অফিস আদেশ ছাড়াই নির্বাহী পরিচালকের (ইডি) চেয়ার দখলের দুদিন পরই চাকরি থেকে বাধ্যতামূলক অবসরের চিঠি পেয়েছেন বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম খান। মঙ্গলবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান এক অফিস আদেশে তাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেন।

কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জোর করে চেয়ার দখলের ঘটনায় এক নির্বাহী প্রকোশলী ও সহকারী প্রকৌশলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হচ্ছে আরও ৬-৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়, জাহাঙ্গীর আলম খানের চাকরিকাল ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে এবং যেহেতু সরকার জনস্বার্থে তাঁকে সরকারি চাকরি থেকে অবসর প্রদান করা প্রয়োজন মর্মে বিবেচনা করে, সেহেতু সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮–এর ধারা ৪৫ ও সরকারি চাকরি (সংশোধন) আইন, ২০১৩–এর উপধারা ২ (গ)–তে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে তাঁকে সরকারি চাকরি থেকে অবসর প্রদান করা হলো। জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও এই অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।

জাহাঙ্গীর আলম খান বিএমডিএর সেচ শাখার প্রধান ছিলেন। গত ২৩ মার্চ কোনো অফিস আদেশ ছাড়াই তিনি বিএমডিএর নির্বাহী পরিচালকের (ইডি) দায়িত্ব নেন। সে সময় ইডি পদে ছিলেন সরকারের অতিরিক্ত সচিব শফিকুল ইসলাম, যাকে জোর করে অফিস থেকে বের করে দেওয়া হয়। প্রশাসনিক এই পদে সাধারণত বিএমডিএর বাইরের কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে। গত বছরের জুলাইয়ে শফিকুল ইসলামকে ইডি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে ২৩ ফেব্রুয়ারি এক প্রজ্ঞাপনে শফিকুল ইসলামকে বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক হিসেবে পদায়ন করা হয়। কিন্তু তিনি বিএমডিএতেই অবস্থান করছিলেন এবং গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছিলেন।

গত রোববার দুপুরে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম খানসহ কয়েকজন কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামের কার্যালয়ে গিয়ে তাকে চেয়ার ছেড়ে দেওয়ার চাপ দেন। এক পর্যায়ে বাকবিতণ্ডা শুরু হলে কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী তাকে চেয়ার থেকে ওঠানোর চেষ্টা করেন। তখন শফিকুল ইসলাম বাধ্য হয়ে দায়িত্ব ছাড়তে সম্মত হন এবং একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করেন, যেখানে উল্লেখ করা হয় যে তিনি পদত্যাগ করেছেন এবং জাহাঙ্গীর আলম খান দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।

অন্য দুই জ্যেষ্ঠ প্রকৌশলীকে উপেক্ষা করে জাহাঙ্গীর আলম খান ইডির চেয়ার দখল করেন। বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসার পর মঙ্গলবার তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। এ দিকে অভিযুক্ত কিছু কর্মকর্তা ও বহিরাগত মিলে জাহাঙ্গীর আলম খানের অবসরের আদেশ বাতিল চেয়ে মানববন্ধন করেন।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, বিএমডিএর ঘটনা বিভিন্ন গণমাধ্যমে ভিডিওসহ এসেছে। এভাবে জোর করে চেয়ারে বসা অবিবেচনাপ্রসূত। এখানে সরকারি চাকরিবিধি লঙ্ঘন হয়েছে। এটি চরম অন্যায়। এই দুঃসাহস কেউ দেখাতে পারে না। এ রকম অন্যায় যেখানেই হবে আমরা ব্যবস্থা নেব।

বিএমডিএ পরিচালনা পর্ষদের সদস্য সাইফুল ইসলাম হীরক বলেন, সরকারি পদে থাকা একজন কর্মকর্তাকে জোর করে বের করে দেওয়া অনৈতিক। বাধ্যতামূলক অবসরের সিদ্ধান্ত যথাযথ এবং এটি বিএমডিএর জন্য শিক্ষণীয় হয়ে থাকবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বরখ স ত জ হ ঙ গ র আলম খ ন চ য় র দখল কর মকর ত ব এমড এ ক অবসর জ র কর সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে শিক্ষক ও অফিস সহায়ককে বিদায়

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে স্কুল শিক্ষক ও অফিস সহায়ককে বিদায় জানিয়েছেন স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সরকারি নলডাঙ্গা ভূষণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের সিনিয়র শিক্ষক আজিবর রহমান ও অফিস সহায়ক মশিয়ার রহমানকে বিদায় সংবর্ধনা জানানো হয়।

বিদায় সংবর্ধনা উপলক্ষে বিদ্যালয়ের হলরুমে স্মৃতিচারণামূলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. দেদারুল ইসলাম, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহীন আলম, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মকবুল হোসেন তোতা, সিনিয়র শিক্ষক রুহুল আমিন প্রমুখ।

আরো পড়ুন:

সাতক্ষীরায় নিখোঁজের ৩৬ দিনেও স্কুলছাত্রী উদ্ধার হয়নি

স্কুল ভবনে ক্লাস চলাকালে বিধ্বস্ত হয় প্রশিক্ষণ বিমান

আয়োজকরা জানান, দীর্ঘদিন শিক্ষক আজিবর রহমান ও অফিস সহায়ক মশিয়ার রহমান এই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছেন। সম্প্রতি তারা অবসরে গেছেন। তাদের বিদায় সংবর্ধনা স্মরণীয় করে রাখতে ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে বিদায় জানানো হয়েছে। এ সময় বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

শিক্ষক আজিবর রহমান বলেন, ‘‘দীর্ঘ ২১ বছর এই বিদ্যালয়ে চাকরি করেছি। চলার পথে কোনো ভুল-ত্রুটি হলে সবাই ক্ষমা করবেন। চাকরি জীবন শেষে এমন সংবর্ধনা পাব কল্পনাও করিনি। এ জন্য আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’’ এ সময় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

প্রধান শিক্ষক মকবুল হোসেন তোতা বলেন, ‘‘চাকরি জীবনে সবাইকেই অবসর নিতে হবে। আজ আমরা ইংরেজি শিক্ষক আজিবর রহমান ও অফিস সহায়ক মশিয়ার রহমানকে বিদায় জানিয়েছি। এটা কষ্টের হলেও সবাইকে মেনে নিতে হবে। বিদায়ের দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে তাদের দুজনকে ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে বিদায় জানানো হয়েছে।’’

ঢাকা/সোহাগ/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে শিক্ষক ও অফিস সহায়ককে বিদায়