আসাদুজ্জামান ফুয়াদকে গ্রেপ্তারের গুজব জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য: এবি পার্টি
Published: 24th, March 2025 GMT
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদকে গ্রেপ্তারের গুজব ছড়িয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। তিনি বলেছেন, আসাদুজ্জামান ফুয়াদকে গ্রেপ্তারের গুজব ছড়িয়ে আওয়ামীপন্থী বেশ কিছু ব্লগার গতকাল রোববার সারা রাত উত্তেজনা তৈরি করে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল দেশকে অস্থিতিশীল করা, সেনাবাহিনী ও ছাত্র-জনতাকে মুখোমুখি করে একটি জটিল পরিস্থিতি তৈরি করা।
আজ সোমবার বেলা দুইটায় রাজধানীর বিজয়নগরে এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে মজিবুর রহমান মঞ্জু এ কথা বলেন। দলের সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে গুজব ছড়িয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টির প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
আসাদুজ্জামান ফুয়াদকে নিয়ে একটি সংঘবদ্ধ গোষ্ঠীর পরিকল্পিত অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা জানান মজিবুর রহমান। তিনি বলেন, এত বড় গণ-অভ্যুত্থান ও বিপর্যয়ের পরও আওয়ামী লীগ এবং তার অন্ধ ও উগ্র সমর্থকদের শিক্ষা হয়নি। তিনি বলেন, রোববার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে আওয়ামীপন্থী বেশ কিছু ব্লগার নানা গুজব ছড়ায়। তারই অংশ হিসেবে আসাদুজ্জামান ফুয়াদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে—এ ধরনের গুজব ছড়ানো হয়।
এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, দেশকে অস্থিতিশীল করা, সেনাবাহিনী ও ছাত্র-জনতাকে মুখোমুখি করে একটি জটিল পরিস্থিতি তৈরি করা এবং গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ঘুরে দাঁড় করানোর যে সুযোগ এসেছে, সেটি নস্যাতের জন্য এই চক্র কাজ করছে।
আসাদুজ্জামান ফুয়াদের একটি পুরোনো বক্তব্যকে সামনে এনে আওয়ামী লীগপন্থী ব্লগারেরা বিভ্রান্তি সৃষ্টির প্রয়াস চালায় বলে অভিযোগ করেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান। তিনি জানান, আসাদুজ্জামান ফুয়াদের ওই বক্তব্য ছিল গণ-অভ্যুত্থানকালীন, অর্থাৎ ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দলের এক বিক্ষোভ সমাবেশে দেওয়া। সেই পুরোনো বক্তব্যটি সাম্প্রতিক সময়ের বক্তব্য বলে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রচার করে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা করা হয়। তিনি এর তীব্র নিন্দা জানান।
দেশবাসীকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে মজিবুর রহমান বলেন, এই সময়ে রাজনৈতিক দল ও নানা পক্ষের মধ্যে ব্যাপক অস্থিরতা চলছে। এই সময়টাতে দেশবাসীকে ধৈর্য ও ঐক্যবদ্ধভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান বি এম নাজমুল হক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন, সহকারী প্রচার সম্পাদক রিপন মাহমুদ প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর স থ ত
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।