কুষ্টিয়ায় কুমারখালী উপজেলার ছেঁউড়িয়ায় লালন শাহের আখড়াবাড়িতে কাল বৃহস্পতিবার থেকে লালন স্মরণোৎসব শুরু হচ্ছে। মূল আখড়াবাড়ির ভেতরে সাধু–বাউলেরা অষ্টপ্রহরব্যাপী (এক দিন) রীতিনীতি মেনে তাঁদের আচার–আচরণ করবেন। তবে এবারের স্মরণোৎসবে আখড়াবাড়ির পাশে কালী নদীর পাড়ে মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থাকছে না।

লালন স্মরণোৎসব সফল করতে আজ বুধবার লালন আখড়াবাড়িতে লালন একাডেমির সভাকক্ষে কোর কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে গত ৫ মার্চ লালন স্মরণোৎসব-২০২৫ উদ্‌যাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

ফকির লালন শাহ তাঁর জীবদ্দশায় ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়িতে প্রতিবছর চৈত্রের দৌলপূর্ণিমা রাতে বাউলদের নিয়ে অষ্টপ্রহরব্যাপী সাধুসঙ্গ উৎসব করতেন। তাঁর মৃত্যুর পরও এ উৎসব চালিয়ে আসছেন ভক্ত-অনুসারীরা। তবে বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে লালন একাডেমি তিন দিনের আয়োজন করে আসছে। আবার কোনো বছর পাঁচ দিনের উৎসবও হয়েছে।

গত বছর পবিত্র রমজান মাসের কারণে এক দিনের আয়োজন করেছিল লালন একাডেমি। সে বছর সাধুসঙ্গ হলেও ছিল না গ্রামীণ মেলা ও সংগীতানুষ্ঠান। এবারও রমজানের কারণে কালী নদীর পাড়ে মেলা ও সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন থাকছে না।

এবারের প্রস্তুতিমূলক সভায় সবার সম্মতিক্রমে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রস্তুতি সভায় জেলা প্রশাসক ও লালন একাডেমির সভাপতি মো.

তৌফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা, আখড়াবাড়ির (পাঁচ ঘরের) সাধু–বাউলেরা উপস্থিত ছিলেন।

সভার সিদ্ধান্ত মতে, বৃহস্পতিবার বিকেলে আখড়াবাড়ির ভেতরে সাধুসঙ্গ শুরু হবে। অষ্টপ্রহরব্যাপী সাধুসঙ্গ পরের দিন বিকেলে শেষ হবে। এ সময়ের মধ্যে সেখানে সাধু–বাউলেরা তাঁদের রীতিনীতি মেনে আচার অনুষ্ঠান করবেন। তবে কালী নদীর পাড়ে কোনো আয়োজন থাকবে না।

আজ বেলা ১১টায় লালন আখড়াবাড়িতে লালন স্মরণোৎসবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে লালন একাডেমির সভাকক্ষে জেলা কোর কমিটির সভার আয়োজন করা হয়। সভায় জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ সেনাবাহিনী ও র‍্যাবের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমান বলেন, কাল বেলা তিনটায় লালন আখড়াবাড়িতে লালন একাডেমির মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে প্রধান অতিথি ও মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আখড় ব ড় র আখড় ব ড় ত অন ষ ঠ

এছাড়াও পড়ুন:

ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা

চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাহাড়ি প্রদেশ গুইঝৌতে প্রাচীনকাল থেকে ‘গেলাও’ জনগোষ্ঠীর বসবাস। ভিয়েতনামেও এই জনগোষ্ঠীর মানুষ বাস করেন। চীনে তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৭৭ হাজার।

কৃষিনির্ভর গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা আজও প্রাচীনকালের পুরোনো এক ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন। বছরের নির্দিষ্ট দিনে তাঁরা গাছকে খাওয়ান, যা চীনা ভাষায় ‘ওয়েই শু’ রীতি নামে পরিচিত।

এই প্রাচীন রীতি মূলত একধরনের প্রার্থনা। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস, এতে প্রকৃতি তুষ্ট হয়, ফসল ভালো হয়, পরিবারে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। প্রতিবছর দুটি উৎসবের সময় এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়—চীনা নববর্ষে, যা বসন্ত উৎসব নামে পরিচিত। আর গেলাও নববর্ষে, যা চান্দ্র পঞ্জিকার তৃতীয় মাসের তৃতীয় দিনে পালিত হয়।

অনুষ্ঠানের দিন সকালে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী পাহাড়ের ঢালে জড়ো হন। তাঁরা সঙ্গে করে চাল থেকে তৈরি মদ, শূকরের মাংস, মাছ ও লাল আঠালো চাল নিয়ে আসেন। পাহাড়ে পৌঁছে প্রথমে আতশবাজি পোড়ানো হয়। এতে করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

এর মধ্যেই একটি পুরোনো ও শক্তিশালী গাছ বাছাই করা হয়। এরপর সবাই ধূপ জ্বালিয়ে নতজানু হয়ে প্রার্থনা করেন। সবশেষে মূল পর্ব ‘গাছকে খাওয়ানো’ শুরু হয়।

একজন কুঠার বা ছুরি দিয়ে গাছে তিনটি জায়গায় ছোট করে কেটে দেন। সেই ক্ষতস্থানে চাল, মাংস ও মদ ঢেলে দেওয়া হয়, যাতে গাছ তাঁদের দেওয়া ভোগ গ্রহণ করতে পারে। পরে ওই জায়গা লাল কাগজে মুড়ে দেওয়া হয়।

এ ছাড়া গাছের গোড়া ঘিরে আগাছা পরিষ্কার করা হয়, মাটি আলগা করে দেওয়া হয়। এতে নতুন জীবনের বার্তা মেলে বলে মনে করেন গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।

যে গাছকে খাওয়ানো হয়, সেটি যদি ফলদ হয়, তাহলে ভোগ দানকারীরা একটি আশাব্যঞ্জক শ্লোক উচ্চারণ করেন। বলেন, ‘তোমায় চাল খাওয়াই, ফল দিয়ো গুচ্ছ গুচ্ছ; তোমায় মাংস খাওয়াই, ফল দিয়ো দলা দলা।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুন্দরবনে দুবলার চরে রাস উৎসব শুরু আজ, এবারও নেই মেলার আয়োজন
  • শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত
  • ‘মবের’ পিটুনিতে নিহত রূপলাল দাসের মেয়ের বিয়ে আজ
  • এবারও কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে নেই বাংলাদেশ
  • ডাইনির সাজে শাবনূর!
  • প্রার্থনার সুরে শেষ হলো ‘ফাতেমা রানীর’ তীর্থোৎসব 
  • ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা
  • টগি ফান ওয়ার্ল্ডে উদযাপিত হলো হ্যালোইন উৎসব
  • উদ্ভাবন–আনন্দে বিজ্ঞান উৎসব
  • নবীনদের নতুন চিন্তার ঝলক