হুমকিতে উদ্বিগ্ন ইউএনও, নিরাপত্তা চেয়ে জিডি
Published: 12th, April 2025 GMT
নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতাউর রহমান। তাঁর অফিসে ঢুকে গত ৮ এপ্রিল দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে কতিপয় ব্যক্তি। ঘটনার পরপরই থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন তিনি।
জানা গেছে, আংশিক নির্মাণ হওয়া উপজেলা পরিষদের সীমানাপ্রাচীরের গ্রিল, ইট লুটপাট করছে একটি মহল। সীমানাপ্রাচীর ভাঙচুর করেছে। অফিসের গুরুত্বপূর্ণ ফাইলপত্র, ইলেকট্রনিক ডিভাইসসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন কর্মকর্তারা। উপজেলা পরিষদটি জনবিচ্ছিন্ন এলাকায় হওয়ায় রাতের বেলা অফিসার্স কোয়ার্টার ও ডরমিটরিতে বসবাসরত মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। পরিত্যক্ত ভবনগুলোর দরজা-জানালা, গ্রিল ও বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম প্রতিনিয়ত লুট হচ্ছে। রাতের বেলা উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন অংশে মাদকসেবীদের আড্ডা জমে ওঠে।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলা পরিষদের চারদিকে পরিপূর্ণ সীমানাপ্রাচীর নেই। উপজেলা পরিষদের উত্তর পাশে ইউএনওর বাসভবন। স্থানীয় একটি মহল উপজেলা পরিষদ চত্বরের রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুট, সীমানাপ্রাচীর ঘেঁষে সেপটিক ট্যাঙ্ক স্থাপন ও সীমানাপ্রাচীর ভাঙচুর করে। এ নিয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করায় হুমকি দিচ্ছে মহলটি। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ইউএনও আতাউর রহমান। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন দেওয়ানগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল হোসেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) খবিরুজ্জামান খান জানান, অফিসে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র ও ইলেকট্রনিক ডিভাইস থাকে। সেসব চুরি হয়ে গেলে বিপাকে পড়তে হবে তাদের। এ ক্ষেত্রে কঠোর নিরাপত্তা প্রয়োজন, কিন্তু দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদে তা নেই। অনতিবিলম্বে উপজেলা পরিষদের সীমানাপ্রাচীর নির্মাণসহ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা প্রয়োজন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন জানান, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদ এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা প্রয়োজন। রাতের বেলা মাঠে ও পুকুরপাড়ে বখাটেদের আড্ডা জমে। উপজেলা পরিষদ চত্বর খোলামেলা। মাদকসেবীদের আনাগোনাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতাউর রহমানের ভাষ্য, তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। সীমানাপ্রাচীর ভাঙচুর করে রাষ্ট্রীয় অর্থ বিনষ্ট করেছে একটি মহল। তিনি বাধা দিতে গেলে একটি পক্ষ অপমানজনক কথাবার্তা বলছে। বিভিন্নজনের কাছে বিচার দিচ্ছে। তিনি বলেন, ‘গত ৮ এপ্রিল আমার অফিসে এসে– কীভাবে চাকরি করি, দেখে নেবে বলে হুমকি দিয়েছে। এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি। শুক্রবারও আমার বাসভবনের সামনে এসে বিভিন্ন ধরনের অশুভ কথা বলেছে। আমি সেনাবাহিনীকে জানিয়েছি।’ কারা হুমকি দিয়েছে– জানতে চাইলে অভিযুক্তদের পরিচয় জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন ইউএনও। জিডিতেও কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারের ভেতরে একটা অংশ নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে: এনসিপি
সরকারের ভেতরের একটি পক্ষ ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশের বাইরে গিয়ে নিজেরাই ঐকমত্য কমিশন হওয়ার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, এই চেষ্টার কারণে নির্বাচন ঝুঁকিতে পড়বে।
আজ সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আখতার হোসেন এ কথা বলেন।
আখতার হোসেন বলেন, তাঁদের কাছে স্পষ্টতই প্রতীয়মান যে সরকারের ভেতরের কোনো একটা অংশ সংস্কারকে ভন্ডুল করে নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ–আলোচনার ভিত্তিতেই কমিশন সুপারিশ উপস্থাপন করেছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সেই সুপারিশের ভিত্তিতেই সরকার আদেশ জারি করবে, সেটাই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যখন সরকারের তরফ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে আরও এক সপ্তাহ রাজনৈতিক দলগুলোকে আলাপ–আলোচনার কথা বলা হয়, তখন মনে হয় যে সরকার আসলে এই সংস্কারের বিষয়গুলো নিয়ে সাপ-লুডো খেলছে। তিনি বলেন, ‘আমরা ৯৬-তে পৌঁছে গিয়েছিলাম, সেটাকে আবার তিনে নিয়ে আসা হয়েছে সাপ কেটে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের বর্তমান যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, তাতে সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে।’
অতি দ্রুত সরকারকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানিয়ে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সরকারকে নিজেকেই দায়িত্ব নিয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করতে হবে। সামনের সংসদকে গাঠনিক ক্ষমতা প্রদান করার মধ্য দিয়ে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। গণভোটের মাধ্যমে অর্জিত জনগণের অভিপ্রায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে যেন বাস্তবায়িত হয়, সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে।