পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পিবিপ্রবি) নানা আয়োজন এবং বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ৪র্থ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন করেছে। 

রোববার বেলা ১১টায় প্রশাসনিক ভবন প্রাঙ্গণে জাতীয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসটির আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। 

অনুষ্ঠানে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের  উপাচার্য অধ্যাপক ড.

শুচিতা শারমিন, পিবিপ্রবির সিন্ডিকেট সদস্য ব্যারিস্টার এম সরোয়ার হোসেন আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। 

অতিথিদের নিয়ে বেলুন উড়িয়ে ও কেক কেটে ৪র্থ বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের শুভ উদ্বোধন করেন পিবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম। পরে উপস্থিত সকলের অংশগ্রহণে একটি আনন্দ র‍্যালি শহরের সিও অফিস মোড় প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে এসে শেষ হয়।

পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় পেশাগত দক্ষতা উন্নয়ন ও অগ্রসরমান বিশ্বের সাথে সঙ্গতি রক্ষা, সমতা অর্জন এবং জাতীয় পর্যায়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা ও গবেষণায় সুযোগ সৃষ্টির লক্ষে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। পৃথিবী বদলানোর একমাত্র হাতিয়ার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি।

তিনি বলেন, পৃথিবীতে যত পরিবর্তন হয়েছে সব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির হাত ধরে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে আমরা কীভাবে ব্যবহার করব তা নির্ভর করে আমাদের ওপর। আমাদের উদ্দেশ্য ভালো হলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে আমরা জনকল্যাণে ব্যবহার করতে পারব। তাই আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য, এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ভালো মানুষ তৈরি করা। নতুন প্রজন্মের প্রত্যাশা অনুযায়ী আমরা সবার সম্মিলিত সহযোগিতায় এই বিশ্ববিদ্যালয়কে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবো।

এ সময় তিনি পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি পূর্ণাঙ্গ ও বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে পিরোজপুরবাসীর সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেন।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শারমিন বলেন, আজ পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই আয়োজনে উপস্থিত হতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। আমি নবীন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তরোত্তর সাফল্য ও সমৃদ্ধি কামনা করি।

পিবিপ্রবির সিন্ডিকেট সদস্য ব্যারিস্টার এম সরোয়ার হোসেন বলেন, দক্ষিণাঞ্চলে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পেছনে যারা কাজ করেছেন আমি তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। একইসঙ্গে যারা বিশ্ববিদ্যালয়টিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন আমি তাদেরও ধন্যবাদ জানাচ্ছি। পিরোজপুরের সংস্কৃতি, সম্প্রীতি ও শিক্ষা এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বড় ধরণের ভূমিকা পালন করবে।

পিরোজপুর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমান প্রশাসনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে সেই প্রত্যাশা করি।

দৈনিক ইত্তেফাকের পিরোজপুর ব্যুরোর প্রধান মো. মুনিরুজ্জামান নাসিম আলী বলেন, পিরোজপুরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর মধ্য দিয়ে এই শহরে শতাধিক নবীন প্রাণের আগমন ঘটেছে। আজকের এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমি তাদের স্বাগতম জানাচ্ছি। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সাফল্য কামনা করছি।

অনুষ্ঠানে পিরোজপুরের সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ পান্না লাল রায়, দৈনিক অবজারভারের পিরোজপুর প্রতিনিধি জিয়াউল আহসানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প ব প রব উপস থ ত

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা

‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’

এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন। 

এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী  বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’

প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ