অতুলনীয় ঐক্যের মাধ্যমে গত ৫ আগস্ট ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ অর্জনের কথা বলা হলেও পাঁচ-ছয় মাসের ব্যবধানে সেই অর্জন ফিকে হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেনের লেডিস ক্লাবে এক ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সাংবাদিকদের সম্মানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা এই ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে।

ইফতার মাহফিলে আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, ‘২০০ বছর ব্রিটিশ বেনিয়াদের সঙ্গে সংগ্রাম করে ১৯৪৭ সালে স্বাধীন হয়েছিলাম, কিন্তু স্বাধীনতা ভোগ করতে পারিনি। ১৯৭১ সালে লাখো মানুষের আত্মত্যাগ এবং রক্তের বিনিময়ে আরেকটি ভূখণ্ড-পতাকা-দেশ পেয়েছিলাম, স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম, কিন্তু স্বাধীন হইনি। আমরা ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ঠিক সে রকম আত্মত্যাগ এবং অতুলনীয় ঐক্যের মাধ্যমে দ্বিতীয় স্বাধীনতা পেয়েছি। কিন্তু পাঁচ-ছয় মাসের ব্যবধানে মনে হয় সেই অর্জনও কিছুটা ফিকে হয়ে যাচ্ছে।’

ইতিহাসকে মনোযোগ দিয়ে বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন উল্লেখ করে জামায়াতের এই নেতা বলেন, ‘আমরা আত্মত্যাগ করি, আমরা জীবন দিই, আমরা সাহসিকতা এবং ঐক্য গড়লেও লক্ষ্যে যেতে পারি না। আমরা বারবার রক্ত-জীবন দিয়ে ব্যর্থ হই কেন? কারণ, আমাদের দুর্ভাগ্য হচ্ছে আমরা অসৎ এবং কম যোগ্য নেতৃত্ব দ্বারা বারবার পরিচালিত হয়েছি এবং প্রতারিত হয়েছি।’

একটি টেকসই গণতন্ত্র নিশ্চিতের প্রত্যয় ব্যক্ত করে আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, ‘বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করেই আগামী দিনে আমাদের অগ্রসর হতে হবে।’

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় ইফতার মাহফিলে আরও বক্তব্য দেন দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সালাউদ্দিন বাবার, দৈনিক সংগ্রামের সাবেক সম্পাদক আবুল আসাদ, পত্রিকাটির বর্তমান সম্পাদক আজম মীর, নিউ নেশন পত্রিকার সাবেক সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার, সাংবাদিক নেতা কাদের গনি চৌধুরী, শহিদুল ইসলাম, ওবায়দুর রহমান শাহীন, এম আবদুল্লাহ প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ