ভোলার গ্যাস খুলনার বদলে ঢাকায় নেওয়ার সিদ্ধান্তে স্থানীয় বিএনপির উদ্বেগ ও ক্ষোভ
Published: 6th, March 2025 GMT
‘রুটে পরিবর্তন, ভোলার গ্যাস খুলনার বদলে আগে যাবে ঢাকায়’ গণমাধ্যমে এমন সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খুলনা বিএনপির নেতারা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে এ–সংক্রান্ত বিবৃতি পাঠিয়েছেন তাঁরা।
বিবৃতিতে খুলনার বিএনপি নেতারা জানান, খুলনাসহ দেশের দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার শিল্পপ্রতিষ্ঠানে গ্যাস সরবরাহ করার লক্ষ্যে ২০১২ সালে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকে খুলনার আড়ংঘাটা পর্যন্ত ১৬৫ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করা হয়। স্থাপন করা হয় গ্যাস ট্রান্সমিশন ল্যান্ড ফিল্ডও। এরপর এক যুগ কেটে গেলেও খুলনার কোথাও সরবরাহ করা হয়নি গ্যাস। বছরের পর বছর এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা দাবি জানিয়ে এলেও তা থেকেছে উপেক্ষিত। সম্প্রতি ব্যবসায়ীরা আবারও তাঁদের দাবি জোরদার করলে নতুন করে গ্যাস সরবরাহের সিদ্ধান্ত নেয় সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি। প্রথম পর্যায়ে খুলনা বিসিক শিল্পনগরী এলাকায় সরবরাহ করার কথা এ গ্যাস। কিন্তু এরই মধ্যে ভোলা-বরিশাল অংশ অপরিবর্তিত রেখে পেট্রোবাংলা ভোলা-বরিশাল-ঢাকা পাইপলাইন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা আত্মঘাতী ও খুলনা অঞ্চলের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে সুকৌশলে ধ্বংসের নীলনকশা মাত্র।
বিএনপি মিডিয়া সেল খুলনার আহ্বায়ক মিজানুর রহমানের পাঠানো বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, পেট্রোবাংলার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বরিশাল-খুলনা পাইপলাইনও হবে, তবে প্রথম ধাপে ভোলা-বরিশাল-ঢাকা পাইপলাইন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। খুলনা বিএনপি অবিলম্বে গৃহীত এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে প্রথম ধাপে খুলনায় গ্যাস সরবরাহের দাবি জানিয়েছে। আগামী জুন মাসে খুলনায় গ্যাস সরবরাহের খবরে উচ্ছ্বসিত ছিলেন এই অঞ্চলের ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টরা। উৎপাদন খরচ কমার পাশাপাশি বিসিক শিল্প এলাকায় বন্ধ হওয়া প্রতিষ্ঠান খুলে যাওয়ার আশা ছিল তাঁদের। যেসব প্রতিষ্ঠান গ্যাস সংযোগের জন্য আবেদন করেছে, ইতিমধ্যেই সেসব প্রতিষ্ঠান এনওসিও সংগ্রহ করেছে।
বিবৃতি থেকে জানা যায়, খুলনা শিল্পাঞ্চলের অনেক প্রতিষ্ঠান লোকসানের কারণে বন্ধ হয়েছে। গ্যাস–সংযোগ দেওয়া হলে বন্ধ প্রতিষ্ঠানগুলো আবারও চালু হবে। সেই সঙ্গে ভঙ্গুর প্রতিষ্ঠানগুলোও লাভের মুখ দেখবে। নতুন নতুন কর্মসংস্থান হবে। সব মিলিয়ে এ অঞ্চলের অর্থনীতিতে সম্ভাবনা বাড়বে।
বিএনপি নেতারা প্রথম ধাপে খুলনায় গ্যাস সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় খুলনাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে বৃহৎ আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।বিবৃতিতে সই করা নেতারা হলেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম (বকুল), তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী (হেলাল), মহানগর বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম (মনা), জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান (মন্টু), মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম (তুহিন), জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আবু হোসেন (বাবু) প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ য স সরবর হ র র ব এনপ ব এনপ র বর শ ল প রথম ব যবস প ইপল
এছাড়াও পড়ুন:
বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়েছে, নিম্নমুখী চালের দাম
ঈদের বন্ধের আমেজ কাটতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে চট্টগ্রামের পাইকারি ও খুচরা বাজারগুলো। ক্রেতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারগুলোতে বেড়েছে সবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের সরবরাহ। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কয়েক দিনের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে সবজির দাম। পেঁয়াজ, রসুন ও চালের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও নিম্নমুখী।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার পর নগরের কাঁচাবাজারে সবজির সরবরাহ কমে যায়। ফলে দাম ছিল কিছুটা বাড়তি। গত রোববার ও সোমবারের দিকে নগরের আড়তগুলোতে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৬০ টাকা দরে। অধিকাংশ সবজির দামও ৪০ টাকার আশপাশে ছিল। তবে গত মঙ্গলবার থেকে আবারও বাজারে পুরোদমে সবজির সরবরাহ শুরু হয়েছে। যার কারণে দাম কমতে শুরু করেছে।
আজ শুক্রবার নগরের রিয়াজউদ্দিন বাজারের পাইকারি আড়তে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ২০ থেকে ৪০ টাকা দরে। বেশির ভাগ সবজির দাম প্রতি কেজি ১০ থেকে ৩৫ টাকা। তবে খুচরা বাজারগুলোতে প্রায় দ্বিগুণ দামে সবজি বিক্রি হতে দেখা যায়। নগরের বহদ্দারহাট, চকবাজার, সাব এরিয়া ও কাজির দেউড়ি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব বাজারে অধিকাংশ সবজির দাম ৬০ টাকার বেশি। লাউ, মিষ্টিকুমড়া ও ফুলকপির দাম কিছুটা কম। এসব সবজির দাম ৫০ টাকার আশপাশে। খুচরা বাজারগুলোতে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা কেজি দরে। পরিবহন খরচ ও আগে কেনার অজুহাতে বাড়তি দাম নিচ্ছেন বিক্রেতারা। রিয়াজউদ্দিন বাজারের আড়তদার নুরুল ইসলাম বলেন, বাজারে সব সবজির দাম কম। কিন্তু খুচরা ব্যবসায়ীদের কারণে ভোক্তাদের ভোগান্তি হচ্ছে। আড়তের দামের দ্বিগুণ দামে তাঁরা সবজি বিক্রি করছেন।
সবজির বাজারের পাশাপাশি পেঁয়াজ, রসুন ও চালের দামও নিম্নমুখী। খাতুনগঞ্জের পাইকারি আড়তে আজ পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৫২ টাকা দরে। খুচরা পর্যায়ে দাম ছিল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি। অন্যদিকে রসুনের কেজি আড়তে ছিল ৮৫ থেকে ১১০ টাকা। খুচরায় সেটি ১০০ থেকে ১৩০ টাকা।
পাহাড়তলী চালের আড়তে মোটা চাল (গুটি, স্বর্ণা) কেজিপ্রতি ৪৮ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে জিরাশাইল ৭২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত তিন দিন আগ থেকে চালের বাজার কিছুটা নিম্নমুখী বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) চালের দাম কমেছে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন বলেন, চালের সরবরাহ যথেষ্ট আছে। চালের দাম বাড়ার আশঙ্কা নেই এখন।