অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকার গত সাত মাসে কোনো পত্রিকা বন্ধ করেনি। কোনো টিভি স্টেশন বন্ধ করেনি। কোনো ওয়েবসাইট বন্ধ করেনি।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময়ের প্রসঙ্গ টেনে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, কিছু টেলিভিশন স্টেশন ভয়াবহ অপতথ্য ছড়িয়েছে। তাদের বন্ধ করে দেওয়ার মতো যথেষ্ট কারণ ছিল। কিন্তু এই সরকার যেহেতু গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী, তাই তারা কোনো পত্রিকা, ওয়েবসাইট বা টিভি স্টেশন বন্ধের পক্ষপাতী নয়।

আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে শফিকুল আলম এ কথাগুলো বলেন। ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টারদের ভূমিকা’ শীর্ষক ওই আলোচনা সভার আয়োজন করে মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (এমআরএ)।

উল্লেখ্য, দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার ‘ডিক্লারেশন’ বাতিল করা হয়েছে। আজ ঢাকা জেলা প্রশাসন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শফিকুল আলম বলেন, মালিকানা নিয়ে বিরোধ আছে। এর জেরে ডিক্লারেশন বাতিল হয়েছে। এর সঙ্গে সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টারদের ভূমিকা প্রসঙ্গে প্রেস সচিব বলেন, জুলাই–আগস্টের আন্দোলনে ঝুঁকি নিয়ে তাঁরা দায়িত্ব পালন করার কারণেই সে সময়কার ভয়াবহতা সম্পর্কে সবাই জানতে পেরেছেন। তিনি বলেন, টেলিভিশনে এখন প্রধান আয় তাদের মাল্টিমিডিয়া। অথচ প্রতিটি মিডিয়ায় সবচেয়ে কম বেতন পান মাল্টিমিডিয়ার ছেলেমেয়েরা।

শফিকুল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশে অকুতোভয় সাংবাদিকতা নিয়ে গল্প করে আসছি। যাঁদের জানতাম অকুতোভয় সাংবাদিক, পরে জানলাম সব অকুতোভয় নন, সব চামচা সাংবাদিক। তাঁরা এর থেকে টাকা নেন, ওর থেকে টাকা নেন, ওর থেকে প্লট নেন, এই ধান্দাবাজি করে গেছেন।’ মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকদের তিনি অকুতোভয় সাংবাদিক হিসেবে অভিহিত করেন।

জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন বলেন, দিল্লির প্রভাব মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতায় কম ছিল। জুলাই বিপ্লবের ৯৫ শতাংশ অবদান মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকদের। তাঁদের কারণেই বিশ্ববাসী এই আন্দোলনের ভয়াবহতা সম্পর্কে জানার সুযোগ পেয়েছে।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আবদুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম সমন্বয়ক সাদিক কাইয়ুম, জাতীয় নাগরিক পার্টির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসুদ, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের মুখ্য সংগঠক তাহমীদ আল মুদাসসীর চৌধুরী প্রমুখ।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফখরুল ইসলাম। সঞ্চালনায় ছিলেন আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারের ভেতরে একটা অংশ নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে: এনসিপি

সরকারের ভেতরের একটি পক্ষ ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশের বাইরে গিয়ে নিজেরাই ঐকমত্য কমিশন হওয়ার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, এই চেষ্টার কারণে নির্বাচন ঝুঁকিতে পড়বে।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আখতার হোসেন এ কথা বলেন।

আখতার হোসেন বলেন, তাঁদের কাছে স্পষ্টতই প্রতীয়মান যে সরকারের ভেতরের কোনো একটা অংশ সংস্কারকে ভন্ডুল করে নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ–আলোচনার ভিত্তিতেই কমিশন সুপারিশ উপস্থাপন করেছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সেই সুপারিশের ভিত্তিতেই সরকার আদেশ জারি করবে, সেটাই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যখন সরকারের তরফ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে আরও এক সপ্তাহ রাজনৈতিক দলগুলোকে আলাপ–আলোচনার কথা বলা হয়, তখন মনে হয় যে সরকার আসলে এই সংস্কারের বিষয়গুলো নিয়ে সাপ-লুডো খেলছে। তিনি বলেন, ‘আমরা ৯৬-তে পৌঁছে গিয়েছিলাম, সেটাকে আবার তিনে নিয়ে আসা হয়েছে সাপ কেটে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের বর্তমান যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, তাতে সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে।’

অতি দ্রুত সরকারকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানিয়ে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সরকারকে নিজেকেই দায়িত্ব নিয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করতে হবে। সামনের সংসদকে গাঠনিক ক্ষমতা প্রদান করার মধ্য দিয়ে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। গণভোটের মাধ্যমে অর্জিত জনগণের অভিপ্রায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে যেন বাস্তবায়িত হয়, সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ