কাল সারা দিনই গাজীপুরের কেপিজে হাসপাতালে ছিল মানুষের ভিড়। আজ সকালে তা কিছুটা কম। হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া তামিম ইকবালকে নিয়ে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা কিছুটা কমেছিল কালই।
হার্টে রিং পরানোর পর তামিমের জ্ঞান ফেরে, কথাও বলেছেন। আজ সকালে তামিমের কী অবস্থা? খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখন আগের চেয়ে অনেকটাই ভালো আছেন তামিম। তাঁকে নিয়ে থাকা শঙ্কাও ধীরে ধীরে কমছে।
কেপিজে হাসপাতালে তামিমের চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা এক চিকিৎসক প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিটেই এখন কিছুটা হাঁটার চেষ্টাও করছেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক। তাঁকে কিছু সময়ের জন্য কেবিনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে আত্মীয়–স্বজনের সঙ্গে দেখা করানোর জন্য। এরপর আবার নিবিঢ় পরিচর্যা কেন্দ্রে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।
কাল বিকেএসপিতে শাইনপুকুরের বিপক্ষে মোহামেডানের হয়ে ম্যাচ খেলতে এসে বুকে ব্যথা অনুভব করেন তামিম। পরে তাঁকে পাশেই কেপিজে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরই মধ্যে ঢাকায় যোগাযোগ করে তামিমের জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স উড়িয়ে নেওয়া হয় বিকেএসপির মাঠে। কিন্তু কেপিজে হাসপাতাল থেকে বিকেএসপিতে ফিরে হেলিকপ্টারে ওঠার আগেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন তামিম।
শারীরিক অবস্থার অবনতির কারণে তোলা যায়নি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সেও। এরপর আবার কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতালে আনার পর তাঁর বুকে ব্লক ধরা পড়ে। জরুরি ভিত্তিতে এরপর রিংও পরানো হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চুয়েটে দিনভর তারুণ্যের ‘তর্ক-যুদ্ধ’
তীব্র উত্তেজনা চলছে তাইওয়ান ও চীনের মধ্যে। একদিকে তাইওয়ানের স্বাধীনতা রক্ষার আকাঙ্ক্ষা, অন্যদিকে চীনের ভূখণ্ডগত অখণ্ডতা রক্ষার দৃঢ় অবস্থান। এর মাঝখানে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা ঘিরে তৈরি হচ্ছে বৈশ্বিক কূটনৈতিক টানাপোড়েন। সামরিক মহড়া, যুদ্ধজাহাজের টহল আর রাজনৈতিক হুমকিতে যখন অঞ্চলজুড়ে উত্তেজনা বাড়ছে, ঠিক তখনই এসব জটিল আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে তর্ক-যুদ্ধে মেতে ওঠেন তরুণ বিতার্কিকেরা।
আজ শুক্রবার চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল ভবনে বিতার্কিকদের দেখা গেল। তাইওয়ান ও চীনের সাম্প্রতিক উত্তেজনায় যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা, অন্তর্বর্তী সরকারে ছাত্র ও সমন্বয়কের অন্তর্ভুক্তির ভালো-মন্দ—এমন আরও নানা আলোচিত বিষয় নিয়ে বিতার্কিকেরা যুক্তি, পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন করেন। এই বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে চুয়েট ডিবেটিং সোসাইটি। আয়োজনের সহযোগী পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রয়েছে প্রথম আলো।
এবারের আয়োজনের নাম ছিল ‘তারুণ্য উৎসব’। এতে দেশের ২৮ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২ দল অংশ নেয়। তিন দিনের আয়োজনে গতকাল ছিল দ্বিতীয় পর্ব। সকাল ৯টায় শুরু হয়ে এ প্রতিযোগিতা চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। যুক্তির এই লড়াই চলে চারটি ধাপে। প্রতিটি ধাপ শুরুর ১৫ মিনিট আগে প্রতিযোগীদের বিতর্কের বিষয় সম্পর্কে জানিয়ে দেওয়া হয়। এরপর চটপট যুক্তি সাজাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন বিতার্কিকেরা। পরে তাঁদের মধ্য থেকে বাছাই করা ৮টি দল নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় কোয়ার্টার ফাইনাল।
আয়োজকেরা জানান, কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিজয়ী চারটি দল নিয়ে আজ শনিবার অনুষ্ঠিত হবে সেমিফাইনাল রাউন্ড। এরপর সেমিফাইনালের বিজয়ী দুটি দল সরাসরি অংশগ্রহণ করবে চূড়ান্ত পর্বে। চূড়ান্ত পর্বে বিজয়ী দলের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন অতিথিরা। এর আগে গত বৃহস্পতিবার প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এদিন বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তনে বই বিনিময়, ক্যাম্পাসে বৃক্ষরোপণ ও গুপ্তধন খোঁজা প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শুরু হয় আয়োজন।
চুয়েট ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি গোলাম মুরাদ প্রথম আলোকে বলেন, বিতর্কের মাধ্যমে নানা বিষয়ে জানার সুযোগ সৃষ্টি হয়। বিতর্ক আমাদের চিন্তা, চেতনা ও মেধা বিকশিত করে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতার্কিকদের অংশগ্রহণের ফলে নতুন সম্পর্ক গড়ে ওঠে। শিক্ষার্থীদের এ সুযোগ তৈরি করে দিতেই নবমবারের মতো এই বিতর্ক উৎসব বা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।
প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে এসেছিলেন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস। আলাপকালে তিনি বলেন, এ রকম প্রতিযোগিতায় সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিতর্ক করার ফলে জ্ঞানের পরিধি সমৃদ্ধ হয়। পাশাপাশি অনেকের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।
দিনভর বিতর্ক শেষে সন্ধ্যায় আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে নাচ, গান, আবৃত্তি, নাটকসহ বিভিন্ন পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করেন শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি কনসার্টে মঞ্চ মাতায় জনপ্রিয় গানের দল ‘সহজিয়া’ ও ‘লেভেল ফাইভ’।