বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, সংস্কারের নামে নির্বাচনকে বিলম্বিত করার সুযোগ নেই। দেশি–বিদেশি নানা ষড়যন্ত্র চলছে, অনির্বাচিত সরকার এ দেশে মাথা গোঁজার চেষ্টা করছে, সেটা বিএনপি করতে দেবে না এ দেশে।

আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুর শহরের অম্বিকা মেমোরিয়াল হলে বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় বর্ধিত সভায় আসাদুজ্জামান রিপন এসব কথা বলেন। বর্ধিত সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (ফরিদপুর বিভাগ) শামা ওবায়েদ।

আসাদুজ্জামান বলেন, ‘কেউ কেউ বলছেন দেশে একটি গণপরিষদ হবে, গণপরিষদ করার দায়িত্ব কে দিয়েছে তাঁদের। আমরা বলব, সংস্কার বা গণপরিষদের নামে কোনো কালক্ষেপণ না করে যত দ্রুত সম্ভব এ দেশে একটি সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। গণপরিষদ নির্বাচনের নামে দেশে কোনোভাবেই জাতীয় নির্বাচনকে বিলম্বিত করা চলবে না, আর এটা আমরা হতেও দেব না।’

আসাদুজ্জামান রিপন আরও বলেন, হাসিনা গত ১৬ বছর ভোট করেনি বলেই বিদায় নিতে হয়েছে, পালাতে হয়েছে তাঁকে। দেশে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা আর যাতে ফিরিয়ে না আসে, সে জন্য দরকার একটি সুন্দর নির্বাচন।

বিএনপির বিশেষ এই বর্ধিত সভায় ফরিদপুর জেলাসহ বৃহত্তর ফরিদপুরের পাঁচটি জেলার দলীয় নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের উদ্দেশে আসাদুজ্জামান বলেন, দখল–বাণিজ্য তখনই আসে যখন দেশে গণতন্ত্র থাকে না। জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে, আগামী নির্বাচন অনেক কঠিন হবে মানুষের ভালোবাসা না পেলে জয়ী হওয়া সম্ভব নয়। এ জন্য দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়, এমন কাজ করা থেকে দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

‘শত শত বাস আসছে, পা ফেলানোর জায়গা নাই’

টাঙ্গাইলের কালিহাতীর নারান্দিয়ার বাসিন্দা শেফালী বেগম। সাভারের বাইপাইল এলাকার একটি গার্মেন্টসে চাকরি করেন তিনি। ঈদুল আজহার ছুটি শেষ হওয়ায় শনিবার (১৪ জুন) বিকেলে প্রায় চার ঘণ্টা কালিহাতীর এলেঙ্গায় বাসের জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন এই নারী। বাসে উঠতে না পেরে কর্মস্থলে যেতে তাকে উঠতে হয় পিকআপ ভ্যানে। ২০০ টাকার জায়গায় ৩৫০ টাকা ভাড়া দিয়ে রওনা হন গন্তব্যে। 

যাত্রা শুরুর আগে শেফালী বলেন, “গরম ও সড়কের ধুলাবালিতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। সড়কে চার ঘণ্টা দাঁড়িয় থেকে উপায় না পেয়ে পিকআপে করে ঢাকায় যেতে হচ্ছে।” 

শুধু শেফালী নয়, তার মতো লাখ লাখ মানুষ আজ দিনভর ভোগান্তি নিয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে দিয়ে ঢাকায় কর্মস্থলে ফিরছেন। শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে শত শত মানুষকে গণপরিবহনের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়। কেউ ২ ঘণ্টা, কেউ ৩ ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছিলেন গণপরিবহনের জন্য।

আরো পড়ুন:

গাজীপুরে মহাসড়কে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের চাপ

সিরাজগঞ্জে গাড়ির অপেক্ষায় কর্মস্থলে ফেরা মানুষ

জুলেখা বেগম বলেন, “আড়াই ঘণ্টার বেশি সময় বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। উত্তরবঙ্গ থেকে শত শত বাস আসছে, কিন্তু কোনো বাসেই পা ফেলানোর মতো জায়গা নাই। গরমও সহ্য হচ্ছে না।”

কর্মস্থলে ফিরতে বাসের অপেক্ষায় থাকা যাত্রীদের একাংশ 

ইকবাল আলী বলেন, “মহাসড়কে ভোগান্তি ছাড়া কিছুই দেখছি না। পরিবহনগুলোতে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।”

হারুন মিয়া নামে এক ট্রাক চালক বলেন, “সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত আসতে ১০ ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছে। স্বাভাবিক সময় লাগে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা।”

এর আগে, গতকাল শুক্রবার মধ্যরাত থেকে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ, একাধিক সড়ক দুর্ঘটনা ও যানবাহন বিকল হওয়ায় যমুনা সেতুর টোলপ্লাজা থেকে টাঙ্গাইলের রাবনা পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে তা কমে ১৪ কিলোমিটারে আসে। এছাড়া, মহাসড়কে গণপরিবহনের সংকট থাকায় কয়েক গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খোলা ট্রাক ও পিকআপে গন্তব্যে যাচ্ছে মানুষ। সব মিলিয়ে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।

শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪৯ হাজার ১৮২টি যানবাহন যমুনা সেতা পারাপার করেছে। এ থেকে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৪৩ লাখ ১৩ হাজার ২০০ টাকা।

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, “মহাসড়কে যানজট নিরসনে পুলিশ কাজ করছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।” 

ঢাকা/কাওছার/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘শত শত বাস আসছে, পা ফেলানোর জায়গা নাই’