টাঙ্গাইলে সাবেক এমপির বাড়ি দখল করে আশ্রম
Published: 9th, March 2025 GMT
টাঙ্গাইল শহরে ছাত্র প্রতিনিধি পরিচয়ে সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহেরের ছয়তলা বাড়ি দখলের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার মারইয়াম মুকাদ্দাস মিষ্টি নামের ছাত্র প্রতিনিধি তালা ভেঙে শহরের ছোট কালীবাড়ি রোডের বাড়িতে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ ২০ ব্যক্তিকে রেখেছেন।
জানতে চাইলে সদর থানার ওসি তানভীর আহম্মেদ জানান, বিষয়টি তিনি লোকমুখে শুনেছেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীরা নতুন দল করেছেন, এখানে ছাত্র প্রতিনিধি বা সমন্বয়ক বলতে আর কিছু থাকে বলে তাঁর মনে হয় না।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পর থেকে সপরিবারে আত্মগোপনে জোয়াহেরুল ইসলাম। এর মধ্যে ৬ ফেব্রুয়ারি তাঁর বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে জোয়াহেরের বাড়িটি দখল করে আশ্রম করার ঘোষণা দেওয়া হয়।
স্থানীয়রা জানান, সকালে মিষ্টি তালা ভেঙে আল মুকাদ্দাস ফাউন্ডেশনের মানসিক ভারসাম্যহীন ২০ ব্যক্তিকে নিয়ে জোয়াহেরের বাড়িতে প্রবেশ করেন। জানতে চাইলে মিষ্টি বলেন, এটি জবরদখল নয়। কারণ কোনো ব্যক্তিবিশেষের ব্যবহারে বাড়িটি নেওয়া হয়নি। ফেসবুকে আগেই আওয়ামী লীগের সব নেতার বাড়িতে পাগলদের জন্য ‘আশ্রম’ গড়ে তোলার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে শনিবার ছয়তলা ভবনে ২০ পাগল রাখা হয়েছে। এ কাজে তাঁকে অন্যান্য ছাত্র প্রতিনিধি সমর্থন দিয়েছেন বলে জানান।
মিষ্টি বলেন, জোয়াহেরের পক্ষ থেকে এক ব্যক্তি এসে বাড়ি না ভেঙে আশ্রম করার প্রস্তাব দেন। তাঁর প্রস্তাব অনুযায়ী পাগলদের আশ্রম করা হয়েছে। তবে এ কথা কে বলেছেন, তাঁর নাম-পরিচয় জানাননি তিনি।
তবে আবাসিক এলাকায় মানসিক ভারসাম্যহীনদের আশ্রম তৈরি করায় স্থানীয়রা অস্বস্তি প্রকাশ করেছেন। অনেকে ক্ষোভের কথা জানালেও প্রকাশ্যে প্রতিবাদের সাহস পাচ্ছেন না। এ বিষয়ে মিষ্টি বলেন, ‘আবাসিক এলাকার মানুষের জীবনযাত্রায় প্রভাব পড়লে বেশি মাত্রায় পাগলদের অন্য কোনো আওয়ামী লীগ নেতার বাসায় স্থানান্তর করা হবে। এখানে কম মাত্রার পাগল রাখা হবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের টাঙ্গাইলের আহ্বায়ক আল আমিন জানান, মারইয়াম মুকাদ্দাস মিষ্টি নামে এক ছাত্র প্রতিনিধি আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে পাগলের আশ্রম করেছেন বলে তিনি শুনেছেন। তবে তারা এটি সমর্থন করেন না।
আল আমিন বলেন, ‘মিষ্টি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা রেখেছিলেন। তাই বলে তিনি বিশেষ সুবিধা নেবেন, তা কাম্য নয়। এটি ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনের মূল চেতনার সঙ্গে যায় না। তা ছাড়া বর্তমানে কেউ সমন্বয়ক পরিচয় দিতে পারবেন না। বাড়ি দখলের মতো অপরাধ করলে অবশ্যই তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ভিনগ্রহের বস্তু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ইলন মাস্ক
গত জুলাই মাসে শনাক্ত হওয়া রহস্যময় ‘৩আই/অ্যাটলাস’ নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুর পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। আমাদের সৌরজগতের মধ্যে থাকা বস্তুটি এমন আচরণ করছে, যা বিজ্ঞানীরা আগে কখনো দেখেননি। কারও ধারণা এটি ধূমকেতু, আবার কারও মতে ভিনগ্রহ থেকে আসা মহাকাশযান। উৎস ও পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে না পারলেও বস্তুটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয় বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী অভি লোব অভিযোগ করেছেন, নাসা বস্তুটির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করছে। বিশাল আকারের অতিদ্রুতগামী মহাজাগতিক বস্তুটি অস্বাভাবিক রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ করছে, যা বিজ্ঞানের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। অনেকের ধারণা, ৩আই/অ্যাটলাস কোনো কৃত্রিম উৎস থেকে তৈরি হতে পারে। এবার এই বিতর্কে নাম লিখিয়েছেন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক।
জনপ্রিয় মার্কিন পডকাস্ট দ্য জো রোগান এক্সপেরিয়েন্সে ইলন মাস্ক ৩আই/অ্যাটলাস নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু সম্পর্কে নিজের ভাবনা প্রকাশ করেছেন। বস্তুটি কোনো ভিনগ্রহের মহাকাশযান হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইলন মাস্ক বলেন, ‘আপনি যদি এটিকে সম্পূর্ণ নিকেল দিয়ে তৈরি করেন, তবে তা হবে একটি অত্যন্ত ভারী মহাকাশযান। এটি এমন একটি যান হতে পারে, যা একটি মহাদেশকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। তার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটাতে পারে। যদি আমি ভিনগ্রহের কোনো প্রমাণ সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে কথা দিচ্ছি আপনার অনুষ্ঠানে আসব। আর এখানেই তা প্রকাশ করব।’
অভি লোবের দাবি, আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুটি পৃথিবীর ওপর নজরদারি করতে পাঠানো ভিনগ্রহের কোনো মহাকাশযান হতে পারে। অস্বাভাবিক লেজযুক্ত বস্তুটি প্রতি সেকেন্ডে চার গ্রাম নিকেল নিঃসরণ করছে; যদিও সেখানে কোনো লোহার উপস্থিতি নেই। ধূমকেতুর ক্ষেত্রে এমন আচরণ আগে দেখা যায়নি।
জো রোগান তাঁর আলোচনায় ধূমকেতুর রহস্যময় বৈশিষ্ট্যের ওপর জোর দেন। ধূমকেতুর গ্যাসের মেঘে নিকেলের উপস্থিতি উল্লেখ করেন। এই ধাতু পৃথিবীতে প্রধানত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত সংকর ধাতুতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে ইলন মাস্ক নিকেলের উপস্থিতির একটি পার্থিব ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, অনেক ধূমকেতু ও গ্রহাণু প্রাথমিকভাবে নিকেল দিয়ে তৈরি। পৃথিবীতে যেখানে নিকেলখনি দেখা যায়, সেখানে আসলে অতীতে নিকেলসমৃদ্ধ কোনো গ্রহাণু বা ধূমকেতু আঘাত করেছিল।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া