জয়পুরহাটে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ইফতার মাহফিলে নিমন্ত্রণ পেয়ে যোগ দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা কাজী রাব্বীউল হাসান (মোনেম)। গতকাল সোমবার শহরের স্বপ্নছায়া কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তিনি এনসিপিকে সমর্থন দিয়ে বক্তব্যও দেন। এ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীসহ আন্দোলনকারীদের মধ্যে সমালোচনা শুরু হয়েছে।

কাজী রাব্বীউল হাসান জয়পুরহাট-২ (আক্কেলপুর-ক্ষেতলাল-কালাই) আসনের জাসদ মনোনীত সাবেক সংসদ সদস্য। পরে জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। পরে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হন। এখন তিনি কালাই উপজেলা আওয়ামী লীগের ১ নম্বর সদস্য।

ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনীতিবিদ, শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্য, ছাত্র-শ্রমিক, পেশাজীবী, আলেম-ওলামা ও বিশিষ্ট নাগরিকদের সম্মানে গতকাল জয়পুরহাটে আলোচনা সভা, ইফতার ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে এনসিপি। এতে রাব্বীউল হাসানকে নিমন্ত্রণ করা হয়। তিনি নিমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে সেখানে বক্তব্যও দেন।

ইফতার মাহফিলে রাব্বীউল হাসানের উপস্থিতি ও বক্তব্য দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলার আহ্বায়ক হাসিবুল হক (সানজিদ)। তিনি ফেসবুকে দুটি ছবি সংযুক্ত করে একটি পোস্ট দিয়েছেন। একটি সাবেক হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আরিফুর রহমানসহ দলটির জেলার নেতাদের সঙ্গে রাব্বীউল হাসান আছেন। অন্যটিতে গতকাল এনসিপির ইফতার মাহফিলে রাব্বীউল হাসান বক্তব্য দিচ্ছেন।

পোস্টে হাসিবুল হক উল্লেখ করেন, ‘জয়পুরহাটে জাতীয় নাগরিক পার্টির স্বঘোষিত সংগঠকদের নিমন্ত্রণে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি, কালাই উপজেলা আওয়ামী লীগের ১ নম্বর সদস্য ও জাসদের সাবেক সংসদ সদস্য রাব্বীউল হাসান মোনেম। .

.. একটি কুচক্রী মহল যে নাগরিক পার্টির নাম খারাপ করে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতেছে, এটা কী আপনাদের চোখে পড়বে না? আশা করি, সদুত্তর পাব। জয়পুরহাটের বুকে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন হতে দেব না ইনশা আল্লাহ।’

হাসিবুলের পোস্টে আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২১টি মন্তব্য করেছেন বিভিন্ন লোকজন। জান-ই আলম নামের একজন মন্তব্য করেছেন, ‘এবার তো সহ্যের বাঁধ ভেঙে যাচ্ছ।’ জুয়েল মণ্ডল নামের আরেকজন লিখেছেন, ‘আওয়ামী দোসরদের শক্ত হাতে দমন করা জরুরি।’

এ বিষয়ে কাজী রাব্বীউল হাসান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তিনি দাওয়াত পেয়ে সেখানে যান। নতুন দলকে অভিনন্দন জানিয়ে বক্তব্য দেন। রাজনৈতিক দলের মধ্যে যদি সহমর্মিতা না থাকে, তাহলে হানাহানি কমবে না।

জানতে চাইলে হাসিবুল হক প্রথম আলোকে বলেন, রাব্বীউল হাসান আওয়ামী লীগের নেতা। এনসিপির ইফতার মাহফিলে তাঁকে নিমন্ত্রণ করে আনা হয়েছিল। আওয়ামী লীগ নেতাদের পুনর্বাসন করতে ছাত্র-জনতা রক্ত দেয়নি। এটা সাংঘর্ষিক।

জানতে চাইলে এনসিপির জেলার সংগঠক ওমর আলী প্রথম আলোকে বলেন, বিশিষ্ট নাগরিক হিসেবে কাজী রাব্বীউল হাসানকে দাওয়াত করা হয়েছিল। তিনি তাঁদের ইফতার মাহফিলে এসেছিলেন। বক্তব্যও দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের কমিটিতে কাজী রাব্বীউল হাসানের নাম নেই। এটা নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ব ব উল হ স ন এনস প র সদস য আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

মতলবের দুই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি-দখলদারির অভিযোগ, দল থেকে বহিষ্কার

চাঁদপুরের মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার বিএনপির দুই নেতাকে দলের সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

চাঁদাবাজি, দখলদারি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানা ধরনের অপকর্মে লিপ্ত থাকার অভিযোগে ওই দুজনের বিরুদ্ধে এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

বহিষ্কৃত নেতারা হলেন মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পৌর বিএনপির সহসভাপতি আবদুল মান্নান লস্কর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া। এর মধ্যে মতলব উত্তরের আবদুল মান্নান লস্করকে চাঁদাবাজির মামলায় গত সোমবার রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি এখন কারাগারে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আবদুল মান্নান লস্কর ও আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়াকে চাঁদাবাজি, দখলদারি ও মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত থাকার অভিযোগে দলের প্রাথমিক সদস্যসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই একই অভিযোগে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ইমাম হোসেন গাজীকেও দলের সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।  

এ ব্যাপারে চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহম্মেদের (মানিক) মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে মতলব উত্তর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল হক ও মতলব দক্ষিণ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম বলেন, ওই দুই নেতাকে বহিষ্কারের বিষয়টি জেনেছেন। তবে এ ব্যাপারে  চিঠি এখনো পাননি। যেকোনো বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। এটি অন্যান্য নেতার জন্যও একটি বার্তা ও শিক্ষা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছাত্রত্বের ভুয়া পরিচয় দেন সভাপতি, কমিটি ঘোষণার দিন শর্ট কোর্সে ভর্তি হন সম্পাদক
  • তিন বাহিনীর প্রধান ও দুই গোয়েন্দাপ্রধান নিয়োগের ক্ষমতা সরাসরি রাষ্ট্রপতির হাতে দেওয়ার প্রস্তাব ঐকমত্য কমিশনের
  • ছাত্রদলের আংশিক কমিটি ঘোষণা, নিয়মিত ছাত্রত্ব নেই সভাপতি ও সম্পাদকের
  • মতলবের দুই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি-দখলদারির অভিযোগ, দল থেকে বহিষ্কার
  • প্রাথমিক পর্যায়ে ঐকমত্যের খসড়া আজকালের মধ্যে পাবে রাজনৈতিক দলগুলো: আলী রীয়াজ