আঙুল দিয়ে বিশেষ ভঙ্গি করে ৯০ লাখ টাকা জরিমানা
Published: 5th, April 2025 GMT
বন্দুকের প্রতি হয়তো তাঁর অন্য রকম একটা টান আছে। আর না হলে বারবার বন্দুকের ছবি বা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দিয়ে কি নিষিদ্ধ হন জা মোরান্ট! শুধু কি তাই, ন্যাশনাল বাস্কেটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এনবিএ) এই তারকা খেলোয়াড় আঙুল দিয়ে গুলি করার ভঙ্গি করে জরিমানাও গুনেছেন।
এনবিএর দল মেম্ফিস গ্রিজলিসের খেলোয়াড়কে ৭৫ হাজার মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৯০ লাখ টাকা) জরিমানা করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার এক বাস্কেটবল ম্যাচে দুবার তিনি আঙুল উঁচিয়ে বন্দুক দিয়ে গুলি করার ভঙ্গি করার কারণেই এই জরিমানা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে এনবিএ।
এর আগে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বন্দুক দেখিয়ে দুবার নিষিদ্ধ হয়েছেন। এনবিএ জানিয়েছে, এর আগে মোরান্টকে লিগ অফিস থেকে এ ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার মায়ামি হিটের বিপক্ষে গ্রিজলিসের জয়ের ম্যাচে সেই সতর্কতা মানেননি বলেই জরিমানা গুনতে হচ্ছে মোরান্টকে।
দুইবার এনবিএর অলস্টার দলে জায়গা পাওয়া মোরান্টকে গ্রিজলিস দলে ভেড়ায় ২০১৯ সালে। এরপর ২০২৩ সালে ইনস্টাগ্রামে বন্দুক নিয়ে উল্লাসরত লাইভ ভিডিও দিয়ে আট ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ হন। এ ছাড়া ২০২৪-২৫ মৌসুমে অনলাইনে বন্দুক নিয়ে পোজ দেওয়া ছবির জন্য ২৫ ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছিলেন মোরান্ট।
আরও পড়ুনখেলার দুনিয়ায় যত বিলিয়নিয়ার২ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বৈষম্য কেন? আদিবাসী নারী শ্রমিকরা পাই না সমান মজুরি
‘‘সাম্যের গান গাই-
আমার চক্ষে পুরুষ-রমণী কোনো ভেদাভেদ নাই।
বিশ্বের যা-কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।’’
কাজী নজরুল ইসলাম ‘নারী’ কবিতায় নারী-পুরুষের সমান অধিকারের কথা বলেছেন। কিন্তু, এ বৈষম্য সমাজের সর্বস্তরে এখনো রয়ে গেছে। দিনাজপুরের হাকিমপুরে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী নারী শ্রমিকেরা। পুরুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেও সমান মজুরি পাচ্ছেন না তারা।
হাকিমপুর উপজেলার বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পাড়া ঘুরে জানা যায়, বছরে আমন এবং ইরি মৌসুমে ধানের চারা রোপণ, ক্ষেত নিড়ানিসহ ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ করেন নারী শ্রমিকেরা। পুরুষের পাশাপাশি সমান তালে এসব কাজ করেন তারা। এ কাজে পুরুষ শ্রমিকেরা ৫০০ টাকা দৈনিক মজুরি পেলেও নারী শ্রমিকেরা পান ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। শুধু ধানের মৌসুমেই নয়, অন্যান্য ফসলের ক্ষেতে কাজ করলেও তারা পুরুষের সমান মজুরি পান না। এই বৈষম্য দূর হলে আরেকটু স্বচ্ছল জীবনযাপন করা যেত বলে তারা মনে করেন।
হাকিমপুর পৌর এলাকা চন্ডিপুর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পাড়ার নারী শ্রমিক লক্ষ্মী হাসদা ও শান্তি সরেন বলেন, ‘‘আমরা বছরে দুই সিজন ধানের চারা রোপণসহ কাটা-মাড়াই করি। সকাল ৮ থেকে বিকেল ৫ পর্যন্ত কাজ করি। কিন্তু মজুরি কম পাই। পুরুষরা ৫০০ টাকা পেলে আমরা পাই সাড়ে ৩০০ টাকা। এটা কেমন নিয়ম?’’
অপর নারী শ্রমিক সুরুজ মনি হেম্ব্রন বলেন, ‘‘এখন তো হামরা তেমন কাম পাই না। আলু ও সরিষার মাঠে এখন মুসলমান বেটি ছোলরা কাম করে। আগে আমরাই করতাম, এখন অনেক কাম কমে গেছে। এরপর আবার পুরুষ মানুষের চেয়ে হামাক হাজিরাও কম দেয়। হারা (আমি) চলবো কি করে?’’
একই প্রশ্ন করেন হিলির তালতলার রানী হেম্ব্রন ও বিউটি হেম্ব্রন। শ্যামলী হাড্ডি বলেন, ‘‘এই বৈষম্যের কারণে আমরা স্বাবলম্বী হতে পারছি না। বৈষম্য দূর হলে আরেকটু ভালো করে চলতে পারতাম।’’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাকিমপুর উপজেলার ১ নাম্বার খট্রা-মাধবপাড়া ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ছদরুল শামীম স্বপন বলেন, ‘‘আমরা জানি, নারী-পুরুষ সমান অধিকারী। কিন্তু, সমাজে নারী শ্রমিকেরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। তারা সঠিক মজুরি পায় না। আমি শ্রমিক ফেডারেশনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলব- আপনারা এই বৈষম্য দূর করুন। নারীর ন্যায্য মজুরির ব্যবস্থা করুন।’’
খট্রা-মাধবপাড়া ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি শাহানুর আলম শাহিন বলেন, ‘‘আমাদের এই অঞ্চলে অনেক আদিবাসী নারী শ্রমিক আছেন, যারা বৈষম্যের শিকার। আমি গৃহস্থ এবং কৃষকদের বলতে চাই, আপনারা বৈষম্য না করে নারী-পুরুষ শ্রমিকদের সমান মজুরি দেবেন।’’
ঢাকা/তারা