নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতাউর রহমান। তাঁর অফিসে ঢুকে গত ৮ এপ্রিল দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে কতিপয় ব্যক্তি। ঘটনার পরপরই থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন তিনি।

জানা গেছে, আংশিক নির্মাণ হওয়া উপজেলা পরিষদের সীমানাপ্রাচীরের গ্রিল, ইট লুটপাট করছে একটি মহল। সীমানাপ্রাচীর ভাঙচুর করেছে। অফিসের গুরুত্বপূর্ণ ফাইলপত্র, ইলেকট্রনিক ডিভাইসসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন কর্মকর্তারা। উপজেলা পরিষদটি জনবিচ্ছিন্ন এলাকায় হওয়ায় রাতের বেলা অফিসার্স কোয়ার্টার ও ডরমিটরিতে বসবাসরত মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। পরিত্যক্ত ভবনগুলোর দরজা-জানালা, গ্রিল ও বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম প্রতিনিয়ত লুট হচ্ছে। রাতের বেলা উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন অংশে মাদকসেবীদের আড্ডা জমে ওঠে।

সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলা পরিষদের চারদিকে পরিপূর্ণ সীমানাপ্রাচীর নেই। উপজেলা পরিষদের উত্তর পাশে ইউএনওর বাসভবন। স্থানীয় একটি মহল উপজেলা পরিষদ চত্বরের রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুট, সীমানাপ্রাচীর ঘেঁষে সেপটিক ট্যাঙ্ক স্থাপন ও সীমানাপ্রাচীর ভাঙচুর করে। এ নিয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করায় হুমকি দিচ্ছে মহলটি। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ইউএনও আতাউর রহমান। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন দেওয়ানগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল হোসেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) খবিরুজ্জামান খান জানান, অফিসে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র ও ইলেকট্রনিক ডিভাইস থাকে। সেসব চুরি হয়ে গেলে বিপাকে পড়তে হবে তাদের। এ ক্ষেত্রে কঠোর নিরাপত্তা প্রয়োজন, কিন্তু দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদে তা নেই। অনতিবিলম্বে উপজেলা পরিষদের সীমানাপ্রাচীর নির্মাণসহ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা প্রয়োজন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন জানান, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদ এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা প্রয়োজন। রাতের বেলা মাঠে ও পুকুরপাড়ে বখাটেদের আড্ডা জমে। উপজেলা পরিষদ চত্বর খোলামেলা। মাদকসেবীদের আনাগোনাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতাউর রহমানের ভাষ্য, তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। সীমানাপ্রাচীর ভাঙচুর করে রাষ্ট্রীয় অর্থ বিনষ্ট করেছে একটি মহল। তিনি বাধা দিতে গেলে একটি পক্ষ অপমানজনক কথাবার্তা বলছে। বিভিন্নজনের কাছে বিচার দিচ্ছে। তিনি বলেন, ‘গত ৮ এপ্রিল আমার অফিসে এসে– কীভাবে চাকরি করি, দেখে নেবে বলে হুমকি দিয়েছে। এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি। শুক্রবারও আমার বাসভবনের সামনে এসে বিভিন্ন ধরনের অশুভ কথা বলেছে। আমি সেনাবাহিনীকে জানিয়েছি।’ কারা হুমকি দিয়েছে– জানতে চাইলে অভিযুক্তদের পরিচয় জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন ইউএনও। জিডিতেও কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর মকর ত উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

আ.লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করে ইউএনওকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভার হরিতলা মোড়ে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে ইউএনওর অপসারণের দাবি জানানো হয়।

এলাকার সচেতন নাগরিক, ব্যবসায়ী মহল, অভিভাবক, ছাত্রছাত্রী, কর্মচারী-শিক্ষকমণ্ডলীর ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়। এতে এলাকাবাসী ছাড়া তাহেরপুর কলেজের অধিকাংশ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন থেকে কলেজের সম্পত্তি অন্যত্র ইজারা দেওয়ার চেষ্টার প্রতিবাদ জানানো হয়।

তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়। পৌরসভার নির্মিত দোকানঘর থেকে তাহেরপুর কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ায় এ কর্মসূচি পালন করা হয় বলে অভিযোগ। আওয়ামী লীগের নেতার দাবি, তিনি দলীয় পরিচয়ে নয়, কলেজশিক্ষক হিসেবে মানববন্ধনে যোগ দিয়েছেন। তবে ব্যানারে ফ্যাসিবাদ শব্দটি প্রথমে দেখেননি। পরে দেখেছেন।

মানববন্ধনে তাহেরপুর কলেজের শিক্ষক রইচ আহমেদ, সুরাইয়া আক্তার, তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ইসমাইল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন। বক্তারা বাগমারার ইউএনওকে ফ্যাসিবাদের দোসর ও চব্বিশের চেতনাবিরোধী অভিযোগ তুলে তাঁদের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ার নিন্দা জানান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তাহেরপুর কলেজ–সংলগ্ন স্থানে পৌর কর্তৃপক্ষ দোকানঘর নির্মাণ করেছে। পৌরসভার পক্ষে নিয়মিত ভাড়া আদায় করা হয় ওই প্রতিষ্ঠান থেকে। ৫ আগস্টের পর থেকে কলেজের পক্ষ থেকে ৪১টি দোকানঘর নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করা হয়।

পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে বাগমারার ইউএনও দোকানঘর থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেন। দোকানঘরগুলো পৌরসভার হওয়ায় তারাই সেখান থেকে ভাড়া আদায় করবে বলে জানানো হয়। সেখান থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ আর ভাডা আদায় করবে না জানিয়ে ২২ এপ্রিল পৌরসভার প্রশাসককে লিখিতভাবে জানান কলেজের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম। এর পর থেকে কর্তৃপক্ষ ইউএনওর ওপর ক্ষুব্ধ হয়।

তাহেরপুর কলেজের সহকারী অধ্যাপক সুরাইয়া আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, কলেজের জায়গায় তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়ব ও সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ দোকানঘর নির্মাণ করে মোটা অঙ্কের টাকায় ভাড়া দেন। ৫ আগস্টের পর তাঁরা (কলেজ কর্তৃপক্ষ) সেগুলো নিয়ন্ত্রণে নেন। তবে ২২ এপ্রিল ইউএনও সাদা কাগজে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছ থেকে ভাড়া আদায় বিষয়ে একটি লিখিত নিয়েছেন। এর প্রতিবাদে মূলত তাঁদের এই কর্মসূচি।

পৌরসভার দোকানঘর থেকে কেন পৌরসভা ভাড়া আদায় করবে না জানতে চাইলে সুরাইয়া আক্তার বলেন, ‘জায়গাগুলো কলেজের ছিল।’ ব্যানারে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখা হলেও কেন আওয়ামী লীগের নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করলেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কলেজের স্বার্থে আমরা এক।’

জানতে চাইলে ইউএনও মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, দোকানগুলো তাহেরপুর পৌরসভার। সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করে পৌরসভার কোষাগারে জমা করা হয়। তিনি প্রশাসক হিসেবে ভাড়া আদায়ের উদ্যোগ নিয়েছেন। কলেজের অধ্যক্ষ নিজেই জানিয়েছেন, এখন থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ ভাড়া আদায় করবে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাতে ‘টর্চলাইট জ্বালিয়ে’ দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ইউএনও-ওসিসহ আহত ৩০
  • পড়াশোনায় ফিরছেন দিনাজপুরের ‘ইংলিশম্যান’ হৃদয়, শেখাবেন ইংরেজি
  • আ.লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করে ইউএনওকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা
  • নারায়ণগঞ্জে ৩০ স্কুলে চালু হলো ‌‘মিড ডে মিল’
  • গাজীপুরে ১০ মাটি খেকোকে কারাদণ্ড
  • পাঠাগার থেকে লুট হওয়া বই ফেরত পেলো কর্তৃপক্ষ
  • দমদমিয়া আলোর পাঠশালায় গিয়ে শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নিলেন ইউএনও
  • রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশ, লুট হওয়া বই ফেরত পেল পাঠাগার কর্তৃপক্ষ