চুয়েট থেকে বহিষ্কার ১৯ শিক্ষার্থী, সবাই ছাত্রলীগের
Published: 17th, March 2025 GMT
শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) ১৯ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এরা সবাই নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের চুয়েট শাখার নেতা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির ২৮১তম সভায় (জরুরি) এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আজ সোমবার শৃঙ্খলা কমিটির সদস্যসচিব ও ছাত্রকল্যাণ অধিদপ্তরের পরিচালক মো.
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির বৈঠক হয়েছে। শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের পাঠানো কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাবের পরিপ্রেক্ষিতে সভায় শাস্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
বহিষ্কৃত হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাতজনকে বিভিন্ন মেয়াদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বহিষ্কার করা হয়েছে। যার মধ্যে চারজনকে দুই বছর এবং বাকি তিনজনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। একই সঙ্গে তাদেরকে আবাসিক হল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
দুই বছরের জন্য বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন চুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিজয় হোসেন, সাবেক সহসভাপতি মো. ইমাম হোসেন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আজহারুল ইসলাম ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ তৌফিকুর রহমান। এক বছরের জন্য বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৌমিক জয়, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আশিকুল ইসলাম ও তাহসিন ইশতিয়াক।
এছাড়া, অপর ১২ শিক্ষার্থীকে আবাসিক হল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা হলেন চুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি তোফাইয়া রাব্বি, মো. সাদিকুজ্জামান, ইউসুফ আবদুল্লাহ, মো. তানভীর জনি, ইফতেখার সাজিদ ও শাকিল ফরাজী; সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তালহা জুবায়ের, মাহমুদুল হাসান, মো. রিফাত হোসাইন, মইনুল হক এবং সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইরফানুল করিম ও আবদুর রহমান।
এসব শিক্ষার্থীর বাইরে আরও দুইজনকে সতর্ক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তারা হলেন চুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি চিন্ময় কুমার দেবনাথ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রাকিব উদ্দিন চৌধুরী।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
হিন্দুদের ভাগ্যোন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামি সরকার: গোলাম পরওয়ার
স্বাধীনতার পর যারাই দেশ চালিয়েছে, তারা সবাই হিন্দুদের ব্যবহার করে শুধু নিজেদের ভাগ্যোন্নয়ন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেছেন, হিন্দুদের ভাগ্যোন্নয়ন ও অবকাঠামো উন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামি সরকার।
আজ শুক্রবার খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাধীনতা চত্বরে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর হিন্দু কমিটির উদ্যোগে হিন্দু সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গোলাম পরওয়ার এ কথা বলেন। তিনি বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাগ্যোন্নয়ন ও ডুমুরিয়া-ফুলতলাসহ দেশের সার্বিক অবকাঠামো উন্নয়নে এখন প্রয়োজন ইসলামি সরকার। যাঁরা দাঁড়িপাল্লার জোয়ার দেখে ভয়-হুমকি দিচ্ছে, তাদের হুমকিতে হিন্দুরা আর ভয় পাবে না। হিন্দুদের বাধা দিলে জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
গোলাম পরওয়ার বলেন, ৫৪ বছর যারা দেশ চালিয়েছে তারা সন্ত্রাস, দখলদারি ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে হিন্দুদের শোষণ করেছে। জামায়াত রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে দেশ থেকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও দখলদারদের নির্মূল করা হবে। তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়, আমরা সেই পরিবর্তন আনতে চাই। লাঙলের শাসন দেখেছি, ধানের শীষের শাসন দেখেছি, নৌকার শাসনও দেখেছি। একটি দলই বাকি—জামায়াতে ইসলামী, তার প্রতীক দাঁড়িপাল্লা।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী ছাত্রশিবিরের জয়ের বিষয়টি তুলে ধরে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরিবর্তনের বার্তা দিয়েছে, আগামীতেও সেই বার্তা জনগণ দেবে।’
চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে দেড় হাজার শহীদ ও ৪০ হাজার আহতের কথা উল্লেখ করে জামায়াতের এই নেতা বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে নভেম্বরে গণভোট দিয়েই ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে।
উপজেলা হিন্দু কমিটির সভাপতি বাবু কৃষ্ণ নন্দীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি দেব প্রসাদ মন্ডলের সঞ্চালনায় সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সহসভাপতি আবুল খায়ের, শোভনা ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি মো. মোসলেম উদ্দিন, শরাফপুর সর্বজনীন পূজা মন্দিরের গোঁসাই সাধু প্রমথ গাইন, ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু কমিটির সহসভাপতি হরিদাস মন্ডল, কানাই লাল কর্মকার ও প্রশান্ত কুমার মন্ডল, কোষাধ্যক্ষ গৌতম কুমার মন্ডল, পল্লীশ্রী মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুভাষ সরদার, মাগুরখালী ইউনিয়ন সহসভাপতি সুজিৎ কুমার সরকার, ধামালিয়া ইউনিয়ন সভাপতি গোবিন্দ কুন্ডু, রুদাঘয়া ইউনিয়ন সভাপতি বিপ্লব সরকার, রঘুনাথপুর ইউনিয়ন সভাপতি কার্তিক চন্দ্র সরকার, খর্ণিয়া ইউনিয়ন সভাপতি নারায়ণ রাহা, মাগুরঘোনা ইউনিয়ন সভাপতি বিশ্বনাথ দাস, সাহস ইউনিয়ন সভাপতি তন্ময় মন্ডল, ভান্ডারপাড়া ইউনিয়ন সভাপতি নিরঞ্জন রায়, রংপুর ইউনিয়ন সভাপতি তরুন কুমার মন্ডল, শোভনা ইউনিয়ন হিন্দু কমিটির মহিলা সম্পাদক প্রিয়ংকা মন্ডল, মাগুরখালী ইউনিয়ন সভাপতি প্রদীপ কুমার সরকার, আটলিয়া ইউনিয়ন সভাপতি অনিমেষ মন্ডল, গুটুদিয়া ইউনিয়ন সভাপতি মনোরঞ্জন মন্ডল, শরাফপুর ইউনিয়ন সভাপতি গোবিন্দ কুমার বিশ্বাস, শোভনা ইউনিয়ন সভাপতি স্বদেশ হালদার, ডুমুরিয়া ইউনিয়ন সভাপতি অরুন কুমার আচার্য প্রমুখ।
হিন্দু সম্মেলন ঘিরে ডুমুরিয়ার ১৪টি ইউনিয়ন থেকে বর্ণিল মিছিল এসে জমায়েত হয়। সমাবেশ শেষে একটি গণমিছিল ডুমুরিয়া সদরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
হিন্দু সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, নতুন প্রজন্মের প্রথম ভোট দাঁড়িপাল্লার পক্ষে হোক। আগামী নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ারকে সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত করতে সবার প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
মতুয়া সংঘের সভাপতি সুদীপ্ত কুমার সুন্দর মন্ডল বলেন, ‘আমরা আর সংখ্যালঘু বলে পরিচয় শুনতে চাই না। আমরা সবাই বাংলাদেশি। স্বাধীনতার পর কোনো সরকার হিন্দুদের দাবিতে কাজ করেনি। এবার প্রমাণ হবে, হিন্দু মানেই একটি নির্দিষ্ট দল নয়।’