গাড়ি আমদানি ও গাড়ির যন্ত্রাংশের ওপর গতকাল বুধবার উচ্চ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী সপ্তাহে শুল্ক আরোপের ঘোষণা নিয়ে বাণিজ্যিক অংশীদারদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে, গতকালের এই ঘোষণা তাতে আরও ঘি ঢালবে।

ওভাল অফিসে বসে ওই আদেশে সই করার পর ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা যা করতে চলেছি সেটা হলো, যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি নয়, এমন সব গাড়ির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ।’

আগামী ৩ এপ্রিল ইস্টার্ন টাইম ০০: ০১ মিনিটে এই আদেশ কার্যকর হওয়ার কথা। বিদেশে তৈরি গাড়ি ও হালকা ওজনের ট্রাকের ওপর এই শুল্কের প্রভাব পড়বে। এ মাসের মধ্যে গাড়ির গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশের ওপরও এর প্রভাব পড়বে।

জানুয়ারিতে পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের বৃহৎ বাণিজ্য-অংশীদার কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের ওপর নতুন করে আমদানি শুল্ক আরোপ করেছেন। পাশাপাশি ট্রাম্প স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন।

ইতিমধ্যেই পণ্যের ওপর যেসব শুল্ক আছে, নতুন শুল্কগুলো তার সঙ্গে যোগ হবে। তবে হোয়াইট হাউস বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো-কানাডা চুক্তির (ইউএসএমসিএ) অধীনে যেসব গাড়ি আমদানি করা হচ্ছে, সেগুলো কম শুল্কে প্রবেশের সুযোগ পেতে পারে। তবে সেটা নির্ভর করবে সেগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের উপাদান কতটা আছে।

আরও পড়ুনকানাডা, মেক্সিকো ও চীনের ওপর শুল্ক আরোপ করে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ, বিশ্বজুড়ে মন্দার আশঙ্কা০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

একইভাবে, ইউএসএমসিএ চুক্তির অধীন গাড়ির যন্ত্রাংশ আমদানি শুল্কমুক্ত থাকবে। ট্রাম্পের বাণিজ্য পরিকল্পনা নিয়ে অনিশ্চয়তা এবং এর ফলে মন্দা দেখা দিতে পারে, এমন উদ্বেগ আর্থিক বাজারগুলোকে নাড়া দিয়েছে। শুল্কের কী প্রভাব পড়তে পারে, সে আশঙ্কা থেকে গত কয়েক মাসে ভোক্তাদের আস্থাও হ্রাস পেয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসন বলছে, সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ানো, যুক্তরাষ্ট্রের শিল্প খাতকে পুনরুজ্জীবিত করা এবং বিভিন্ন দেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকার চাপিয়ে দেওয়ার হাতিয়ার হিসেবে এই শুল্ক আরোপ হচ্ছে।

কিন্তু গাড়ি আমদানিতে শুল্ক আরোপের ফলে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, কানাডা, মেক্সিকো ও জার্মানির মতো ঘনিষ্ঠ অংশীদারদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি হতে পারে।

এশিয়া সোসাইটি পলিসি ইনস্টিটিউটের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে একসময় বাণিজ্য মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করা ওয়েন্ডি কাটলার বলেন, ‘গাড়ি আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ আমাদের অনেক ঘনিষ্ঠ বাণিজ্য অংশীদারদের ওপর ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলবে।’

ওয়েন্ডি কাটলার আরও বলেন, কয়েকটি ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষের সঙ্গে ওয়াশিংটনের মুক্তবাণিজ্য চুক্তি আছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক চুক্তির প্রতিশ্রুতির দাম থাকে কি না সন্দেহ।

আরও পড়ুনইস্পাত-অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে ২৫% শুল্ক আরোপে নির্বাহী আদেশে সই করলেন ট্রাম্প১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া গাড়ির প্রায় ৫০ শতাংশ দেশেই তৈরি হয়। বাকি যে ৫০ শতাংশ আমদানি হয়, তার প্রায় অর্ধেক মেক্সিকো ও কানাডা থেকে আসে। জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও জার্মানি গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহকারী।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি গাড়ির অর্ধেকের বেশির যন্ত্রাংশ আসে বিদেশ থেকে। হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা এমনটাই জানিয়েছেন। গাড়ি আমদানিতে ট্রাম্পের এই শুল্ক আরোপকে তাঁর দেশের কর্মীদের ওপর সরাসরি হামলা বলে বর্ণনা করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি।

আরও পড়ুনট্রাম্পের শুল্কনীতি কি ভারতের অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করবে১৯ মার্চ ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ল ক আর প র শ শ ল ক আর প আমদ ন ত র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

শিগগিরই একীভূত হবে ৫ ইসলামী ব্যাংক, কর্মকর্তারা চাকরি হারাবেন না: গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, “বেসরকারি খাতের ৫টি ইসলামী ব্যাংককে শিগগিরই একীভূত করা হবে। একত্রিত হলেও এসব ব্যাংকের কর্মীরা চাকরি হারাবেন না।”

রবিবার (১৫ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, “নির্বাচনের সঙ্গে ব্যাংক মার্জারের কোনো সম্পর্ক নেই। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমরা আশা করব পরবর্তী সরকার এসে এই প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তবে নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা না করে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই ৫টি ইসলামী ব্যাংক মার্জার করা হবে। এ ক্ষেত্রে ব্যাংক কর্মকর্তাদের দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই।তবে প্রয়োজনে শাখাগুলো স্থানান্তর করা হবে। যেসব ব্যাংকের শাখা শহরে বেশি সেসব ব্যাংককে গ্রামে পাঠানোর ব্যবস্থা করা যেতে পারে।”

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “পাচার হওয়া সম্পদ উদ্ধারের প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে অগ্রসর হতে হবে। আদালতের চূড়ান্ত রায় ছাড়া কোনো সম্পদ উদ্ধার সম্ভব নয়। এ জন্য আগে সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে আইনি নথিপত্র তৈরি করতে হবে।”

তিনি বলেন, “আদালতের বাইরে সমঝোতার মাধ্যমে অর্থ ফেরত আনার ব্যবস্থাও রয়েছে। এই পদ্ধতিতেও একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়, যেখানে উভয়পক্ষের আইনজীবীরা আলোচনা করে সমাধান খুঁজবেন। কোন পথে এগোনো হবে, আদালত নাকি এডিআর, সেটি নির্ধারণ করবে সরকার।” 

ঢাকা/নাজমুল/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ