শিশুদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে তিনি আজীবন কাজ করে গেছেন
Published: 9th, April 2025 GMT
সকালবেলার রোদটা একটু আলতো, বাতাসের দস্যিপনা নেই। একটা শান্ত, স্মৃতিমাখা স্পর্শ ছড়িয়ে যাচ্ছে সেগুনবাগিচার কচি-কাঁচার মেলা প্রাঙ্গণে। প্রাঙ্গণ ভরা শিশুদের দৌড়ঝাঁপ, কল্লোল। ওরা খেলছে সুনাগরিকের স্বপ্নালয়ে কচি-কাঁচার মেলায়। পাশেই কিছু বৃদ্ধ-বৃদ্ধা গল্পে মেতেছেন একটা নামে। নামটা দাদাভাই। যাঁর আসল নাম রোকনুজ্জামান খান।
বুধবার কচি-কাঁচার মেলার অডিটরিয়ামে তিন দিনব্যাপী দাদা ভাইয়ের জন্মশতবর্ষের সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। তাঁর সৃষ্টিশীলতা ও অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলা তিন দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মেলা প্রাঙ্গণে দাদাভাইয়ের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। তারপর বিকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা পর্বে দাদাভাইয়ের জন্মশতবর্ষ শ্রদ্ধার্ঘ্যে রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই বইয়ের স্মারক উন্মোচন করা হয়।
বিকেলে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে কচি-কাঁচার মেলার সভাপতি খোন্দকার মো.
অনুষ্ঠানে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, দাদাভাই যখন কচি-কাঁচার মেলা নিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন, তখন শিশু অধিকার নিয়ে সরকারের তেমন কোনো পরিকল্পনা ছিল না। শিশুদের সুনাগরিক ও আলোর মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তিনি আজীবন কাজ করে গেছেন। কচি-কাঁচার মেলা প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। মৃত্যুর দিনও তিনি কচি-কাঁচার মেলা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন।
কচি-কাঁচার মেলার অডিটরিয়ামে তিন দিনব্যাপী দাদা ভাইয়ের জন্মশতবর্ষের সমাপনী অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক আয়োজনউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন
এছাড়াও পড়ুন:
কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণ শুরু হচ্ছে শনিবার মধ্যরাতে
তিন মাস দুই দিন পর কাপ্তাই হ্রদে শুরু হচ্ছে মৎস্য আহরণ। শনিবার (২ আগস্ট) মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরতে পারবেন জেলেরা।
কাপ্তাই হ্রদে পর্যাপ্ত পানি থাকায় কয়েক বছরের মধ্যে এবার নির্দিষ্ট সময়ে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে জেলা প্রশাসন। অন্যান্য বছর ২-৩ দফা সময় বাড়িয়ে প্রায় চার মাস পর মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হতো। কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের বংশবৃদ্ধি, প্রজনন এবং অবমুক্ত করা মাছের বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি বছর তিন মাস কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেয় জেলা প্রশাসন।
এদিকে, মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর শুধু জেলে পাড়া নয়, কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে জেলার সবচেয়ে বড় মৎস্য অবতরণকেন্দ্র বিএফডিসি ঘাট। মাছ পরিবহন ও সংরক্ষণের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে ড্রাম, বরফ ভাঙার মেশিন। দীর্ঘ ৯২ দিনের কর্মহীন জীবনের অবসান ঘটাতে প্রহর গুনছেন জেলেরা। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সেরে রেখেছেন ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি)।
বিএফডিসি সূত্র বলছে, কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন, অবমুক্ত করা পোনা মাছের সুষ্ঠু বৃদ্ধির জন্য ১ মে থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ রাখা হয়। এ সময়ে হ্রদে প্রায় ৬০ মেট্রিক টন কার্প জাতীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় ২৬ হাজার জেলে।
রাঙামাটির শহরের পুরান পাড়া জেলা পল্লীর বাসিন্দা নেপাল দাশ জানিয়েছেন, মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞাকালে যে সরকারি সহায়তা পাওয়া যায়, তাতে পরিবার নিয়ে চলা কঠিন। দীর্ঘ তিন মাস পর মাছ ধরতে নামতে পারব, এতে খুশি আমরা।
নতুন পাড়ার জেলে অমর কান্তি দাশ বলেছেন, হ্রদে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মাছগুলো বড় হওয়ার সুযোগ পাবে। তবে, পানিতে ঢেউ থাকায় শুরুতে বেশি মাছ পাওয়া যাবে না। পানি কিছু কমে আসলে ও স্থির হলে ভালো মাছ পাব, আশা করি। হ্রদে নামার জন্য যা যা প্রস্তুতি, সবকিছু শেষ করেছি। জাল ও নৌকা মেরামত করা হয়েছে। এখন শুধু লেকে নামার অপেক্ষা।
রাঙামাটি মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি উদয়ন বড়ুয়া বলেছেন, এবার নিষেধাজ্ঞার শুরু থেকে পর্যাপ্ত বৃষ্টির ফলে কাপ্তাই হ্রদে যথেষ্ট পানি থাকায় মাছ প্রথম থেকেই প্রজনন এবং বড় হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। আশা করছি, এবার পর্যাপ্ত মাছ পাওয়া যাবে। ব্যবসায়ীরা সব প্রস্ততি নিয়েছেন। রবিবার সকাল থেকে বিএফডিসি ঘাটে মাছ আসবে।
বিএফডিসির রাঙামাটি অঞ্চলের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. ফয়েজ আল করিম বলেছেন, নিষেধাজ্ঞাকালীন আমাদের উপকেন্দ্রগুলোর যেসব অবকাঠামো সংস্কারের প্রয়োজন ছিল, সেসব আমরা শেষ করেছি। অন্যান্য যেসব প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন, সেসবও শেষ হয়েছে। আশা করছি, গত বছরের মতো এবছরও ভালো মাছ পাওয়া যাবে।
ঢাকা/শংকর/রফিক