পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার তেঁতুলিয়া নদীতে তরমুজভর্তি ট্রলারে ডাকাতির সময় লোকজনের পিটুনিতে নিহত ব্যক্তির পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁর পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

নিহত মো. কবির (৩৫) ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিণ বালিয়া গ্রামের মফিজল ব্যাপারীর ছেলে।

এদিকে ডাকাতির ঘটনায় গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় গলাচিপা উপজেলার চরকাজল ইউনিয়নের কপালবেরা গ্রামের তরমুজচাষি ভুক্তভোগী শহীদুল ইসলাম (৫৮) বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। এতে অজ্ঞাতনামা সাত থেকে আটজনকে আসামি করা হয়েছে।

বাউফল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রযুক্তির মাধ্যমে নিহত ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তাঁর পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

আরও পড়ুনবাউফলে তরমুজের ট্রলারে ডাকাতির সময় পিটুনিতে একজন নিহত, আহত ৩১৪ ঘণ্টা আগে

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার রাতে গলাচিপার চরকাজল থেকে শহীদুল ইসলাম ট্রলারে করে তরমুজ নিয়ে চাঁদপুর যাচ্ছিলেন। দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে তেঁতুলিয়া নদীর বাউফলের তালতলী মোহনা এলাকায় পৌঁছালে সাত থেকে আটজনের সশস্ত্র একটি ডাকাত দল ট্রলার নিয়ে তরমুজভর্তি ট্রলারটিকে ধাওয়া করে। একপর্যায়ে ধুলিয়া লঞ্চঘাট এলাকায় গিয়ে তারা তরমুজের ট্রলারের নিয়ন্ত্রণ নেয়। এ সময় ডাকাতেরা ট্রলারের চালকসহ ট্রলারে থাকা তিনজনকে কুপিয়ে আহত করে। তাঁরা এক ডাকাতকে জাপটে ধরে চিৎকার দিলে স্থানীয় লোকজন ছুটে আসেন। অন্য ডাকাতেরা পালিয়ে যায়। আটক ব্যক্তিকে স্থানীয় লোকজন পিটুনি দেন। খবর পেয়ে গতকাল ভোরে গুরুতর আহত ওই ব্যক্তিসহ ট্রলারের লোকজনকে উদ্ধার করে পুলিশ।

পিটুনিতে গুরুতর আহত ব্যক্তিকে প্রথমে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বেলা দেড়টার দিকে তিনি মারা যান।

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ডাকাতির ঘটনায় মামলা হয়েছে। আর নিহত ডাকাতের পরিচয় পাওয়ায় মামলার তদন্ত ও অন্য ডাকাতদের শনাক্ত করতে সুবিধা হবে। খুব কম সময়ের মধ্যে ডাকাতদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: তরম জ উপজ ল ব উফল

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারের প্রস্তাবিত নীতিতে ইন্টারনেটের দাম ২০% বাড়বে: আইএসপিএবি

সরকারের প্রস্তাবিত নীতিমালায় বিভিন্ন ফি ও চার্জ আরোপের কারণে গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেট সেবার খরচ আরও অন্তত ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে বলছেন দেশের ইন্টারনেট সেবাদাতারা।

ইন্টারনেটের দাম বাড়ার বিষয়টি দায়িত্বশীল নেতৃত্বের হাতে ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন সেবাদাতারা।

আজ সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন (আইএসপিএবি) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানায়।

সম্প্রতি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ফিক্সড টেলিকম সার্ভিস প্রোভাইডারদের (এফটিএসপি) জন্য একটি গাইড লাইনের খসড়া করেছে। এ নিয়ে আপত্তি তুলেছে আইএসপিএবি।

নতুন গাইডলাইনে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ রেভিনিউ শেয়ার এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলের জন্য ১ শতাংশ দিতে হবে। এ ছাড়া এফটিএসপি অপারেটরদের ক্রয়মূল্য ১৪ শতাংশ বাড়বে।

আইএসপিএবির সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, টেলিযোগাযোগ খাত নিয়ে সরকার তার উদ্দেশ্য থেকে বেরিয়ে এসেছে এবং জনগণের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না। সরকার ভুল পথে এগিয়ে যাচ্ছে।

আমিনুল হাকিম বিদ্যমান নীতির সঙ্গে প্রস্তাবিত নীতির তুলনামূলক উপস্থাপনা তুলে ধরে বলেন, বিদ্যমান নীতিতে সরকার এই খাত রেভিনিউ শেয়ারিং, সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল এবং ভ্যাটসহ ২১ দশমিক ৪৫ শতাংশ পায় কিন্তু নতুন নীততে তা ৪০ দশমিক ২৫ শতাংশ হবে। সরকারি নীতিতে শহর ও গ্রামে বৈষম্য বাড়বে।

আমিনুল হাকিম বলেন, বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসা সরকার বৈষম্য উপহার দিচ্ছে। সরকার একদিকে ইন্টারনেটের দাম কমানোর কথা বলছে, অন্যদিকে নিজেরা দাম বাড়াচ্ছে। তিনি আরও বলেন, স্টারলিংকের জন্য সরকার লাইসেন্স ফি ধরেছে ১০ হাজার ডলার অর্থাৎ ১২ লাখ টাকা। কিন্তু দেশের আইএসপিদের জন্য তা ২৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। তাঁর প্রশ্ন, স্টারলিংককে এত সুবিধা দেওয়ার কারণ কি?

সংবাদ সম্মেলনে আইএসপিএবি বলেছে, প্রস্তাবিত খসড়া গাইডলাইনে মোবাইল অপারেটরদের ফিক্সড ওয়্যারলেস একসেস এবং লাস্ট মাইল ফাইবার সংযোগের মাধ্যমে ফিক্সড কানেক্টিভিটি দেওয়ার স্পষ্ট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যা দেশীয় এবং নিজস্ব বিনিয়োগে গড়ে ওঠা আইএসপিগুলোর জন্য চরম অসম প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করবে। এ ছাড়া বড় প্রভাব পড়বে সাধারণ গ্রাহকের ওপর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ