অন্তর্বর্তী সরকার সাত মাসে কোনো গণমাধ্যম বন্ধ করেনি: প্রেস সচিব
Published: 12th, March 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকার গত সাত মাসে কোনো পত্রিকা বন্ধ করেনি। কোনো টিভি স্টেশন বন্ধ করেনি। কোনো ওয়েবসাইট বন্ধ করেনি।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময়ের প্রসঙ্গ টেনে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, কিছু টেলিভিশন স্টেশন ভয়াবহ অপতথ্য ছড়িয়েছে। তাদের বন্ধ করে দেওয়ার মতো যথেষ্ট কারণ ছিল। কিন্তু এই সরকার যেহেতু গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী, তাই তারা কোনো পত্রিকা, ওয়েবসাইট বা টিভি স্টেশন বন্ধের পক্ষপাতী নয়।
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে শফিকুল আলম এ কথাগুলো বলেন। ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টারদের ভূমিকা’ শীর্ষক ওই আলোচনা সভার আয়োজন করে মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (এমআরএ)।
উল্লেখ্য, দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার ‘ডিক্লারেশন’ বাতিল করা হয়েছে। আজ ঢাকা জেলা প্রশাসন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শফিকুল আলম বলেন, মালিকানা নিয়ে বিরোধ আছে। এর জেরে ডিক্লারেশন বাতিল হয়েছে। এর সঙ্গে সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টারদের ভূমিকা প্রসঙ্গে প্রেস সচিব বলেন, জুলাই–আগস্টের আন্দোলনে ঝুঁকি নিয়ে তাঁরা দায়িত্ব পালন করার কারণেই সে সময়কার ভয়াবহতা সম্পর্কে সবাই জানতে পেরেছেন। তিনি বলেন, টেলিভিশনে এখন প্রধান আয় তাদের মাল্টিমিডিয়া। অথচ প্রতিটি মিডিয়ায় সবচেয়ে কম বেতন পান মাল্টিমিডিয়ার ছেলেমেয়েরা।
শফিকুল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশে অকুতোভয় সাংবাদিকতা নিয়ে গল্প করে আসছি। যাঁদের জানতাম অকুতোভয় সাংবাদিক, পরে জানলাম সব অকুতোভয় নন, সব চামচা সাংবাদিক। তাঁরা এর থেকে টাকা নেন, ওর থেকে টাকা নেন, ওর থেকে প্লট নেন, এই ধান্দাবাজি করে গেছেন।’ মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকদের তিনি অকুতোভয় সাংবাদিক হিসেবে অভিহিত করেন।
জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন বলেন, দিল্লির প্রভাব মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতায় কম ছিল। জুলাই বিপ্লবের ৯৫ শতাংশ অবদান মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকদের। তাঁদের কারণেই বিশ্ববাসী এই আন্দোলনের ভয়াবহতা সম্পর্কে জানার সুযোগ পেয়েছে।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আবদুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম সমন্বয়ক সাদিক কাইয়ুম, জাতীয় নাগরিক পার্টির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসুদ, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের মুখ্য সংগঠক তাহমীদ আল মুদাসসীর চৌধুরী প্রমুখ।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফখরুল ইসলাম। সঞ্চালনায় ছিলেন আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।
ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে।
আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন।
ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।
ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”
প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।
মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”
তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”
মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।
গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ