বাংলা নববর্ষে সূর্যোদয়ের প্রথম লগ্নে রমনার বটমূলে ছায়ানটের ‘এসো হে বৈশাখ’ গানের মূর্ছনায় এবারও মোহিত হবেন সবাই। তবে এবারের আয়োজনে থাকবেন না ছায়ানট ও বর্ষবরণের এই আয়োজনের রথী সন্‌জীদা খাতুন। বুধবার ছায়ানট এবং কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অশ্রুসজল চোখে তাঁকে বিদায় জানান ছায়ানটের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী, বর্তমান-প্রাক্তন শিক্ষার্থী, সহযোগী এবং শুভাকাঙ্ক্ষী।

মঙ্গলবার দুপুর ৩টা ১০ মিনিটে স্কয়ার হাসপাতালে বার্ধক্যজনিত কারণে ৯২ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু হয়। দুপুর ১২টায় ছায়ানটে সন্জীদা খাতুনের মৃতদেহ নিয়ে আসা হলে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। কান্নায় ভেঙে পড়েন দীর্ঘদিনের সহকর্মী, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অনুজরা। কর্মক্ষেত্রে মরদেহ ফুলে ফুলে ভরিয়ে তোলেন তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষী ও শিক্ষার্থীরা। অশ্রুসিক্ত নয়নে শববেদির চারপাশ ঘিরে শেষবারের মতো দেখে নেন জীবন্ত এক ইতিহাস ও বাংলা সংস্কৃতি অঙ্গনের বটবৃক্ষ সন্‌জীদা খাতুনকে। পুরোটা সময় সম্মিলিত কণ্ঠে রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করেন ছায়ানটের শিল্পীরা। তাঁকে শেষবারের মতো একনজর দেখার জন্য মানুষের সারি প্রসারিত হয় ধানমন্ডি ২৭ পর্যন্ত। রোদে দাঁড়িয়ে থেকেও কারও কোনো ক্লান্তি ছিল না, ছিল শোকের চিহ্ন।

সন্‌জীদা খাতুনকে শেষবারের মতো দেখতে ছায়ানটে ছুটে আসেন নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, সংগীতশিল্পী বুলবুল ইসলাম, ইফফাত আরা দেওয়ান, খায়রুল আনাম শাকিল, চন্দনা মজুমদার, নৃত্যশিল্পী শিবলী মোহাম্মদ, আবৃত্তিশিল্পী ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের সাধারণ সম্পাদক কামাল বায়েজীদ, চলচ্চিত্র নির্মাতা মোরশেদুল ইসলাম, অভিনয়শিল্পী ত্রপা মজুমদারসহ অনেকে।

ভারতীয় হাইকমিশন, বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার, ঢাকা থিয়েটার, রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদ, সুরের ধারাসহ অনেক সংগঠন তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। জাতীয় সংগীত ও ‘আগুনের পরশমণি’ গানের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষ হয় ছায়ানট প্রাঙ্গণে। এর পর সেখান থেকে সোয়া ১টার দিকে সন্‌জীদা খাতুনের অধ্যাপনার ক্ষেত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের উদ্দেশে মরদেহ নেওয়া হয়। সেখানে সহকর্মীদের ফুলেল শ্রদ্ধা জানানোর পর বেলা আড়াইটায় তাঁর মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হয়।

শহীদ মিনার থেকে মরদেহ নেওয়া হয় বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে। পরিবারের যারা দেশের বাইরে থাকেন, তাদের শেষ দেখার জন্য তা রাখা হয় হিমঘরে। এর পর জানা যাবে শেষকৃত্যের বিষয়ে। 

বিশিষ্টজনের স্মৃতিচারণ
বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক সমকালকে বলেন, সংগীতসাধনার বিষয়ে সন্‌জীদা খাতুনের একটা গভীর উপলব্ধি ছিল। বিশেষ করে রবীন্দ্রসংগীত এবং রবীন্দ্রজীবনী চর্চা করেছেন। অন্যদিকে, সরকারের পক্ষ থেকে কোনো শোক প্রকাশ না করায় ক্ষোভ জানিয়েছেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: রব ন দ ছ য় নট মরদ হ

এছাড়াও পড়ুন:

অফিসে প্রেম করার আগে জেনে রাখুন

আমরা যাঁরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করি, তাঁদের দিনের বড় একটি অংশ সহকর্মীদের সঙ্গেই কাটে। আসা–যাওয়া আর ঘুমের সময়টুকু বাদ দিলে দেখা যাবে, পরিবারের সদস্যদের চেয়ে তাঁদের সঙ্গেই কাটছে বেশি সময়। স্বাভাবিকভাবেই সহকর্মীদের সঙ্গে একধরনের সম্পর্ক তৈরি হয়ে যায়, তাঁরা হয়ে ওঠেন বন্ধু, মনের কথা ভাগ করে নেওয়ার সঙ্গী। কখনো কখনো এই সম্পর্ক পেশাগত সীমারেখাও ছাড়িয়ে যায়।

প্রশ্ন হলো, সহকর্মীদের সঙ্গে আচরণের ক্ষেত্রে এই সীমারেখা কোথায় টানতে হবে? অফিসে বা বাইরে বিপরীত লিঙ্গের সহকর্মীর সঙ্গে কোন কথাটা বলা যাবে, কোন ঠাট্টাটা করা যাবে, মোটের ওপর কতটা মেলামেশা করা যাবে?

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনে কোল্ডপ্লের কনসার্ট দেখতে গিয়ে অন্তরঙ্গ অবস্থায় ক্যামেরায় ধরা পড়েন মার্কিন সফটওয়্যার সংস্থা অ্যাস্ট্রোনোমার প্রধান নির্বাহী অ্যান্ডি বায়রন ও সংস্থাটির এইচআর প্রধান ক্রিস্টিন ক্যাবট। যাঁদের দুজনেরই রয়েছে আলাদা পরিবার। তাঁদের সম্পর্কের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই অফিসের ক্ষেত্রে সহকর্মীর সঙ্গে সম্পর্ক কেমন হবে, একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিদের মধ্যের সম্পর্ক নৈতিকতার কোন মানদণ্ড মেনে চলবে, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।

সহকর্মীর সঙ্গে কেমন আচরণ করবেন সেসব নিয়ে প্রতিটি ভালো অফিসেই আচরণবিধি থাকে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কর্মক্ষেত্রে বুলিং: শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব
  • অফিসে প্রেম করার আগে জেনে রাখুন