ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড সমর্থকদের অশালীন গালিগালাজের ঠিক এক সপ্তাহের মাথায় বিলাসবহুল বাড়ি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইংল্যান্ডের ফুটবল তারকা ফিল ফোডেনের মা, ক্লেয়ার রোল্যান্ডস। ম্যানচেস্টার ডার্বিতে তার উদ্দেশে দেওয়া কুরুচিপূর্ণ স্লোগানের পর তিনি ও তার পরিবার আর সেই বাড়িতে থাকতে চান না বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

চেশায়ারের অভিজাত এলাকা প্রেস্টবুরিতে অবস্থিত বাড়িটি ফোডেন কিনেছিলেন ২০২১ সালে, প্রায় ২.

৮ মিলিয়ন পাউন্ডে। বর্তমানে বাজারে এই বাড়িটি ৩ মিলিয়ন পাউন্ডের বেশি দামে বিক্রির জন্য তোলা হয়েছে। বাড়িটিতে রয়েছে ব্যক্তিগত সিনেমা হল, সুইমিং পুল, জিম, ওয়াইন সেলার এবং অত্যাধুনিক গলফ সিমুলেটর। এই বাড়িতেই একসময় ফোডেন বসবাস করতেন তার মা ক্লেয়ার ও বাবা ফিল সিনিয়রের সঙ্গে। পরে মঙ্গেত্রী রেবেকা কুক ও তিন সন্তানকে নিয়ে কাছাকাছি একটি বাড়িতে ওঠেন তিনি।

সম্প্রতি ওল্ড ট্রাফোর্ডে ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে গোলশূন্য ড্র ম্যাচে ফোডেনকে লক্ষ্য করে কুরুচিকর স্লোগান দেয় ইউনাইটেড সমর্থকরা। ইনজুরির কারণে মাঠ ছাড়ার সময় তার মাকে লক্ষ্য করে অশালীন স্লোগান দেন তারা। ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান ফোডেনের দাদি মেরি কিটস এবং সিটির কোচ পেপ গার্দিওলা। গার্দিওলা বলেন, ‘এটি বাজে আচরণ। একজন মায়ের বিরুদ্ধে এমন ভাষা ব্যবহার করা লজ্জাজনক।’

তবে শুধু গ্যালারির কটূক্তি নয়, বিভিন্ন সময় প্রতিবেশীদের সঙ্গে বিরোধেও জড়িয়েছেন ফোডেনের মা। ২০২২ সালে বাড়িতে আতশবাজি উৎসব আয়োজন করায় পুলিশে অভিযোগ আসে। কোনো আগাম ঘোষণা ছাড়াই আয়োজন করা ওই আতশবাজির শব্দে আশপাশের শিশু ও পোষা প্রাণীরা ভীত হয়ে পড়ে।

২০২৪ সালের জানুয়ারিতে এক নাইটক্লাব থেকে ফোডেনের মা’কে হাতকড়া পরিয়ে বের করে দেয় পুলিশ। ওয়েলসের বেন্টলিজ নাইটক্লাবে এক ব্যক্তির মাথা থেকে টুপি ফেলে দিয়ে আবার তা পরানোর চেষ্টা করেন তিনি। পরে আদালতে তিনি বলেন, ‘আমি বেশি খাই না, কিন্তু খেলে পশুর মতো হয়ে যাই। এটা আমার পার্টি ট্রিক।’ 

২০২২ সালে একটি বক্সিং ম্যাচে ক্লেয়ারের ওপর হামলার ঘটনাও আলোচনায় আসে। ম্যানচেস্টারের এও অ্যারিনায় সিটির এক ম্যাচ শেষে ফোডেনকে হেনস্তার পর পেছনের এলাকায় তার মাকে ঘুষি মারে এক দুর্বৃত্ত। এইসব বিতর্ক, প্রতিবেশীদের বিরক্তি এবং সর্বশেষ গালিগালাজের ঘটনার পর নতুন করে চাপের মুখে পড়েছে ফোডেন পরিবার। সব মিলিয়ে প্রেস্টবুরির সেই বাড়ি এখন তাদের কাছে যেন ‘ঝামেলার কেন্দ্র’ হয়ে উঠেছে। ফলে বাড়িটি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ক্লেয়ার রোল্যান্ডস।

ফিল ফোডেনও বর্তমানে সময় পার করছেন মাঠের বাইরে। ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে সিটির সর্বশেষ ম্যাচে স্কোয়াডেই ছিলেন না তিনি। আগামী সপ্তাহে গুডিসন পার্কে এভারটনের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তাকে দলে পেতে চাইবে সিটিজেনরা।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে 

বাংলাদেশে বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ১৯ দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে দিয়ে দেশে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশের প্রতি আন্তর্জাতিক আস্থার প্রতিফলন দেখা গেছে।

বিশ্বব্যাংকের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সম্প্রতি যেসব দেশে গণঅভ্যুত্থান ঘটেছে, সেসব দেশে পরবর্তী এক বছরে এফডিআই উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় ২০২২ সালের পর এফডিআই কমেছে ১৯.৪৯ শতাংশ, চিলিতে ২০১৯ সালের পর কমেছে ১৫.৬৮ শতাংশ, সুদানে ২০২১ সালের পর ২৭.৬০ শতাংশ, ইউক্রেনে ২০১৪ সালের পর ৮১.২১ শতাংশ, মিশরে ২০১১ সালের পর ১০৭.৫৫ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ায় ১৯৯৮ সালের পর ১৫১.৪৯ শতাংশ কমেছে। এই ধারাবাহিক হ্রাসের মধ্যে বাংলাদেশে এফডিআইর ১৯.১৩ শতাংশ বৃদ্ধির চিত্র বিশেষভাবে নজরকাড়া।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, “বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গুণ হলো—শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অর্থনীতিকে পুনরায় চালু করার অদ্ভুত ক্ষমতা। এই পরিসংখ্যান তার দারুন একটা প্রতিফলন। সাধারণত, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যায়, কিন্তু আমরা উল্টা দেখছি। সঠিক নীতি নির্ধারণ, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার আন্তরিকতা এবং প্রাইভেট সেক্টরের অদম্য স্পৃহা কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। আমরা সব সময় বিনিয়োগকারীদের সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। সব সমস্যার সমাধান হয়নি, তবে সদিচ্ছার কোনো ত্রুটি ছিল না। শিগগিই সারা বছরের একটি আমলনামা (রিপোর্ট কার্ড) প্রকাশ করা হবে।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৪৮৮ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭০ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৩ সালে বিনিয়োগের পরিমাণ হয় ৯২৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, তবে ২০২৪ সালে কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬৭৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯২ দশমিক ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এই ধারা বজায় থাকা অত্যন্ত ইতিবাচক। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারবে বলে মনে করছেন তারা।

ঢাকা/নাজমুল/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে