পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় জমি ও বালুর ব্যবসা নিয়ে বিরোধের জেরে আবু সালেহ (৩৭) একজনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত একজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার গৌরীপুর ইউনিয়নের পাতলাখালী গ্রামের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত আবু সালেহ (৩৭) পাতলাখালী গ্রামের মৃত আব্দুল খালেক হাওলাদারের ছেলে। আবু সালেহ এর ছোট ভাই আবুল বাশার রুবেল (২৭) এর একটি পা কুপিয়ে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে ভর্তি করা রয়েছে।

এ ঘটনায় রেক্সোনা বেগম নামের একজনকে আটক করেছে থানা পুলিশ। 

নিহত আবু সালেহ এর বোন আফসানা মিমি জানান, রাত আড়াইটার দিকে আমার চাচাতো ভাই শহিদুল ইসলাম সুমন, রুম্মান তাদের সহযোগী মো.

নজরুল ইসলাম, বাবুল চৌকিদার, মো. নান্না, মো. লিটন মো. মিরাজ, মো. সবুজ, মো. মাসুম শরিফসহ অনুমান ১০-১৫ জন দলবদ্ধ হয়ে আবুল বাশার রুবেলের ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। তার চিৎকারে বড় ভাই আবু সালেহ, স্ত্রী সোনালি আক্তার ঘর থেকে বের হয়ে রুবেলের ঘরের কাছে গেলে আবু সালেহকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে পার্শ্ববর্তী ডোবায় ফেলে রাখে।

নিহত আবু সালেহ’র স্ত্রী লাবনী আক্তার জানান, আমরা ঘরে ঘুমিয়েছিলাম, রাতে আমার দেবর রুবেলের চিৎকার শুনে আমার স্বামী আবু সালেহ ও আমি ঘরে থেকে বের হয়ে তার ঘরে গিয়ে দেখি সুমন ও আরো লোকজন রুবেলকে কুপিয়ে ফেলে রাখে। এসময় সন্ত্রাসীরা আমাদের সামনে পেয়ে আমার স্বামী আবু সালেহকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে শুরু করে। আমার পায়েও হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে ঘরে প্রবেশ করে। আলমারি ভেঙে সম্প্রতি সুপারি বিক্রির ১ লাখ টাকা ও দুই ভরি ওজনের বিভিন্ন স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, আমরা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে ভান্ডারিয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আবু সালেহ এবং আবুল বাশার রুবেলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান কর্তব্যরত চিকিৎসক। পথেই মারা যান আমার স্বামী। মো. আবুল বাশার রুবেলকে মুমূর্ষু অবস্থায় শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা রয়েছে।

ভান্ডারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহমেদ আনওয়ার জানান, জায়গা জমি ও বালুর ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে দুই ভাইকে কুপিয়ে আহত করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। আমরা রাতেই তাদের উদ্ধার করে ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আবু সালেহ এবং আবুল বাশার রুবেলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পথে আবু সালেহ মারা যায়। এ ঘটনায় সুমনের স্ত্রী রেক্সোনা বেগমকে আটক করা হয়েছে। বাকী অপরাধীদের ধরতে আমরা অভিযান চালাচ্ছি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হত য ম ড ক ল কল জ হ স বর শ ল এ ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

মাগুরায় চোর সন্দেহে একজনকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলায় চুরির অভিযোগে এক ব্যক্তিকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলার জাঙ্গালিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বেলা পৌনে ১১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

নিহত ব্যক্তির নাম মো. ইসরাফিল (৪০)। তাঁর বাড়ি উপজেলা সদরের জাঙ্গালিয়া গ্রামে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আজ ভোরে জাঙ্গালিয়া গ্রামে তিনটি মুঠোফোন ও নগদ ১ হাজার ৬০০ টাকা চুরি হয়। সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে এলাকাবাসী ইসরাফিলকে নিজ বাড়ি থেকে ধরে এনে মারধর করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

ইসরাফিলের পরিবারের একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কয়েক দিন আগে পূর্ব নারায়ণপুর গ্রামের ইমরুল নামের এক ব্যক্তির মুঠোফোন চুরি হয়। সে সময় থেকেই ইসরাফিলকে সন্দেহ করা হচ্ছিল। আজ এলাকায় আরও একটি চুরির ঘটনা ঘটলে স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে তাঁকে বাড়ি থেকে ধরে এনে পিটিয়ে হত্যা করেন।

মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুর রহমান বলেন, একরামুল নামের এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে তিনটি মুঠোফোন ও টাকা চুরি হয়। ওই ঘটনায় ইসরাফিলকে অভিযুক্ত করে স্থানীয় লোকজন পিটুনি দেন। পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর বিরুদ্ধে আগে কয়েকটি চুরির অভিযোগ থাকলেও বর্তমানে কোনো মামলা নেই। এ ঘটনায় তাঁর পরিবার থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লক্ষ্মীপুরে মামলায় জড়ানোর প্রতিবাদ ভুক্তভোগী পরিবারের
  • মাগুরায় চোর সন্দেহে একজনকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা