টানা বন্ধে এটিএম সেবায় ভোগান্তিতে পড়েন গ্রাহকেরা
Published: 6th, April 2025 GMT
এবার ঈদের বন্ধে টানা ৯ দিনের ছুটিতে বন্ধ ছিল দেশের সব ব্যাংক। এ জন্য এই সময়ে এটিএম বুথ, ইন্টারনেট ব্যাংকিংসহ বিকল্প সব সেবা নিরবচ্ছিন্ন রাখতে নির্দেশনা দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে বাস্তবতা হলো, রাজধানীর পাশাপাশি দেশের অনেক জেলায় ব্যাংকগুলোর এটিএম বুথ অনেক সময় অকার্যকর ছিল। অনেক বুথ টাকার অভাবে এবং অনেক বুথ প্রযুক্তির ত্রুটির কারণে বন্ধ।
আবার যেসব ব্যাংকের বুথ খোলা ছিল, তাদের অনেকেই অন্য ব্যাংকের গ্রাহকদের কার্ড ব্যবহার করে টাকা তোলার সুযোগ বন্ধ রেখেছিল। কেউ কেউ একবারে ৫ হাজার টাকার বেশি তুলতে দেয়নি। ফলে টাকা তুলতে গিয়ে গ্রাহকদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
গত শুক্রবার দুপুরে উত্তরের জেলা দিনাজপুর শহরের ১৪টি ব্যাংকের বুথ ঘুরে একটি ব্যাংকের বুথ সচল পাওয়া গেছে। দেখা গেছে, ইসলামী ব্যাংকের দুটি বুথ অচল ছিল। একই অবস্থা ছিল ব্র্যাক, দি সিটি, ন্যাশনাল, ওয়ান, ট্রাস্ট ব্যাংকসহ আরও বেশ কয়েকটি ব্যাংকের বুথের। প্রাইম ব্যাংকের বুথ খোলা থাকলেও অন্য ব্যাংকের গ্রাহকদের টাকা তোলার সুযোগ ছিল না। একই অবস্থা ছিল মার্কেন্টাইল, ইস্টার্ন ব্যাংকের বুথেও।
বুথগুলোর নিরাপত্তাকর্মীরা শনিবার জানান, যেসব বুথ টাকার অভাবে অকার্যকর হয়ে পড়েছে সেগুলো ব্যাংক খোলার আগে চালু হবে না। যেসব বুথে সমস্যা হয়েছে, তা ঠিক হতে আরও বেশি সময় প্রয়োজন হবে।
এদিকে গত শুক্রবার রাজধানীর কাফরুলে সাউথইস্ট ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, যমুনা ব্যাংকের বুথে অন্য ব্যাংকের গ্রাহকদের টাকা তোলার সুযোগ বন্ধ ছিল। ফার্মগেটে বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম বুথগুলো খোলা থাকলেও নিজ ব্যাংকের কার্ড ছাড়া অন্য ব্যাংকের কার্ডধারীদের সেবা প্রদান বন্ধ রেখেছিল।
ব্যাংক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এটিএম বুথগুলো বড় অংশ শাখা থেকে টাকা জমা করা হয়। টানা ৯ দিনের বন্ধে বেশির ভাগ কর্মকর্তা ছুটিতে থাকেন। অনেকের দায়িত্ব থাকলেও ঠিকমতো তা পালন করেন না। একটি বুথে সর্বোচ্চ ৮০ লাখ টাকা পর্যন্ত জমা করা যায়। ফলে সেই টাকা শেষ হয়ে যাওয়ায় বেশির ভাগ এটিএম বুথ অকার্যকর হয়ে পড়ে।
এদিকে শাখার থেকে দূরত্বে থাকা বুথগুলো নিয়ন্ত্রণ করে তৃতীয় পক্ষ। ছুটিতে এসব বুথের অনেকগুলো বন্ধ দেখা গেছে।
সারা দেশে এটিএম বুথ রয়েছে ১২ হাজার ৯৪৬টি এবং ক্যাশ রিসাইক্লিং মেশিন (সিআরএম) রয়েছে ৭ হাজার ১২টি। এটিএম বুথে নিয়মিত টাকা জমা করতে হয়। ঈদের সময় সিআরএমগুলোতে এটিএমের মতো টাকা জমা করতে হয়। কারণ, এই সময় সবাই টাকা উত্তোলন করেন। একটি এটিএমে ২০ লাখ থেকে ৮০ লাখ টাকা পর্যন্ত জমা করা যায়। ব্যাংকগুলো দুই পদ্ধতিতে এটিএম বুথে টাকা জমা করে। শাখার নিকটবর্তী এটিএম বুথগুলোয় শাখার কর্মকর্তারা টাকা জমা করে থাকেন। দূরের এটিএম বুথগুলোয় তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে টাকা জমা করা হয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারের ভেতরে একটা অংশ নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে: এনসিপি
সরকারের ভেতরের একটি পক্ষ ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশের বাইরে গিয়ে নিজেরাই ঐকমত্য কমিশন হওয়ার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, এই চেষ্টার কারণে নির্বাচন ঝুঁকিতে পড়বে।
আজ সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আখতার হোসেন এ কথা বলেন।
আখতার হোসেন বলেন, তাঁদের কাছে স্পষ্টতই প্রতীয়মান যে সরকারের ভেতরের কোনো একটা অংশ সংস্কারকে ভন্ডুল করে নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ–আলোচনার ভিত্তিতেই কমিশন সুপারিশ উপস্থাপন করেছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সেই সুপারিশের ভিত্তিতেই সরকার আদেশ জারি করবে, সেটাই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যখন সরকারের তরফ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে আরও এক সপ্তাহ রাজনৈতিক দলগুলোকে আলাপ–আলোচনার কথা বলা হয়, তখন মনে হয় যে সরকার আসলে এই সংস্কারের বিষয়গুলো নিয়ে সাপ-লুডো খেলছে। তিনি বলেন, ‘আমরা ৯৬-তে পৌঁছে গিয়েছিলাম, সেটাকে আবার তিনে নিয়ে আসা হয়েছে সাপ কেটে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের বর্তমান যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, তাতে সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে।’
অতি দ্রুত সরকারকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানিয়ে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সরকারকে নিজেকেই দায়িত্ব নিয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করতে হবে। সামনের সংসদকে গাঠনিক ক্ষমতা প্রদান করার মধ্য দিয়ে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। গণভোটের মাধ্যমে অর্জিত জনগণের অভিপ্রায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে যেন বাস্তবায়িত হয়, সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে।