ভোটের অধিকার নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেললে ঘরে বসে থাকব না: ইশরাক
Published: 26th, March 2025 GMT
ভোট গণতন্ত্রের মূল স্তম্ভ। এই নাগরিক অধিকার নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেললে নিজেরা ঘরে বসে থাকবেন না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির বিশেষ সহকারী ইশরাক হোসেন।
আজ বুধবার সন্ধ্যার দিকে রাজধানীর গোপীবাগে সাদেক হোসেন খোকা স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে খালেদা জিয়ার সুস্বাস্থ্য কামনায় আয়োজিত এক দোয়া ও ইফতার মাহফিলে ইশরাক হোসেন এ কথাগুলো বলেন।
গণহত্যার বিচারের কথা বলে দ্বিচারিতা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন ইশরাক হোসেন। তিনি বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আট মাস পার হলেও গণহত্যার বিচার হচ্ছে না। অথচ সব হত্যাকারীর ভিডিও ফুটেজ আছে। শেখ হাসিনার নির্দেশনার বক্তব্য রয়েছে। বিচারও করছেন না। আবার বলছেন বিচার না হলে নির্বাচন হবে না। এ দ্বিচারিতা জনগণ বোঝে।’
এই বিএনপি নেতা বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিষয় উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উত্থাপিত হলে সেখানেও আপত্তি আসে। তার মানে তাঁদের ভেতরেও এ বিষয়টি নিয়ে বিভক্তি রয়েছে।
ইশরাক হোসেন বলেন, ‘৫ আগস্টের রক্তাক্ত বিপ্লবের পর দেশের অতীত ইতিহাস মুছে ফেলার চক্রান্ত হয়েছে। বলা হয়েছে, দেশ নতুন করে স্বাধীন হয়েছে। আসলে আমরা স্বাধীনতা ফেরত পেয়েছি। প্রকৃত স্বাধীনতা আমরা ’৭১ সালেই অর্জন করেছি। মূলত ’৭১-এর পরাজিত শত্রুরাই এগুলো বলে ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে। ’৭১ আর ’২৪ এক বিষয় নয়। বরং এসব বলে মুক্তিযুদ্ধের সময় নিহত লাখো শহীদ এবং যাঁদের সম্ভ্রমহানি হয়েছে, তাঁদের অসম্মান করা হয়েছে।’
ইশরাক বলেন, ‘কেউ কেউ বলছেন জুলাই বিপ্লবে তাঁরা একাই করেছেন, আর কেউ ছিল না। এগুলো ’৭১ সালের পরাজিত শক্তির বক্তব্য। বিএনপি ও ছাত্রদলই এ আন্দোলনে মুখ্য ভূমিকা রেখেছে। ’৭১-এর কৃতিত্ব যেভাবে হাসিনা এককভাবে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল, একই কায়দায় [চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে] কেউ কেউ নিজ কৃতিত্ব জাহির করার অপচেষ্টা করেছেন।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক পাভেল সিকদারের সভাপতিত্বে দোয়া ও ইফতার মাহফিলে বক্তব্য দেন বিএনপির সহস্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক পারভেজ রেজা, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক দলের আহ্বায়ক সুমন ভূঁইয়া, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রহিম ভূঁইয়া, বিএনপি নেতা সাজ্জাদ হোসেন সিদ্দিকী ও মাশরুল হোসেন প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইশর ক হ স ন ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
২ মে ঢাকায় এনসিপির বিক্ষোভ, প্রচারপত্রে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ৭ অপরাধ
‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচার ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে’ আগামী ২ মে (শুক্রবার) রাজধানী ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করবে নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। রাজধানীর গুলিস্তানে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটকে এনসিপির ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে এই সমাবেশ হবে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের উদ্যোগে গঠিত দল এনসিপি।
সমাবেশ উপলক্ষে তৈরি করা প্রচারপত্রে আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামলের সাতটি অপরাধের কথা উল্লেখ করেছে এনসিপি। এগুলো হলো ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহ দমনের নামে ৫৭ সেনা কর্মকর্তার হত্যাকাণ্ড; গুম, খুন ও ক্রসফায়ারের মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহরণ; ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে তিনটি অবৈধ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার হরণ; ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে চালানো হত্যাযজ্ঞ; লাখ লাখ কোটি টাকার দুর্নীতি, লুটপাট ও পাচার; ২০২১ সালে নরেন্দ্র মোদিবিরোধী আন্দোলনে চালানো হত্যাকাণ্ড এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় চালানো নজিরবিহীন গণহত্যা।
এরপর চারটি দাবিও উল্লেখ করা হয়েছে প্রচারপত্রে। এগুলো হলো প্রতিটি অপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ট্রাইব্যুনাল বা কমিশন গঠন করে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচারের ব্যবস্থা; আগামী নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগ প্রশ্নের মীমাংসা তথা আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল; বিচার চলাকালে আওয়ামী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ রাখা এবং ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার ও তাঁদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা।
দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, সমাবেশে প্রায় ২০ হাজার মানুষের জমায়েত হতে পারে। এই সমাবেশে এনসিপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
দলগতভাবে আওয়ামী লীগের বিচার, দলটির নিবন্ধন বাতিল ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে গত ২১ এপ্রিল থেকে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় বিক্ষোভ, সমাবেশ ও মশালমিছিল করছে এনসিপি। এর ধারাবাহিকতায় এবার কিছুটা বড় পরিসরে ঢাকা মহানগর শাখার ব্যানারে সমাবেশ হতে যাচ্ছে।
এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন শিশির। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা মহানগরের থানা পর্যায়ে কিছুদিন ধরে এনসিপির যে কর্মসূচিগুলো হচ্ছে, এগুলোরই চূড়ান্ত সমাবেশটা হবে আগামী ২ মে।