কুমিল্লায় তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের আয়োজন ঘিরে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে স্থানীয় দুটি পক্ষ। সংঘাতের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। এরই মধ্যে মাহফিল বন্ধে মসজিদ কমিটি জেলা প্রশাসনে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। 

আগামী শুক্রবার জেলার আদর্শ সদর উপজেলার উত্তর দুর্গাপুর ইউনিয়নের গুণানন্দী মধ্যমপাড়া মদিনা মসজিদ প্রাঙ্গণে স্থানীয় যুব সমাজ ও প্রবাসীদের ব্যানারে এই মাহফিল আয়োজনের প্রচারণা চলছে। তবে গতকাল মঙ্গলবার পুলিশের পক্ষ থেকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে ওই স্থানে মাহফিলের অনুমতি না দিতে মতামত জানানো হয়েছে। সন্ধ্যায় সমকালকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি থানার ওসি মুহিনুল ইসলাম।

জানা গেছে, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি গুণানন্দী মধ্যমপাড়া মদিনা মসজিদ কমিটির উদ্যোগে ৪০তম বার্ষিক তাফসিরুল কোরআন মাহফিল ও কোরআন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাজী আমিন-উর রশিদ ইয়াছিন। এর মাত্র দেড় মাসের ব্যবধানে একই স্থানে অপর একটি গ্রুপের তাফসিরুল মাহফিলের ঘোষণা দেওয়ায় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ নিয়ে প্রতিপক্ষের গ্রুপের হাতে হেনস্তার শিকার হয়েছেন মসজিদের ইমাম। তাই সংঘাত এড়াতে মাহফিল বন্ধ রাখার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করা হয়েছে। 

গত সোমবার মসজিদ কমিটির সভাপতি কামাল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মাসুদ স্বাক্ষরিত চিঠিতে এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় মাহফিল বন্ধ করতে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেন। এতে অভিযোগ করা হয়– ‘মসজিদের মুসুল্লি ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ৪০তম বার্ষিক তাফসিরুল কোরআন মাহফিল ও কোরআন প্রতিযোগিতা হয়। কিন্তু স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য ও ইউপি সদস্য নাজমুল হাসানের নির্দেশে আওয়ামী লীগ নেতা জহিরুল ইসলাম খোকন, আবদুল জব্বার, ইসমাঈল হোসেন, মুকুল, সাদেক মাস্টারসহ ২০-২৫ জন গত ২১ মার্চ মসজিদে গিয়ে ইমামকে পুনরায় মাহফিলের ঘোষণা দেওয়ার জন্য চাপ দেন।

মসজিদের ইমাম মাওলানা শরিফুল ইসলাম রেজা বলেন, ‘আমি কমিটির অনুমতিবিহীন আবারও একই স্থানে মাহফিলের ঘোষণা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে হেনস্তা করেন। পরবর্তী সময়ে তারা গত ৪ এপ্রিল জুমার নামাজের পর আগামী ১১ এপ্রিল মাহফিল করবেন বলে ঘোষণা দেন। এরই মধ্যে ইঞ্জিনিয়ার রমিজ উদ্দিনকে মাহফিলের সভাপতি উল্লেখ করা হয়েছে এবং দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল কাইয়ুমকে প্রধান অতিথি ও হাফেজ মাওলানা সাইদুল ইসলাম আসাদকে প্রধান বক্তা উল্লেখ করা হয়েছে।’

মাহফিল নিয়ে বিভক্তি দেখা দেওয়ায় সভাপতিত্ব করতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন ইঞ্জিনিয়ার রমিজ উদ্দিন। ইউপি সদস্য নাজমুল হাসান বলেন, ‘একই স্থানে কম সময়ের ব্যবধানে মাহফিল করা যাবে না, এমন কারণ কী তা বুঝতে পারছি না। মাহফিল নিয়েও এখন ষড়যন্ত্র হচ্ছে।’ 

দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল কাইয়ুমের ভাষ্য, একই স্থানে কিছু দিন আগেও মাহফিল হয়েছে। এখন যারা আয়োজন করেছেন এদের কেউ কেউ আওয়ামী লীগ করেন, কিছু বিএনপির সমর্থকও আছেন। তবে মাহফিল হওয়ার বিষয়টি এখন প্রশাসনের নির্দেশের অপেক্ষায়।
আদর্শ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা তুজ জোহরা জানান, মাহফিল বন্ধ রাখা নিয়ে স্থানীয় মসজিদ কমিটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশি প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন হাতে পেলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।

কোতোয়ালি থানার ওসি মুহিনুল ইসলাম বলেন, স্থানীয়ভাবে তদন্তে জানা গেছে সেখানে মাহফিল নিয়ে দুটি পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে আছে। মাহফিলের অনুমতি দেওয়া হলে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন হওয়ার শঙ্কা আছে। এ বিষয়ে মঙ্গলবার প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: একই স থ ন ল ইসল ম কম ট র ব এনপ ক রআন

এছাড়াও পড়ুন:

বেড়েছে মাছ, মুরগি ও ডিমের দাম

উৎপাদন ও বাজারে সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে ডিমের দাম। বিক্রেতারা বলছেন, উৎপাদন কম হওয়ায় খামারিরা মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন এবং টানা বৃষ্টিপাতের জন্য সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।

শুক্রবার (১ আগস্ট) রাজধানীর নিউ মার্কেট, রায়েরবাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলো ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সপ্তাহে ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে প্রতি ডজন ১২০ টাকায়, এ সপ্তাহে তা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। সেই হিসেবে ডিমের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা।

সবজির দাম স্বাভাবিক
এ সপ্তাহে বাজারে টমেটো ছাড়া অন্যান্য সবজির দাম স্বাভাবিক আছে। গত সপ্তাহে টমেটো বিক্রি হয়েছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়, এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। কাঁচামরিচ ২০০ টাকা, শশা ৭০ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, গাজর (দেশি) ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, বরবটি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, কাকরোল ৬০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, প্রতিটি পিস জালি কুমড়া ৫০ টাকা এবং লাউ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মুদিবাজারে চালসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল আছে। তবে, পেঁয়াজের দাম সামান্য বেড়েছে। এ সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে ৫৫ টাকায় কেজিতে বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। রসুন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা এবং দেশি আদা ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বেড়েছে মাছ ও মুরগির দাম
বিক্রেতারা বলছেন, নদীতে পানি বৃদ্ধির জন্য জেলেদের জালে মাছ কম ধরা পড়ছে এবং উজানের পানিতে খামারিদের পুকুর ও ঘের তলিয়ে যাওয়ায় মাছের দাম বেড়েছে। বাজারে এখন মাঝারি সাইজের চাষের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে থেকে ৩৫০ টাকায়। চাষের পাঙাসের কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০ টাকা, মাঝারি সাইজ কৈ মাছ ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, দেশি শিং ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, বড় সাইজের পাবদা ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৬০০ টাকা এবং এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকায়।

এ সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে  ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহ ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ঢাকা/রায়হান/রফিক 

সম্পর্কিত নিবন্ধ