২০১৬ সালের জুলাইয়ে পিএসভি এবং এফসি আইন্দোভেন প্রীতি ম্যাচে প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। এরপর ধীরে ধীরে ইউরোপিয়ান ফুটবলে ভিএআর এখন খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার।
যদিও ভিএআর নিয়ে প্রায়ই সমালোচনা হয় এবং গতকাল রাতে চেলসির কাছে হারের পর সেটাই করেছেন টটেনহাম হটস্পারের কোচ অ্যাঞ্জ পোস্তেকোগলু।
প্রিমিয়ার লিগে চেলসির মাঠে ১–০ গোলে হেরেছে টটেনহাম। তবে ম্যাচটি ড্র হতে পারত। ৬৯ মিনিটে টটেনহামের সেনেগালিজ মিডফিল্ডার পাপে মাতারের গোল ফাউলের কারণে ভিএআর বাতিল করে দেয়।
গোলটি করার আগে ফাউল করেছিলেন পাপে মাতার, ভিএআর রেফারি জ্যারেড জিলেটের সঙ্গে দীর্ঘ সময় কথা বলে এ সিদ্ধান্ত দেন মাঠের রেফারি ক্রেগ পসন। যে কারণে দ্বিতীয়ার্ধে যোগ করা সময় বেড়ে ১২ মিনিটে দাঁড়ায়।
হারের পর ভিএআর প্রযুক্তির কড়া সমালোচনা করে পোস্তেকোগলু বলেন, ‘এটা (ভিএআর) খেলাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। কিন্তু কেউই এটা নিয়ে মাথা ঘামায় না।’
খেলোয়াড়ি জীবনে অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে রক্ষণ সামলানো পোস্তেকোগলু বলছেন ভিএআর নিয়ে বিতর্কটা সবাই উপভোগ করছেন, ‘আমার মনে হয় সবাই নাটক, বিতর্ক পছন্দ করে। আমি নিশ্চিত যে এটি নিয়ে ২৪ ঘন্টা আলোচনা হবে, সবাই তো এটাই চায়। এটা খেলার জৌলুস নষ্ট করে দিচ্ছে।’
টটেনহামকে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ চারে উঠে এসেছে চেলসি। ৩০ ম্যাচে ৫২ পয়েন্ট তাদের। সমান ম্যাচে ৫১ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে ম্যানচেস্টার সিটি। শীর্ষে থাকা লিভারপুলের সঙ্গে ২১ পয়েন্ট ব্যবধানে পিছিয়ে চেলসি।
আর টটেনহাম ৩০ ম্যাচে ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে ১৪তম। এমন দশা কিছুতেই মানতে পারছেন না টটেনহামের সমর্থকরা। তাঁরা দুষছেন কোচকেই। স্টামফোর্ড ব্রিজে হারের পর তাই সমর্থকদের দুয়ো শুনতে হয় পোস্তেকোগলুকে।
চেলসির জয়ের নায়ক আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী মিডফিল্ডার এনজো ফার্নান্দেজ। ৫০ মিনিটে হেডে গোল করেন তিনি।
চেলসির তৃতীয় মিডফিল্ডার হিসেবে প্রিমিয়ার লিগে টটেনহামের বিপক্ষে হোম এবং অ্যাওয়েতে গোল করার কীর্তি গড়লেন এনজো। তাঁর আগে ১৯৯৬–৯৭ মৌসুমে রবার্তো দি মাতেও এবং ১৯৯৮–৯৯ মৌসুমে গাস পয়েত টটেনহামের বিপক্ষে দুই লেগেই গোল করেছেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেম ছিল না তবু কেন মধুবালাকে বিয়ে করেছিলেন কিশোর কুমার
দিলীপ কুমারের সঙ্গে বিচ্ছেদের কিছুদিন পরই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন অভিনেত্রী মধুবালা। তবে তখন তিনি ছিলেন অসুস্থ। কিশোর কুমার জানিয়েছিলেন, ভালোবাসা থেকে নয়, বরং কথা রাখতেই তিনি এ বিয়ে করেছিলেন।
মধুবালা ও দিলীপ কুমারের প্রেম নিয়ে একসময় মুখর ছিল মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। কিন্তু অভিনেত্রীর বাবার বাধার কারণে সে সম্পর্কে ফাটল ধরে এবং দুজনের বিচ্ছেদ ঘটে। কিছুদিন পরেই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন মধুবালা। তাঁদের এই বিয়ে অনেককে চমকে দিয়েছিল। কারণ, তাঁদের প্রেমের কথা তখনো গোপন ছিল। তবে মধুবালার শরীর তখন ভালো যাচ্ছিল না। বলা হয়, দীর্ঘ রোগভোগের সময় কিশোর কুমার তাঁকে মায়ের বাড়িতে রেখেই চলে যান।
দ্য ইলাস্ট্রেটেড উইকলি অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেছিলেন, ‘বিয়ের আগেই জানতাম, ও খুব অসুস্থ। কিন্তু কথা তো দিয়েছিলাম। তাই সে কথা রেখেই ওকে ঘরে এনেছিলাম স্ত্রী হিসেবে। জানতাম, ওর জন্মগত হৃদ্রোগ আছে। তবু ৯ বছর ধরে সেবা করেছি। চোখের সামনেই ওকে মরতে দেখেছি। কেউ বুঝবে না এর যন্ত্রণা, না ভুগলে। ও অসম্ভব সুন্দরী ছিল। আর কত যন্ত্রণায় মারা গেছে, সেটা চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। হতাশায় চিৎকার করত, কান্নাকাটি করত। এত প্রাণোচ্ছল মানুষ নয়টা বছর বিছানায় শুয়ে থাকবে—এ কল্পনাই করা যায় না। ডাক্তার বলেছিল, ওকে হাসিখুশি রাখতে হবে। আমি তা–ই করেছি—ওর শেষনিশ্বাস পর্যন্ত। কখনো হেসেছি, কখনো কেঁদেছি ওর সঙ্গে।’
তবে কিশোর কুমারের এই বক্তব্য নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। কারণ, পরে ফিল্মফেয়ার সাময়িকীতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একেবারে ভিন্ন কথা বলেন তিনি। সেই সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেন, ‘মধুবালার সঙ্গে আমি প্রেমে পড়িনি কখনো। বরং ওর প্রেমিক ছিল আমার বন্ধু দিলীপ কুমার। আমি তো শুধু ওদের বার্তা পৌঁছে দিতাম। বিয়ের প্রস্তাবটা দিয়েছিল মধুবালাই। এমনকি, যখন আমার প্রথম স্ত্রী রুমা তখনো আমার সঙ্গে ছিল, তখনো মধু বলত, “ওকে কখনো ছেড়ো না, না হলে আমি তোমার হয়ে যাব।”’
আরও পড়ুনকিশোর কুমার কি সত্যিই ঘরে কঙ্কাল আর মাথার খুলি নিয়ে ঘুমাতেন২৭ মে ২০২৫মধুবালার পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, চিকিৎসকেরা তখন বলেছিলেন, অভিনেত্রীর পক্ষে শারীরিক সম্পর্ক কিংবা সন্তানধারণ কোনো কিছুই সম্ভব নয়। সেই বাস্তবতা হয়তো প্রভাব ফেলেছিল কিশোরের সিদ্ধান্তে। এক ঘনিষ্ঠজন বলেন, ‘আমরা বলছি না কিশোরদা ভুল করেছিলেন। ডাক্তার তো স্পষ্ট বলেছিল—শারীরিক সম্পর্ক বা সন্তান কোনোটাই সম্ভব নয়। তবে একজন নারীর তো মানসিক সঙ্গীও দরকার হয়।’
ওই ঘনিষ্ঠজন আরও জানান, কিশোর কুমার তিন মাসে একবার আসতেন মাত্র। বলতেন, ‘আমি এলে তুমি কাঁদবে, আর এতে তোমার হৃদ্যন্ত্রের ক্ষতি হবে। তুমি বিষণ্ন হয়ে পড়বে।’ সে সময় মধু অনেক ছোট ছিলেন, ঈর্ষাও ছিল স্বাভাবিক। হয়তো এ দূরত্বই ধীরে ধীরে তাঁকে শেষ করে দিয়েছিল।
১৯৬৯ সালে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান বলিউড অভিনেত্রী মধুবালা