চীনের সেরা ১০ স্কলারশিপ: টিউশন ফি মওকুফ-আবাসন-চিকিৎসার সঙ্গে মিলবে মাসিক ভাতাও
Published: 26th, March 2025 GMT
প্রতিবারের ন্যায় ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষেও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বিনা খরচে উচ্চশিক্ষার সুযোগ দিচ্ছে চীন সরকার। দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো মেধাবীদের জন্য স্কলারশিপের ব্যবস্থা রেখেছে। চীনের এমন স্কলারশিপ ১০টি। এগুলোর আওতায় টিউশন ফি মওকুফসহ আবাসন, চিকিৎসার সুবিধা এবং মাসিক ভাতারও সুবিধা রয়েছে। দেশটিতে অধ্যয়নের এমন সুবর্ণ সুযোগ আছে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্যও। ২০২৫ সালে চীনের উচ্চশিক্ষায় শীর্ষ ১০টি স্কলারশিপের বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
১.
সিএসসি বৃত্তি প্রকল্পটির পূর্ণরূপ Chinese Scholarship Council। এর মাধ্যমে বিদেশি শিক্ষার্থীরা চীনের ২৮০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক, মাস্টার্স ও পিএইচডি অধ্যয়নের সুযোগ পান। চীনা সরকার এ স্কলারশিপের অধীন শিক্ষার্থীদের আবাসন ও মৌলিক স্বাস্থ্যবিমা প্রদান করে। প্রদেয় মাসিক ভাতার পরিমাণ সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৫০০ চায়নিজ ইউয়ান, যা বাংলাদেশি টাকায় ৫৮ হাজার ৬৪৫ টাকা (১ চায়নিজ ইউয়ান = ১৬ দশমিক ৭৬ বাংলাদেশি টাকা) সমতুল্য। তবে ইতিমধ্যে যে শিক্ষার্থীরা চীনের অন্য কোনোও বৃত্তি পেয়েছেন, তাঁদের জন্য এ বৃত্তি প্রযোজ্য নয়। আবেদনের জন্য নিবন্ধন করতে হবে সিএসসি পোর্টালে। যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ইচ্ছুক, সেখানে পৃথকভাবে আবেদন জমা দিতে হবে।
২. তিয়ানজিন গভর্নমেন্ট স্কলারশিপ (Tianjin Government Scholarship)
এককভাবে নানকাই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বিদেশি শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয় তিয়ানজিন গভর্নমেন্ট স্কলারশিপ। স্নাতক, মাস্টার্স ও পিএইচডি পর্যায়ের জন্য উন্মুক্ত এ প্রকল্পে মাসিক সর্বোচ্চ ২ হাজার ইউয়ান (৩৩ হাজার ৫১১ টাকা) পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা পাবেন শিক্ষার্থীরা।
আবেদনের শেষ সময় সাধারণত মে মাসের শেষের দিকে হয়ে থাকে। আবেদনকারীদের এ লিংকে আবেদন সম্পন্ন করতে হবে। নানকাই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির চূড়ান্ত অনুমোদনই শিক্ষার্থীদের Tianjin Government Scholarship প্রাপ্তির প্রধান মাপকাঠি। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে লিংকে।
আরও পড়ুনইউনিভার্সিটি অব লুক্সেমবার্গের বৃত্তি, স্নাতক–স্নাতকোত্তরে প্রয়োজন নেই আইইএলটিএস২৫ মার্চ ২০২৫৩. সাংহাই গভর্নমেন্ট স্কলারশিপ (Shanghai Government Scholarship)
চীনের প্রাদেশিক সরকার কর্তৃক পরিচালিত অনুদানগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে সাংহাই গভর্নমেন্ট স্কলারশিপ। পিএইচডি, মাস্টার্স ও স্নাতকের ক্ষেত্রে প্রদান করা এই অনুদান তিনটি ক্যাটাগরিতে বিভক্ত। টাইপ এ (মাস্টার্স বা পিএইচডি), টাইপ বি (স্নাতক) ও টাইপ সি (দীর্ঘমেয়াদি উচ্চতর অধ্যয়ন, যেমন চীনা ভাষা কোর্স)।
সাংহাই সরকার এগুলোর মধ্যে দুই ক্যাটাগরিতে স্কলারশিপ প্রদান করে। টাইপ ‘এ’–তে ফুল ফান্ডিং দেয় (ভর্তির ফি, আবাসন, চিকিৎসা বিমা ও মাসিক ভাতা মেলে) এবং টাইপ ‘বি’–তে আংশিক ফান্ডিং (শুধু টিউশন ফি ও স্বাস্থ্যবিমা)।
সাংহাই গভর্নমেন্ট স্কলারশিপে চীনা ভাষা কোর্সের মতো দীর্ঘমেয়াদি কোনো অধ্যয়নের জন্য প্রযোজ্য নয়। ডিগ্রি বিশেষে স্কলারশিপের মূল্যমান ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ ইউয়ান (৪১ হাজার ৮৮৯ থেকে ৫৮ হাজার ৬৪৫ টাকা) পর্যন্ত।
আবেদনের সাধারণ সময় জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত। আবেদনের জন্য ঢুঁ মারতে হবে তে।
৪. বেইজিং গভর্নমেন্ট স্কলারশিপ (Beijing Government Scholarship)
চীনের প্রাদেশিক সরকারে প্রথম স্কলারশিপ কর্মসূচি হচ্ছে বেইজিং গভর্নমেন্ট স্কলারশিপ। সরাসরি বেইজিং সরকার থেকে হওয়া এ অর্থায়নের একমাত্র সুবিধাভোগী হচ্ছে পিএইচডি, মাস্টার্স ও স্নাতক শিক্ষার্থীরা। স্কলারশিপের আওতায় আর্থিক সহায়তা হিসেবে সর্বোচ্চ ৪০ হাজার ইউয়ান মিলবে। সাধারণত প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু করে জুনের মধ্যে আবেদন কার্যক্রম শেষ করা হয়।
বেইজিং গভর্নমেন্ট স্কলারশিপের সুনির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তালিকা পাওয়া যাবে এ লিংকে। এখান থেকে একটি বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনের পর সেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটেই পাওয়া যাবে আবেদনের প্রক্রিয়া।
আরও পড়ুনইউনেসকোতে ১৪ ক্যাটাগরিতে ইন্টার্নশিপ, বয়স ২০ হলেই আবেদন ১৮ মার্চ ২০২৫৫. হুবেই গভর্নমেন্ট স্কলারশিপ (Hubei Government Scholarship)
হুবেই গভর্নমেন্ট স্কলারশিপও স্নাতক, মাস্টার্স ও পিএইচডি পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য। স্নাতক শিক্ষার্থীরা বছরে ১০ হাজার ইউয়ান, মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা ১৫ হাজার ইউয়ান ও পিএইচডি শিক্ষার্থীরা পান ২০ হাজার ইউয়ান। সাধারণ গবেষণা স্কলারশিপ হিসেবে বিভিন্ন মেয়াদের ভিত্তিতে ৫ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ২০ হাজার ইউয়ান দেওয়া হয় শিক্ষার্থীদের।
স্কলারশিপের জন্য আবেদন গ্রহণ করা হয় প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে। আবেদনের জন্য Hubei Government Scholarship বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করার পর সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে আবেদন করতে হবে।
৬. সিআইএস স্কলারশিপ (CIS Scholarship)
চীনের শিক্ষা খাতে সরকারি এ প্রকল্পের পূর্ণরূপ Confucius Institute Scholarship–CIS। এর আওতাভুক্ত প্রোগ্রামগুলোর মধ্যে রয়েছে চীনের বাইরের শিক্ষার্থীদের জন্য পিএইচডি গবেষণা, গবেষণামূলক সফর, আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ এবং চীনা ভাষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক কোর্স। ১৫০টির বেশি চীনা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বৃত্তিতে পড়াশোনা করা যায়।
সিআইএস স্কলারশিপে টিউশন ফি, আবাসন ব্যয়, চিকিৎসা বিমা ও মাসিক ভাতা পাবেন শিক্ষার্থীরা। স্নাতক বা চীনা ভাষা ও সংস্কৃতি কোর্স গ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা মাসে ২ হাজার ৫০০ ইউয়ান পেয়ে থাকেন। মাস্টার্স পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য মাসে নির্ধারিত তিন হাজার ইউয়ান।
সাধারণত মে ও নভেম্বরের শুরুর দিকে দুটি পৃথক শিডিউলে আবেদন গ্রহণ করা হয়। অনলাইনে আবেদনের সাইট।
আরও পড়ুনরুয়েটে পিএইচডি-পিজিডি কোর্স, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরও সুযোগ২২ ঘণ্টা আগে৭. ইউনান প্রোভিন্সিয়াল গভর্নমেন্ট স্কলারশিপ (Yunnan Provincial Government Scholarship)
বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের অধীন দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এই স্কলারশিপ। এর নেপথ্যের প্রতিষ্ঠান হচ্ছে সিএসসি। এ ব্যবস্থায় স্নাতক, মাস্টার্স, ডক্টরেট, প্রশিক্ষণ ও স্বল্পমেয়াদি কোর্সের জন্য আবেদন করা যায়।
ফুল ফান্ডিংয়ের এই প্রকল্পে রয়েছে টিউশন ফি মওকুফ, বিনা মূল্যে অন-ক্যাম্পাস আবাসন, মাসিক ভাতা, চিকিৎসা বিমা ও সুরক্ষা সুবিধা। সাধারণত এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলে আবেদন গ্রহণ কর্মসূচি।
ইউনান প্রোভিন্সিয়াল গভর্নমেন্ট স্কলারশিপে আবেদনের প্ল্যাটফর্ম ইউনান নরমাল ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাইট।
৮. জিনজিয়াং উইঘুর অটোনমাস রেজিন গভর্নমেন্ট স্কলারশিপ (Xinjiang Uygur Autonomous Region Government Scholarship)
স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল সরকার পরিচালিত এ বৃত্তি প্রকল্পে ব্যাচেলর, মাস্টার্স ও পিএইচডির পাশাপাশি চীনা ভাষা কোর্সও বিনা খরচে অধ্যয়ন করা যায়। পূর্ণ অর্থায়নের এ সুবিধায় জীবনযাত্রার ভাতা, আবাসন, চিকিৎসা বিমা ও টিউশন ফি অন্তর্ভুক্ত।
সাধারণত এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত আবেদনের সুযোগ থাকে। স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলটির অধীন নির্ধারিত কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কটি বিষয়ের জন্য এই আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। এ তথ্যসহ স্কলারশিপের যাবতীয় কার্যক্রমের জন্য রয়েছে স্বতন্ত্র স্কলারশিপ ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম।
জিনজিয়াং উইঘুর অটোনমাস রেজিন গভর্নমেন্ট স্কলারশিপের আবেদনের প্ল্যাটফর্ম। একইভাবে আবেদন জমা দিতে হয় জিনজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে।
আরও পড়ুনহার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ লাখ ডলার আয়ের পরিবারের জন্য টিউশন ফি ছাড়াই পড়াশোনার সুযোগ১৮ মার্চ ২০২৫৯. নানজিং গভর্নমেন্ট স্কলারশিপ (Nanjing Government Scholarship)
নানজিং সরকারের এই স্কলারশিপ বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্নাতক ও মাস্টার্স পর্যায়ে আংশিক ফান্ডিং দেয়। এর পাশাপাশি অন্য কোনো সংস্থার বৃত্তি একত্রে গ্রহণ করার নিয়ম নেই।
এ বৃত্তি শুধু নানজিং ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে দেওয়া হয়। স্নাতক শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতি একাডেমিক বছরে সরকার থেকে আসে ১০ হাজার ইউয়ান। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অতিরিক্ত সহায়তা হিসেবে আসে পাঁচ হাজার ইউয়ান। মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিবছর ২০ হাজার ইউয়ান করে পান। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় তাঁদের শুধু জীবনযাত্রার ব্যয়টা মওকুফ করে।
আবেদন কার্যক্রম সাধারণত চলে এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত। আগ্রহী প্রার্থীরা এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। এ সময় প্রোগ্রাম হিসেবে নির্বাচন করতে হয় ‘চায়নিজ লোকাল গভর্নমেন্ট স্কলারশিপ’।
১০. ইয়াংজৌ ইউনিভার্সিটি স্কলারশিপ (Yangzhou University Scholarship)
ইয়াংজৌ ইউনিভার্সিটি বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের পূর্ণ অর্থায়ন দেয় এ বৃত্তির আওতায়। একাডেমিক ডিগ্রিগুলোর মধ্যে রয়েছে স্নাতক, মাস্টার্স ও পিএইচডি। এ প্রকল্পের মধ্যে সুবিধা হিসেবে রয়েছে টিউশন ফি মওকুফ, আবাসন ও মাসিক ভাতা।
প্রার্থীদের জানুয়ারি থেকে মে মাসের মাঝামাঝিতেই আবেদনের প্রক্রিয়া শেষ করতে হয়।
ইয়াংজৌ ইউনিভার্সিটি স্কলারশিপে স্নাতক পর্যায়ে শুধু আবাসনের ব্যয় ও টিউশন ফি মওকুফ করা হয়। মাস্টার্সে টিউশন ও আবাসন ব্যয় ছাড়াও প্রতি মাসে ১ হাজার ৫০০ ইউয়ান করে জীবিকা ভাতাও মেলে। পিএইচডিতে টিউশন ও আবাসন ব্যয়ের পাশাপাশি গবেষকেরা মাসে ২ হাজার ৫০০ ইউয়ান পর্যন্ত জীবিকা ভাতা পান। আবেদনের জন্য প্রার্থীদের এ ওয়েবসাইটে ঢুঁ মারতে হবে।
আরও পড়ুনইতালির বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি, আবেদন স্নাতক-স্নাতকোত্তরে২৪ মার্চ ২০২৫১০টি চায়না স্কলারশিপ চীনের শিক্ষা খাতে দেশটির সরকারের অবদানকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরে। বৃত্তি প্রকল্পগুলোর প্রতিটিই ব্যাচেলর থেকে শুরু করে পিএইচডি পর্যন্ত সব পর্যায়ের মেধাবীদের জন্য প্রযোজ্য।
এগুলোর সরাসরি প্রধান সরকারি প্রকল্পভুক্ত হচ্ছে সিএসসি ও সিআইএস স্কলারশিপ। তিয়ানজিন, শাংহাই, বেইজিং, হুবেই, ইউনান প্রভিন্সিয়াল, জিনজিয়াং উইঘুর অটোনমাস রেজিন এবং নানজিং গভর্নমেন্ট স্কলারশিপ পরিচালিত হয় প্রাদেশিক সরকারের অধীনে। তালিকার একমাত্র বেসরকারি উদ্যোগ হচ্ছে ইয়াংজৌ ইউনিভার্সিটি স্কলারশিপ। এই চায়নিজ স্কলারশিপগুলোর কোনোটি বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা গ্রহণে উৎকৃষ্ট বাহক। তথ্যসূত্র: ইউএনবি নিউজ
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র শ ক ষ র থ দ র জন য ম স ট র স ও প এইচড ইউন ভ র স ট দ র জন য প র জন য প র পর য য় র প রকল প স ধ রণত সরক র র ট উশন ফ র আওত ইউন ন মওক ফ ন করত স এসস
এছাড়াও পড়ুন:
ইউটিউবে কম রেজল্যুশনের ভিডিও এখন দেখাবে এইচডি মানে
ভিডিও দেখা মানেই এখন ইউটিউব। একসময় এই মাধ্যমে শুধু ২৪০পি বা ৩৬০পি রেজল্যুশনের ভিডিওই দেখা যেত। সময়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এইচডি, ফুল এইচডি ও ৪কে রেজল্যুশন। যা ইউটিউবে ভিডিও দেখার অভিজ্ঞতাকে করেছে আরও প্রাণবন্ত। এবার বড় পর্দায় ভিডিওর মান আরও উন্নত করতে গুগল মালিকানাধীন মাধ্যমটি চালু করছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নির্ভর নতুন সুবিধা ‘সুপার রেজল্যুশন’।
নতুন এই সুবিধার মাধ্যমে ইউটিউব স্বয়ংক্রিয়ভাবে কম রেজল্যুশনে আপলোড করা ভিডিওর মান উন্নত করবে। ২৪০পি থেকে ৭২০পি পর্যন্ত ভিডিওগুলো এআই প্রযুক্তির সহায়তায় রূপান্তরিত হবে এইচডি মানে। বড় পর্দায়, বিশেষ করে স্মার্ট টিভিতে, যাতে ভিডিও ঝাপসা বা বিকৃত না দেখায়, সেটিই এই প্রযুক্তির মূল উদ্দেশ্য।
ইউটিউব জানিয়েছে, ‘সুপার রেজল্যুশন’ ভিডিওর প্রতিটি ফ্রেম বিশ্লেষণ করে ছবির সূক্ষ্মতা ও রঙের ভারসাম্য ঠিক করবে। ফলে পুরোনো বা নিম্নমানের ভিডিও আরও স্পষ্ট ও প্রাণবন্তভাবে দেখা যাবে।
প্রাথমিকভাবে এই সুবিধা ১০৮০পি ভিডিওর জন্য চালু করা হচ্ছে। ধীরে ধীরে এটি ৪কে রেজল্যুশনেও কাজ করবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ব্যবহারকারীরা চাইলে এই সুবিধা বন্ধ রাখার সুযোগও পাবেন। এতে ভিডিওর মূল রেজল্যুশন অপরিবর্তিত থাকবে এবং নির্মাতারা আসল ফাইল অক্ষত রাখতে পারবেন।
ভিডিওর মান উন্নয়নের পাশাপাশি ইউটিউব হোমপেজেও আসছে নতুন পরিবর্তন। এখন ব্যবহারকারীরা হোমপেজ থেকেই কোনো চ্যানেলের ভিডিও প্রিভিউ আকারে দেখতে পারবেন। পাশাপাশি মাধ্যমটির ‘শো’ বিভাগ নতুনভাবে সাজানো হচ্ছে, যাতে ধারাবাহিক সিরিজ বা সম্পর্কিত ভিডিও সহজে দেখা যায়। নির্মাতাদের জন্য বাড়ছে থাম্বনেইল আপলোডের সীমা। আগে যেখানে থাম্বনেইলের সর্বোচ্চ ফাইলের আকার ছিল ২ মেগাবাইট, এখন তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৫০ মেগাবাইট। এতে নির্মাতারা ৪কে রেজল্যুশনের উচ্চমানের ছবি থাম্বনেইল হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন।
পাশাপাশি ইউটিউব পরীক্ষামূলকভাবে চালু করছে কিউআর কোডভিত্তিক কেনাকাটার সুবিধা। এই সুবিধা চালু হলে দর্শকেরা ভিডিওতে প্রদর্শিত পণ্যের কিউআর কোড স্ক্যান করে সরাসরি তা কিনতে পারবেন।
সূত্র: টেক্লুসিভ