বন্ড কী, কীভাবে কাজ করে, ট্রাম্পের শুল্ক স্থগিতের সঙ্গে সম্পর্কই–বা কী
Published: 13th, April 2025 GMT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক–যুদ্ধ বাজারে রীতিমতো ভীতি সৃষ্টি করেছে। ইউরোপ ও আমেরিকায় মন্দার আশঙ্কা বেড়েছে। কিন্তু এসব কারণে যে ট্রাম্প ৯ এপ্রিল একদম উল্টো পথে হাঁটা শুরু করেছেন, তা নয়। যে ২ এপ্রিল তিনি স্বাধীনতা দিবস ঘোষণা করলেন, সেই স্বাধীনতার ফল ভোগের বিষয়টি ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেছেন ভিন্ন এক কারণে।
বিষয়টি হলো, ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার পর বিশ্ববাজারে পতনের পাশাপাশি মার্কিন সরকারি বন্ড বিক্রির হারও প্রথাবিরুদ্ধভাবে বেড়ে গেল, তার জেরে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এই বন্ড প্রকৃতপক্ষে কী জিনিস, বন্ডের বেচাকেনাও বা কীভাবে হয়, এই সংকটের কেন্দ্রীয় জায়গায় বন্ডই–বা কেন উঠে এল?
বন্ড কী
বন্ড একধরনের প্রত্যয়নপত্র বা সার্টিফিকেট। কারও হাতে এই প্রত্যয়নপত্র থাকার অর্থ হলো, তিনি কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিয়েছেন এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেই ঋণের অর্থ তিনি ফেরত পাবেন। এর বিনিময়ে নির্দিষ্ট হারে সুদও দেওয়া হয়। যে বিনিয়োগকারীরা স্থিরতা চান অর্থাৎ নির্দিষ্ট মুনাফা চান, তাঁদের জন্য এই বন্ড।
অর্থব্যবস্থায় করপোরেশনগুলো যেমন বন্ডের বিনিময়ে ঋণ নেয়, তেমনি সরকারও বন্ড ছেড়ে ঋণ গ্রহণ করে। এই অর্থ দিয়ে সরকার বিনিয়োগ বা প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করে। বিভিন্ন দেশের সরকার বিভিন্ন নামে এই বন্ড ছেড়ে থাকে, যেমন যুক্তরাজ্য সরকারের বন্ড গিল্টস নামে পরিচিত; মার্কিন সরকারের বন্ড ট্রেজারি নামে পরিচিত। এই ট্রেজারি বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ বিনিয়োগ মাধ্যম হিসেবে পরিচিত। কারণ, বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি পরিচালনাকারী সরকার এই বন্ডের নিশ্চয়তা দিয়ে থাকে। বিভিন্ন মেয়াদে এই বন্ড ছাড়া হয়, যেমন ২ বছর, ১০ ও ৩০ বছর।
কীভাবে বন্ডের কেনাবেচা হয়
এই বন্ড শেয়ারের মতো বাজারে কেনাবেচা করা যায়। কিন্তু শেয়ারের সঙ্গে তার পার্থক্য হলো, বন্ডের প্রাপ্য নির্ধারিত, যেখানে শেয়ারের দাম বাজারে প্রতিনিয়তই ওঠানামা করে। বন্ডের বাজার বিশ্বের বৃহত্তম সিকিউরিটিস এক্সচেঞ্জ—১৩০ ট্রিলিয়ন বা ১ কোটি ৩০ লাখ কোটি ডলারের বাজার এই বন্ডের। এর মধ্যে ৪০ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বন্ড।
সরকারের বন্ড সাধারণত নিলামের মাধ্যমে করপোরেশনের কাছে বিক্রি করা হয়। এরপর সেকেন্ডারি বাজারে এর অভিহিত মূল্যের চেয়ে কম বা বেশি দামে এই বন্ড বিক্রি করা যায়।
বন্ডের সুদহার কী
বন্ডের সুদহার ইংরেজিতে ইন্টারেস্ট নয়; বরং ইল্ড নামে পরিচিত। বন্ডের দাম যখন কমে যায়, তখন সুদহার বেড়ে যায়। অর্থাৎ চাহিদা কমে গেলে সরকার বিক্রি বাড়াতে সুদহার বাড়িয়ে দেয়। এর অর্থ হলো, বিনিয়োগকারীরা বন্ডের বিষয়ে আগ্রহ হারাচ্ছেন। নানা কারণেই তা হতে পারে। তার মধ্যে অন্যতম হলো, বন্ড যারা ছাড়ছে, তাদের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা। সরকারি বন্ডের বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কমে যাওয়ার অর্থ হলো, অর্থনীতি বা অর্থব্যবস্থা নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হওয়া।
মূল্যস্ফীতির ধারণাও বন্ডের সুদহারে প্রভাব ফেলে। মূল্যস্ফীতির কারণে মুনাফার গুড় পিঁপড়ায় খায় কি না, সেই আশঙ্কা থেকে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। এর অর্থ হলো, ভবিষ্যতে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলে বিনিয়োগকারীরা বাড়তি সুদ চাইতে পারেন। অন্যান্য আর্থিক পণ্য, যেমন বন্ধকি ঋণের সুদ বন্ডের সুদহারের ওপর নির্ভর করে বলে বৃহত্তর অর্থনীতিতে তার প্রভাব পড়তে পারে।
ট্রাম্পের শুল্কের কারণে বন্ডের কী হয়েছে
ট্রাম্প প্রথমে ভেবেছিলেন, শুল্কের ঘোষণা আসার পর শেয়ারবাজারে সূচকের পতন হবে বা ডলারের বিনিময় হার কমে যাবে। তিনি ভেবেছিলেন, বছরের শেষ ভাগে শুল্কের অর্থ দিয়ে কর হ্রাসের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন। এর অর্থ হলো, মার্কিন সরকার বন্ড ছাড়ার পরিমাণ সীমিত করে দেবে অর্থাৎ চাহিদা ও জোগানের মধ্যে সামঞ্জস্য বজায় রেখে সামগ্রিকভাবে সরকারের ঋণে লাগাম পরাবে।
কিন্তু শুল্ক ঘোষণার পর যেভাবে মন্দার আশঙ্কা জেঁকে বসল, তাতে মার্কিন সরকারকে ঋণ দেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে বলে মনে করেন বিনিয়োগকারীরা। এ ছাড়া চীনের সঙ্গে যেভাবে বড় ধরনের যুদ্ধে জড়িয়ে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তাতে এই দেশের পাশাপাশি সামগ্রিকভাবে বিশ্ব অর্থনীতি দীর্ঘ সময়ের জন্য স্থবির হয়ে পড়বে বলেও আশঙ্কা সৃষ্টি হয়।
এই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীরা বিপুল পরিমাণে মার্কিন বন্ড ছেড়ে দেওয়া শুরু করেন। এতে বন্ডের যেমন দাম কমে যায়, তেমনি সুদহারও বেড়ে যায়। ফলে মার্কিন সরকারের পক্ষে ঋণ নেওয়া আরও ব্যয়বহুল হয়ে পড়ে।
ট্রাম্পের কী হলো
এই পরিস্থিতিতে হোয়াইট হাউসেও আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। বেশি সুদে বন্ড বিক্রি করতে হলে তো সরকারি ঋণ ও ঘাটতি বাড়বে। এমনিতেই মার্কিন সরকার ঋণে জর্জরিত। এই পরিস্থিতিতে ব্যয় আরও বাড়লে পরিস্থিতির চরম অবনতি হবে।
আরও গুরুতর বিষয় হলো, যুক্তরাষ্ট্রের ২৯ ট্রিলিয়ন ডলারের ট্রেজারির বাজার বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থার ভিত্তি। বিনিয়োগকারীরা বিপুল পরিমাণে বন্ড ছেড়ে দিলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো খেলাপি হয়ে পড়বে এবং তাতে বড় পরিসরে আর্থিক সংকট হবে।
এখন ট্রাম্পের বিপদ হলো, তাঁর নীতির কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যেতে পারে। আগামী বছর মূল্যস্ফীতির হার ৪ দশমিক ৫ শতাংশে উঠতে পারে। সেটা হলে রিপাবলিকান দলের যে সমর্থকেরা তাঁকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় এনেছিলেন, তাঁরা বিগড়ে যেতে পারেন। ট্রাম্প যে ক্রমবর্ধমান খাদ্য মূল্যের রাশ টেনে ধরার প্রতিশ্রুতি দিয়েই ক্ষমতায় এসেছিলেন। বন্ডের সুদহার বাড়তি থাকলে বন্ধকি ঋণের সুদহারও বাড়বে। মানুষ মনে করতে পারে, এই শুল্ক কার্যত একধরনের কর। তখন তাঁর জনপ্রিয়তায় চিড় ধরতে পারে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম র ক ন সরক র বন ড র ব বন ড ছ ড় সরক র র সরক র ব আর থ ক র বন ড পর চ ত আশঙ ক
এছাড়াও পড়ুন:
চীনের ‘৯৯৬’ ছড়িয়ে পড়ছে সিলিকন ভ্যালিতে, আপনি কী করবেন
‘৯টা থেকে ৫টা’ পর্যন্ত কাজ করাকে সাধারণ জীবিকা উপার্জনের উপায় বলা হয়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালিতে এখন প্রতিযোগিতামূলক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দৌড়ে এগিয়ে থাকতে হলে ‘৯৯৬’ কাজ করতে হয়। অন্তত আশপাশের মানুষকে দেখাতে হয় যে আপনি কাজটাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন।
‘৯৯৬’ মানে হচ্ছে সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত, সপ্তাহে ৬ দিন কাজ করা। এ ধারার যাত্রা শুরু হয় চীনের কঠিন পরিশ্রমী টেক ইন্ডাস্ট্রি থেকে। ২০২১ সালে চীনের একটি উচ্চ আদালত কোম্পানিগুলোকে ৭২ ঘণ্টার কাজের সপ্তাহ চাপিয়ে দেওয়া নিষিদ্ধ করে। কিন্তু তবু ক্যালিফোর্নিয়ার টেক কর্মীরা এই ধারণাটিকে আঁকড়ে ধরে আছে এবং সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় এক্স আর লিংকডইনে এটি নিয়ে অবিরত পোস্ট করে যাছে।
আরও পড়ুনএআই বাড়াচ্ছে কাজের চাপ, চীনের ‘৯৯৬’ সংস্কৃতি কি ফিরছে১২ অক্টোবর ২০২৫এখনো এর প্রমাণ মূলত গল্প-গুজব, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেই সীমিত। তবে কিছু কোম্পানি চাকরির বিজ্ঞাপনে কর্মী ৭০ ঘণ্টার বেশি কাজ করবেন সপ্তাহে—এই প্রত্যাশা স্পষ্ট করা থাকছে। শোনা যাচ্ছে, নির্বাহীরা চাকরিপ্রার্থীদের জিজ্ঞাসা করছেন, তাঁরা কি এ ধরনের সময়সূচি মানতে রাজি। আর ‘র্যাম্প’ নামের একটি ফাইনান্সিয়াল অপারেশন স্টার্টআপ এক ব্লগ পোস্টে জানিয়েছে, এ বছরের প্রথমভাগে সান ফ্রান্সিসকোতে শনিবারের দিনে করপোরেট ক্রেডিট কার্ড লেনদেন বেড়েছে, যেটি তারা ধরে নিয়েছে, মানুষ বেশি উইকেন্ডেও কাজ করছেন।
যদিও সিলিকন ভ্যালির জন্য শব্দটি নতুন, ৯৯৬ আসলে বহুদিনের চর্চার এক তীব্র সংস্করণ। ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসবিদ মার্গারেট ও’মারা, যিনি ‘দ্য কোড: সিলিকন ভ্যালি অ্যান্ড দ্য রিমার্কিং অব আমেরিকা’ বইয়ের লেখক, বলছেন, ১৯৬০ সাল থেকেই যখন সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানিগুলো তীব্র প্রতিযোগিতায় ছিল, তখন থেকেই অনেক টেক কোম্পানির কঠোর, দীর্ঘ সময় কাজ করার সংস্কৃতি ছিল। বাইরে থেকে তারা ছিল ‘ক্যালিফোর্নিয়া ক্যাজুয়াল’ কিন্তু ভেতরে ‘পুরোনো দিনের কর্মপাগল’।
বার্কলের সমাজবিজ্ঞানী ক্যারোলিন চেন। তিনি ‘ওয়ার্ক প্রে কোড’ বইয়ের লেখক। তিনি বলেন, টেক কর্মীদের একধরনের তীব্র, প্রায় ধর্মীয় ভক্তিভরে কাজ করার মানসিকতা সিলিকন ভ্যালির সংস্কৃতির অংশ। তিনি আরও বলেন, টেকে একধরনের ‘নায়কোচিত পুরুষতান্ত্রিক সংস্কৃতি’ আছে, যা সবার কাছেই সব সময় কাজ করার প্রত্যাশা তৈরি করে।
মার্গারেট ও’মারা মনে করেন, এই হ্যাস্টল কালচার যাদের পরিবার বা অন্য দায়িত্ব আছে, তাদের নাগালের বাইরে এবং এটি এমনিতেই একরঙা (কম বৈচিত্র্যময়) শিল্প খাতকে আরও সংকীর্ণ করে তুলতে পারে। তবে যারা বড় কোনো আইডিয়ায় প্রথমেই ঢুকে পড়তে পেরেছে এবং নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করতে রাজি ও সক্ষম, তাদের জন্য পুরস্কার বিশাল। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় এখন যেভাবে বিপুল বিনিয়োগ আসছে, তা ভবিষ্যতের সম্পদকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। একই সময়ে টেক কর্মীরা আগের তুলনায় অনেক বেশি অনিরাপদ বোধ করছেন।
কয়েক বছরের ছাঁটাই, উচ্চ সুদের হার আর অনিশ্চিত মুনাফার পরে টেক ইন্ডাস্ট্রি—যা একসময় দারুণ বেনিফিটের জন্য পরিচিত ছিল—এখন কড়াকড়ি চালু করেছে। ইলন মাস্কের নিজেকে ঘোষিত ‘অত্যন্ত কঠোর’ কাজের ধরন এখন আর পুরো ইন্ডাস্ট্রি থেকে আলাদা নয়। সিলিকন ভ্যালিতে এখন ‘হার্ড টেক’ যুগ চলছে, আর পাগলের মতো কাজ করা (অথবা অন্তত এমনভাবে কাজের কথা বলা) হয়ে উঠেছে নতুন নিয়ম।
ও’মারা বলেন, ২০২০ সালের সিলিকন ভ্যালি আর ২০২৫ সালের সিলিকন ভ্যালির অগ্রাধিকার ভিন্ন।
অতিরিক্ত কাজে মানবিক ক্ষতি
অতিরিক্ত কর্মঘণ্টার মানবিক ক্ষতি প্রমাণিত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণায় দেখা গেছে, সপ্তাহে ৫৫ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করলে ৩৫ শতাংশ বেশি স্ট্রোকের ঝুঁকি তৈরি হয় এবং ১৭ শতাংশ বেশি হৃদ্রোগে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে। অতিরিক্ত কাজের ফলে কর্মীদের মানসিক ও শারীরিক সক্ষমতা মারাত্মকভাবে কমে যায়, মনোযোগ ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নষ্ট হয় এবং সৃজনশীলতা হ্রাস পায়।
ব্যবসার জন্যও ক্ষতিকর ‘৯৯৬’
কোম্পানিগুলো মনে করতে পারে, ৭০ ঘণ্টার কর্মসপ্তাহ উৎপাদনশীলতা বাড়ায়, কিন্তু গবেষণা বলছে, উল্টো কথা। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিবিদ জন পেনক্যাভেল দেখিয়েছেন, সপ্তাহে ৫০ ঘণ্টার পর উৎপাদনশীলতা দ্রুত কমতে থাকে। সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজ করা কর্মীদের উৎপাদন প্রায় ৫৫ ঘণ্টা কাজ করা কর্মীদের সমান, অর্থাৎ বাড়তি পরিশ্রম কোনো ফল দেয় না।
কর্মীদের করণীয়: সচেতনতা ও আত্মরক্ষা
এই সংস্কৃতি অর্থাৎ সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টার কর্মসংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়ার আগেই কর্মীদের সচেতন হওয়া জরুরি।
১. সতর্ক থাকুন
চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে যদি ‘২৪/৭ উপস্থিতি’ বা ‘অসীম প্রাপ্যতা’র উল্লেখ থাকে, সাবধান হোন। সাক্ষাৎকারে সরাসরি জিজ্ঞাসা করুন সাপ্তাহিক গড় কাজের সময় ও ওভারটাইম নিয়ে।
২. আইনি অধিকার সম্পর্কে জানুন
আপনি আওয়ারলি (ঘণ্টা অনুযায়ী) নাকি এক্সেম্পট (ওভারটাইম ছাড়া স্থায়ী বেতনভুক্ত), তা বুঝুন।
৩. সীমানা নির্ধারণ করুন
নিজের কাজের সময় নথিবদ্ধ করুন, ছুটি (পিপিও) অবশ্যই ব্যবহার করুন এবং নিয়মিত কাজের সময়ের বাইরে প্রাপ্যতার বিষয়ে স্পষ্ট যোগাযোগ রাখুন।
দীর্ঘ মেয়াদে টিকে থাকার কৌশল: বেশি নয়, স্মার্ট কাজ
চীনের ৯৯৬ অভিজ্ঞতা দেখিয়েছে, অতিরিক্ত কাজ স্বল্প মেয়াদে ফল দিলেও দীর্ঘ মেয়াদে তা ভালো ফল আনে না। কর্মীর চাকরি ছেড়ে দেওয়া, উৎপাদনশীলতা কমে যাওয়া এবং সমাজে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
স্মার্ট কোম্পানিগুলো এখন এআইকে ব্যবহার করছে মানুষের কাজের চাপ কমাতে, যাতে কর্মীরা সৃজনশীল ও কৌশলগত কাজে মনোযোগ দিতে পারেন সীমিত ও ভারসাম্যপূর্ণ সময়ের মধ্যে। যেসব প্রতিষ্ঠান ফ্লেক্সিবল কাজের সুযোগ, সত্যিকারের ওয়ার্ক-লাইফ ব্যালান্স এবং টেকসই ক্যারিয়ার তৈরি করছে, তারা এখন প্রতিভাবান কর্মী নিয়োগে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা পাচ্ছে।
তথ্যসূত্র: দ্য নিউইয়র্ক টাইমস ও ফোর্বস