পয়লা বৈশাখ ধরে রাখুক সংহতির ঐতিহ্য
Published: 14th, April 2025 GMT
বর্ষবরণ বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন সমাজের এমন একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, যা তার পরিচিতিকে নির্মাণ করে এবং স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যকে তুলে ধরে। বাঙালির বর্ষবরণ এমন একটি উদ্যাপন। আমাদের এই উদ্যাপন নিছক নতুন বর্ষকে বরণ করে নেওয়া নয়। এর সঙ্গে পুরোনো বর্ষকে বিদায় ও আরও কিছু সামাজিক প্রথার উদ্যাপন হয়ে থাকে। এর মধ্যে চৈত্রসংক্রান্তি ও হালখাতার কথা উল্লেখযোগ্য। শহর কিংবা এর বাইরে গ্রামীণ পরিসরে বৈশাখী মেলার আয়োজন আমাদের অনেক দিনের ঐতিহ্য। একটা সময় বছরের শেষ দিনকে স্মরণীয় করে রাখতে বিশেষ ধরনের খাবারের আয়োজন করা হতো। প্রস্তুতি চলত নতুন বছরকে আমন্ত্রণ জানানোর।
বর্ষবরণ হিসেবে পয়লা বৈশাখের উদ্যাপন সর্বজনীন একটি উদ্যাপন হিসেবে আমাদের সমাজে চলে আসছে। সর্বজনীন হলেও একেক সমাজের মানুষের মাঝে এর প্রকাশ ও ধারণ করবার বিষয়টি ভিন্ন। আমাদের সমাজে বছরের প্রথম দিন ভালোমন্দ খাবারের আয়োজনের একটা চল ছিল। আকাঙ্ক্ষা, যেন সারাটা বছর এমন করে ভালো যায়।
যতই বাইরের দুনিয়ার সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ বাড়তে শুরু করল, কলেজে যাওয়া থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সময়ে বৈশাখের রং পাল্টে যেতে থাকল। নতুন পাঞ্জাবি পরে, সকাল সকাল পান্তা-ইলিশ, ভর্তা-ভাজি ভাত দিয়ে নাশতা করা যেন সেই সময় একটা কাম্য বিষয় ছিল, যা এখনো তরুণ ও অন্যদের মাঝে একই আবেদন নিয়ে ধরা দেয়। এতে করে নিজেকে আরও বেশি ‘বাঙালি বাঙালি’ লাগত। মনে পড়ে, এই
ভর্তা-ভাজির বিষয়টিকে পুঁজি করে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ব্যক্তি সকালের নাশতা হিসেবে ভর্তা-ভাজির প্রচলন করলেন। তাঁর ভর্তা-ভাজির দোকান এতটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠল যে তাঁর দোকানের নাম হয়ে গেল ‘বাঙালির দোকান’ আর তাঁর নাম বাঙালি। এই বাঙালি নামের আড়ালে তাঁর আসল নাম হারিয়ে গেছে আমাদের কাছ থেকে।
একইভাবে পয়লা বৈশাখকে কেন্দ্র করে আমাদের উদ্যাপনও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উৎস থেকে সরে আসতে থাকল। এই উৎস ছিল আমাদের একসময়ের কৃষিভিত্তিক সমাজব্যবস্থার মাঝে। কৃষিভিত্তিক সমাজব্যবস্থার মধ্য দিয়েই বাংলা বর্ষবরণের বিকাশ ঘটে। বাংলাপিডিয়ায় উল্লেখ আছে, ‘কৃষিকাজের সুবিধার্থেই মোগল সম্রাট আকবর ১৫৮৪ খ্রিষ্টাব্দের ১০–১১ মার্চ বাংলা সন প্রবর্তন করেন এবং তা কার্যকর হয় তাঁর সিংহাসন আরোহণের সময় থেকে (৫ নভেম্বর ১৫৫৬)। হিজরি চান্দ্রসন ও বাংলা সৌরসনকে ভিত্তি করে বাংলা সন প্রবর্তিত হয়।’ সেই থেকে প্রচলন হলেও সময়ের সঙ্গে উদ্যাপনের ধরনের বদল ঘটতে থাকে।
সেই ইতিহাসের বাইরে গিয়ে বর্তমান সময়ের দিকে তাকানো যাক। প্রথম পরিবর্তনকে চিহ্নিত করা যায় ষাটের দশকে। তখন বাংলা বর্ষবরণ পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে একধরনের সাংস্কৃতিক প্রতিবাদের ভাষা ও চর্চা হিসেবে গড়ে উঠেছিল। সেই সময় থেকে সর্বসাধারণের মধ্যে ব্যাপক আকারে নববর্ষ উদ্যাপনের একটি গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়। ১৩৭৪ বঙ্গাব্দে (১৯৬৭) ছায়ানট রমনা বটমূলে আনুষ্ঠানিকভাবে নববর্ষ বরণের উৎসবের সূচনা ঘটায়। সেই ধারাবাহিকতা এখনো অব্যাহত আছে।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে ১৯৮৯ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ পয়লা বৈশাখে ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’ করে আসছে। নব্বইয়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের পটভূমিতে অমঙ্গল দূর করে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামে নববর্ষ উদ্যাপন শুরু হয়। আয়োজকেরা এ বছর থেকে এর আগের নাম ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’ নামে ফেরত যাচ্ছে। এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বলেছেন, ‘আমরা নাম পরিবর্তন করছি না। আমরা পুরোনো নাম এবং ঐতিহ্যে ফেরত যাচ্ছি, যেটা দিয়ে চারুকলার এই কার্যক্রম শুরু হয়েছিল।’ এবারের বর্ষবরণের প্রতিপাদ্য বিষয় হলো ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’।
উদ্যাপনের রং ও চর্চা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলায়। সময় বর্তমানকে সঙ্গে নিয়েই এগিয়ে চলে। একধরনের দ্বান্দ্বিকতার মধ্য দিয়ে সমাজের সাংস্কৃতিক চল বা প্রথার বদল ঘটে। যেমনটা এখন ঘটছে। তবে এই বদলের সময়টা পার করা অনেক সময় কঠিন হয়ে ওঠে। কেননা আকাঙ্ক্ষিত চর্চার সঙ্গে হারিয়ে যাওয়া চর্চার দ্বন্দ্বকে বর্তমান সময়ে সঠিকভাবে অনেক সময় ঠাহর করা যায় না। এই অস্পষ্টতা কিছুকাল পরে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সাংস্কৃতিক চর্চা যে শুধু নতুন কিছুই গ্রহণ করে, এমন নয়। অনেক সময় সে অতীত কোনো চর্চার দিকেও ফিরে যেতে পারে, যদি প্রয়োজন হয়। বিখ্যাত সমাজতাত্ত্বিক এরিক হবসবম এই প্রবণতাকে ইনভেনশন অব ট্র্যাডিশন বা ঐতিহ্যের উদ্ভাবন নামে অভিহিত করেছেন। এই ধারণার মাধ্যমে আমাদের বর্ষবরণের বর্তমান বিষয়কে ব্যাখ্যা করা যায়।
এই বদলের একটি ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক দিক আছে। তার সঙ্গে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন পরিচিতি নির্মাণের প্রেক্ষাপট যুক্ত। তেমনি রয়েছে সাম্প্রতিক সময়ের বাঙালি মুসলমানের পরিচিতির সংকট। এই পরিচিতির সংকট ও বর্ষবরণের ধরন কখন একে অপরকে মেনে নেবে, সেটা সময়ই বলে দেবে।
সংস্কৃতি একটি বহমান নদীর মতো। সে আপন ছন্দে বয়ে চলে। ব্যক্তিবিশেষ একে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। পারে না এর গতিপথের বদল ঘটাতে। সাংস্কৃতিক ব্যবস্থা চিরদিন একই রকম না–ও থাকতে পারে। তাই বলে জোর করে কোনো কিছু চাপিয়ে দিলেও সাংস্কৃতিক ব্যবস্থা তার মতো করে মানিয়ে নেয় না। বরং গণমানুষের চাওয়ার মাধ্যমে সংস্কৃতির বদল ঘটে।
বাংলা বর্ষবরণের মতো সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য আমাদের জাতিকে একতাবদ্ধ করতে সাহায্য করতে পারে। এই উদ্যাপন আমাদের জাতীয় পরিচিতি নির্মাণের ক্ষেত্রে বিগত দশকগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
বিশ্বের অনেক দেশেই সমাজব্যবস্থার পরিবর্তন এবং আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। তবে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং সর্বজনীন উৎসবগুলোকে তারা সব সময়ই নিজেদের শিকড় বলে বিবেচনা করে। এ ধরনের সর্বজনীন কিংবা জাতীয় বিষয় নিয়ে তারা কখনো আপস করতে চায় না। কেননা এভাবে পরিচিতি নির্মাণের মাধ্যমে একটি জাতীয় সংহতি গড়ে ওঠে।
বাংলা একাডেমির একসময়ের মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান তাঁর একটি লেখায় বলেন যে বাংলা নববর্ষের উদ্যাপন ধর্ম–বর্ণ এবং অন্যান্য যেকোনো স্বার্থ ব্যতিরেকে জাতীয় সংহতির একটি অনন্য উদাহরণ। একে বিভিন্ন ঐতিহ্যের একটি সংমিশ্রিত উৎসব হিসেবে বিবেচনা করা যায়। বর্ষবরণকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক বিতর্ক যেন আমাদের অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজব্যবস্থার পরিবর্তে মানুষের মধ্যে বিভাজন তৈরি না করে, সেদিকে নজর রাখতে হবে।
আয়োজকেরা এ প্রসঙ্গে বলছেন, অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বছরের শোভাযাত্রাটি হবে ‘সর্ববৃহৎ, অন্তর্ভুক্তিমূলক, বর্ণাঢ্য ও জাঁকজমকপূর্ণ’, যেখানে বিভিন্ন জাতিসত্তা অংশগ্রহণ করবে। এই অংশগ্রহণ আমাদের বৈচিত্র্যময় সমাজের উদ্যাপনকে প্রকাশ করে, যা পয়লা বৈশাখের একটি মৌলিক ভিত্তি। প্রতিহিংসা ও বিভাজন ভুলে গিয়ে সমাজের সব স্তরের মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে এবারের উৎসবকে নতুন রঙে মাতিয়ে তুলতে হবে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয়ে।
পয়লা বৈশাখের উদ্যাপনকে ঘিরে রয়েছে আমাদের প্রতিবাদ, সংহতি এবং পরিচিতি নির্মাণের ঐতিহ্যের ইতিহাস। আমরা যেন সেই ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ধারণ এবং লালন করে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়ে তুলতে পারি, সেটিই আজকের দিনের প্রত্যাশা। নববর্ষের উদ্যাপন যেন আমাদের দ্বিধাবিভক্ত না করে। এই উদ্যাপন যেন হয়ে ওঠে আমাদের সামাজিক ও জাতীয় ঐক্য গঠনের একটি শক্তিশালী মাধ্যম। পয়লা বৈশাখের উদ্যাপন যেন হয় জাতি-বর্ণনির্বিশেষে সব মানুষের।
● বুলবুল সিদ্দিকী নৃবিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন আম দ র আম দ র স নববর ষ পর চ ত ক সময় সময় র গ রহণ ধরন র র একট বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।