সিলেটে হামলা-লুট: এবার ৯০০ জনকে আসামি করে বাটা কর্তৃপক্ষের মামলা, গ্রেপ্তার আরও ২
Published: 10th, April 2025 GMT
সিলেটে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুরের ঘটনায় আরেকটি মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে মহানগরের কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলাটি করেন বাটার আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মোস্তাসিম বিল্লাহ। এতে অজ্ঞাতনামা ৮০০-৯০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে বাটা কর্তৃপক্ষ মামলা করার পরপরই পুলিশ অভিযানে নামে। রাত ১১টার দিকে লুট করা দুই জোড়া বাটা জুতাসহ পুলিশ অভিযুক্ত দুই তরুণকে গ্রেপ্তার করে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক।
গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে সিলেটে বের করা বিক্ষোভ মিছিল থেকে নগরের ১৩টি দোকান-রেস্তোরাঁ, সুপারশপ ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে লুটপাটও চালানো হয়। গত সোমবার বিকেল চারটা থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত এসব হামলা ও লুটপাট চলে। ১৩টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের বাইরে নগরের বিভিন্ন এলাকার আরও কিছু প্রতিষ্ঠানে বিচ্ছিন্নভাবে লুটপাট চালানোর অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরা।
পুলিশ জানিয়েছে, হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় এরই মধ্যে ভুক্তভোগী তিনটি প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার সকালে মীরবক্সটুলা এলাকার রয়্যাল মার্ক হোটেলের ব্যবস্থাপক আবদুল মতিন সরকার তাঁদের হোটেল ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় একটি মামলা করেন। ওই মামলায় মোট ২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুনসিলেটে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা–ভাঙচুরের ঘটনায় আরেক মামলা, আসামি ৮০০১২ ঘণ্টা আগেএ ছাড়া নগরের দরগাগেট এলাকার ডমিনোজ পিৎজায় ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় গতকাল বুধবার বিকেলে একটি মামলা করেন। প্রতিষ্ঠানটির শাখা ব্যবস্থাপক আল আমিন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ৭০০ থেকে ৮০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। গতকাল মধ্যরাত পর্যন্ত সব মিলিয়ে পুলিশ মোট ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানিয়েছে। এর মধ্যে দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য পাঁচ দিন করে রিমান্ড চেয়ে গতকাল আদালতে আবেদন করা হয়েছে।
আরও পড়ুনসিলেটে ফুটেজ দেখে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলাকারীদের খুঁজছে পুলিশ, গ্রেপ্তার ১৮০৮ এপ্রিল ২০২৫কোতোয়ালি থানার ওসি জিয়াউল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘যেহেতু প্রতিটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনার ভিডিও ফুটেজ পুলিশের হাতে রয়েছে, তাই দোষীদের শনাক্ত করা গেছে। এখন অভিযান চালিয়ে অপরাধীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ও ল টপ ট র ঘটন য় গতক ল নগর র
এছাড়াও পড়ুন:
লাখপুরের রংবাহারি রাম্বুটান
১৯ জুলাই সকাল ১০টা। নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মরজাল বাজারে গাড়ি থেকে নামলাম। ততক্ষণে ব্যাপারীদের পাইকারি কেনাকাটা শেষ। মালপত্র বেঁধেছেঁদে গাড়িতে তোলা হচ্ছে। কিন্তু ফুটপাতে তখনো ভিড়। খুচরা ক্রেতারা পছন্দের জিনিস কিনতে দরদাম করছেন। ভিড়ের মধ্যে ঢুকে পড়লাম, দেখা যাক কী পাওয়া যায়।
কাঁঠালের দোকানে তেমন ভিড় নেই। লটকনের দোকান বেশি, বিক্রিও ভালো। আকার অনুযায়ী দাম। এখানে না এলে জানতামই না, এত বড় আকারের লটকন হতে পারে! এক গৃহস্থ টুকরিতে কলম্বো লেবু নিয়ে বসে আছেন। এই লেবু আকৃতি ও সুগন্ধের জন্য বিখ্যাত। আরেকটু এগিয়ে গিয়ে থামতেই হলো। কয়েকটি দোকানে সাজানো হলুদ আর লাল রঙের রাম্বুটান!
দেখতে ফুলের মতো আকর্ষণীয় রঙের এই ফল সবার নজর কাড়ছে। ক্রেতারা দাম জানতে চাইছেন। কেউ কেউ কিনছেনও। জানতে চাইলাম, এই রাম্বুটান কোথা থেকে এল? দোকানির উত্তর শুনে চোখ ছানাবড়া। নরসিংদীর কয়েকটি গ্রামেই নাকি ইদানীং চাষ হচ্ছে রাম্বুটান। দারুণ ব্যাপার। এ খবর জানা ছিল না।
কাছাকাছি দূরত্বে কোনো গ্রামে গেলে কি রাম্বুটানের বাগান দেখতে পাওয়া যাবে? এ প্রশ্নের উত্তর দিলেন স্থানীয় কৃষি উদ্যোক্তা মো. সুজন মিয়া। তিনি জানালেন,Ñকাছেই বেলাব উপজেলার লাখপুর গ্রামে চমৎকার একটি বাগান আছে।
আমরা দ্রুত বাগানের পথ ধরি। বাগানে যেতে যেতে মনে হলোÑ ঘন গাছপালার ছাউনির ভেতর দিয়ে ক্রমেই যেন হারিয়ে যাচ্ছি! এখানকার বেশির ভাগ গাছই লটকনের। বাগানগুলো এতই বড় যে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত ভালোভাবে দেখা যায় না।
অল্প সময়ের মধ্যে পৌঁছে গেলাম লাখপুর গ্রামে। উয়ারী ও বটেশ্বর–লাগোয়া এই গ্রামে রাম্বুটানের বাগানে গিয়ে চমকে উঠি। বেশ বড় বড় অনেক গাছ। গাছে গাছে দুই রঙের রাম্বুটান। চমৎকার দৃশ্য।
এ রংবাহারি ফল দেখার জন্য সারা দিন অনেক মানুষ ভিড় করেন সেখানে। কেউ কেউ দেখছেন, আবার কিনছেনও। একটু সময় নিয়ে বাগানটি ঘুরে দেখি। ছয়-সাত বছর বয়সী সব গাছই ফলভারে আনত। পাকা ফলগুলো দেখতে রঙের ঝরনাধারার মতো, বহুবর্ণিল। বাগান থেকে তরতাজা কিছু ফল কিনি। মন ভরে ছবি তুলি।
একসময় রাম্বুটান চিনতাম না। ২০০৫ সালে হংকংয়ে বেড়াতে গিয়ে বন্ধু মোস্তাফিজুর রহমান শাহিনের বাসায় প্রথম এ ফল খাই। পরে কুয়ালালামপুর শহরের আশপাশে রাম্বুটানের অনেক গাছ দেখেছি। দুই বছর পর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্মপ্লাজম সেন্টারে গাছভর্তি রাম্বুটান দেখে চমৎকৃত হয়েছিলাম। বীজ থেকে তৈরি চারাগুলো সেখানে প্রথম লাগানো হয় ১৯৯৮ সালে। প্রায় সাত বছর পর গাছগুলোতে ফল আসতে শুরু করে। আকৃতি ও স্বাদের দিক থেকেও ফলগুলো সমমানের।
বাগানে সুদর্শন হলুদ রঙের রাম্বুটান