দেশে আসে। তাই দেরি হওয়া মানে আমরা প্রজেক্টটা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করি, অনেকে বলে বন্ধ, না সেটা সম্ভব না। একটা প্রজেক্ট হয়েছে, সেটা যে সরকারই করুক এবং ভারত সাহায্য দিচ্ছে, এগুলো প্রয়োজনীয়। অব্যাহত রাখার জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কয়েকটি প্রকল্পের অগ্রগতি শূন্য থেকে দুই–এক শতাংশ, সেগুলো দেখা হবে। তবে আপাতত সার্বিকভাবে বন্ধ করার বিষয় নেই। এখানে অর্থনৈতিক দিক ছাড়াও দ্বিপাক্ষিক একটা বিষয় আছে। একটা দেশের সঙ্গে যখন দ্বিপাক্ষিক বিষয় থাকে তখন ওই দেশের প্রাইভেট সেক্টর হোক, সরকার হোক সাহায্য-সহযোগিতার জন্য অর্থনীতি দেখি না। অর্থনীতির জন্য একটা প্রকল্প নেওয়া হয়, কিন্তু ক্যান্সেল করা খুবই সেনসেটিভ ব্যাপার। এ ব্যাপারে তিনি যথেষ্ট যত্নবান। চট করে ক্যান্সেল করে দেব না। চট করে আমরা কিছু নিচ্ছিও না।
পোশাকখাত নিয়ে করা এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, গার্মেন্টসে সরকার নগদ প্রণোদনা অব্যাহত রেখেছে। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান আছে তাদের ম্যানেজমেন্টের দোষ আছে, কিছু আছে প্রোডাক্টের ডিমান্ড তেমন নেই। সেগুলোর জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।
ইতোমধ্যে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। বেক্সিমকোর ১৪টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে করা এক প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, বেক্সিমকোরটা ইউনিক চ্যালেঞ্জ। ওদের দোষে, করাপশনের দোষ, আর ম্যানেজমেন্টের দোষ। প্রাইভেট দায় সরকারের ঘাড়ে দেওয়া ঠিক না। সরকারের টাকা মানে তো জনগণের টাকা। ওটা তো অন্য কাজে ব্যয় করতে হয় আমাদের। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সামাজিক বিষয় আছে। তাদের প্রতি (বেক্সিমকোর শ্রমিক) আমাদের নজর আছে। তাদের পাওয়া পরিশোধে সরকার টাকা দিচ্ছে। তাছাড়া কাজ হারা শ্রমিকদের বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য বিডার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনের সঙ্গে কথা হয়েছে। এসবসহ আরও কোনো কোনো জায়গায় বিকল্প কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ে করা এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বাজার ব্যবস্থা নিয়ে তিনি সন্তুষ্ট। আরেকটু বেটার হলে ভালো হতো। গত বছরের তুলনায় অনেক পণ্যের দাম এখন কম। তারপরও নিম্ন আয়ের কিছু মানুষের কষ্ট হচ্ছে এটা অস্বীকার করার উপায় নেই।
সামনে গরম আসছে, জ্বালানি সংকটের আশঙ্কা করা হচ্ছে এমন প্রশ্নে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এলএনজি সংকটের কোনো সম্ভাবনা নেই। আজকের বৈঠকে দুই কার্গো এলএনজি আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। দাম কম বা বেশি যাই হোক সরবরাহ নিশ্চিতের চেষ্টা করছে সরকার।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ড স ল হউদ দ ন আহম দ র জন য ব যবস সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানের হামলায় ২০ ইসরায়েলি নিহত
ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলা চারদিন ধরে চলছে। এসব হামলায় উভয় দেশের মধ্যে নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। ইসরায়েলের জাতীয় পরিষেবা জানিয়েছে, আজ সোমবার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত শুক্রবার থেকে আজ সোমবার পর্যন্ত ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা ২০ জনে পৌঁছুল। আজ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
অন্যদিকে আল-জাজিরা বলছে, ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত ইরানে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।
ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি পরিষেবার প্রধান ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, মধ্য ইসরায়েলজুড়ে ইরানের হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নারী।
এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়া, তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।
রোববার ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।
আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।
সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।
ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।
সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’
তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।
এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।
এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।